কেন্দ্রীয় ব্যাংক : ব্যাংকগুলোতে জনগণের আমানত সম্পূর্ণ নিরাপদ রয়েছে

আগের সংবাদ

মাদকের টাকায় অস্ত্রের মজুত : মিয়ানমার সীমান্তে বেপরোয়া আরসা, আল ইয়াকিন > রোহিঙ্গা শিবিরে অস্থিরতার পেছনেও এরাই

পরের সংবাদ

বিশ্বকাপে শান্তর প্রাপ্তি

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অল্পের জন্য সেমিফাইনালে খেলা হলো না টাইগারদের। টুর্নামেন্টে শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে হেরে বাংলাদেশের সেমির স্বপ্ন ভঙ্গ হয়।
তবে ব্যাট হাতে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে ভালোই খেলেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এমনকি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তিনিই বেশি রান করেছেন। সেই সঙ্গে বিশ্বকাপ মঞ্চে সবচেয়ে বেশি চারও হাঁকিয়েছেন শান্ত। কিন্তু এবার টুর্নামেন্টে খেলার পথটা এত সহজ ছিল না তার জন্য। বিশ্বকাপ দলে শান্তর অন্তর্ভুক্তি নিয়ে অনেক প্রশ্ন ছিল। সমালোচনায় বিদ্ধ হন তিনি। পরে বিশ্বকাপ মঞ্চে ব্যাট হাতে সব প্রশ্ন ও সমালোচনার মোক্ষম জবাব দেন শান্ত।
এদিকে বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান শান্ত ২৫ মে ১৯৯৮ সালে রাজশাহী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ছোট বেলায় ব্যাট ও বলের সঙ্গে প্রেম ছিল তার। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সহঅধিনায়ক শান্ত মূলত টিভিতে খেলা দেখেই ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা বাড়তে থাকে। ওই সময় তার প্রিয় ক্রিকেট তারকা ছিলেন ভারতের শচিন টেন্ডুলকার। তার কোনো খেলা টিভিতে মিস করেননি। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পান তিনি।
এরপর ২০১৯ সালে ১৮ সেপ্টেম্বর জিম্বাবুয়ে বিপক্ষে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয় তার। এখন পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত সংস্করণে ১৭টি ম্যাচ খেলেছেন টাইগার বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান। তবে নিজেকে এই ফরম্যাটে প্রমাণ করতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে তাকে। ১৭ ম্যাচে দুই হাফসেঞ্চুরির সুবাদে ৩৮৪ রান করেছেন এই টাইগার ক্রিকেটার। তাই এবার বিশ্বকাপ দলে তিনি সুযোগ পাওয়ার পরেই সমালোচনা শুরু হয়।
এই টুর্নামেন্টে খেলার আগে ক্রাইস্টচার্চে ত্রিদেশীয় সিরিজে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে খেলেছিলেন শান্ত। সেখানে ২৯ বলে ৩৩ রান করেন। ওই এক ইনিংসেই কপাল খুলে যায় তার। ক্রাইস্টচার্চের সেই ম্যাচ থেকে বাংলাদেশ ইনিংসের উদ্বোধন করে আসছেন তিনি। প্রতি ম্যাচে ভালো শুরুও পাচ্ছিলেন, কিন্তু ইনিংস লম্বা হচ্ছিল না। তাছাড়া টাইগার দলে আর কোনো বিকল্প ওপেনার না থাকায় তিনি দলে সুযোগ পান। শেষ পর্যন্ত তা কাজেও লাগালেন। বিশ্বকাপ মঞ্চে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ব্রিসবেনে বাংলাদেশের দেড়শ রানের পুঁজির পাওয়ার কারিগর শান্ত। দলের ১৫০ রানের মধ্যে তিনি ৫৫ বলে করেছেন ৭১ রান। ইনিংসে ৭ চারের সঙ্গে হাঁকিয়েছেন ১ ছক্কা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শান্তর ৭১ রানই এবারের বিশ্বকাপে কোনো বাংলাদেশির সর্বোচ্চ ইনিংস। এরপর পাকিস্তানের বিপক্ষে ৭ চারে ৪৮ বলে ৫৪ রান করেন তিনি। এরপর ইফতেখার আহমেদের বলে বোল্ড হন তিনি। সব মিলিয়ে এবার বিশ্বকাপে দুটি হাফসেঞ্চরি করেছেন টাইগার এই ক্রিকেটার। পাঁচ ম্যাচে শান্তর ব্যাট থেকে এসেছে ১৮০ রান। ৩৬ গড়, স্ট্রাইকরেট ১১৪.৬৪। এরপর রানের দিক থেকে দুইয়ে আছেন লিটন দাস। শান্তর চেয়ে ৫৩ রান কম তার। লিটনের স্ট্রাইকরেট অবশ্য অনেক ভালো, ১৪২.৬৯। বাংলাদেশের পক্ষে তৃতীয় সর্বোচ্চ ৯৫ রান করেছেন আফিফ হোসেন। এছাড়া সৌম্য সরকার ৪৯, সাকিব আল হাসান ৪৪ ও নুরুল হাসান সোহান মোট ৪১ রান করেছেন। এবারের বিশ্বকাপে তিনটি ফিফটি হাঁকিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা।
একটি লিটন দাসের। ভারতের বিপক্ষে ২৭ বলে ৬০ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। আর বাকি দুটি ফিফটিই এসেছে শান্তর ব্যাট থেকে। এখানেই শেষ নয়। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চার হাঁকিয়েছেন শান্ত। তিনি পাঁচ ম্যাচে ২০টি চার মেরেছেন।
এই তালিকায় দুইয়ে থাকা লিটনের চারের সংখা ১১টি। আর ৬টি চার হাঁকিয়ে সৌম্য আছেন তৃতীয়তে। যাইহোক শান্তর বয়স এখনো ফুরিয়ে যায়নি। তিনি বর্তমানে যেভাবে খেলছেন, তাতে অনেক দূর এগিয়ে যাবেন। ব্যাট হাতে আশার আলো দেখাচ্ছেন বাঁ-হাতি এই ব্যাটসম্যান। এমনকি সাম্প্রতিক সময়ে টাইগার ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে ধারাবাহিক তিনি। আগামীতে আরো খেলার সুযোগ পেলে সংক্ষিপ্ত সংস্করণে আরো ভালো করবেন শান্ত। কারণ ১৭ ম্যাচ খেলার পর কোনো ক্রিকেটারের যোগ্যতা প্রমাণ করা সম্ভব নয়।
– কামরুজ্জামান ইমন

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়