কাগজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেছেন, পুঁজিবাদী শোষণ, বৈষম্য আর দুঃশাসন জনগণের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। একদিকে জিডিপি আর মাথাপিছু আয়ের গল্প, উন্নয়নের নামে অস্বাভাবিক ব্যয় বৃদ্ধি, দেশ থেকে টাকা পাচার, বৈদেশিক ঋণ নিয়ে মেগা প্রকল্প, ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ, লুটপাট হচ্ছে। অন্যদিকে শ্রমিক, কৃষক, মধ্যবিত্তের দুর্দশা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্র্ধ্বগতি, শিক্ষা চিকিৎসার খরচ বৃদ্ধি, নারীর নিরাপত্তাহীনতা বাড়ছে। কখনো করোনার অজুহাত, কখনো রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের কথা বলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার তাদের ব্যবসায়ী তোষণ নীতি ও দুর্নীতিকে আড়াল করার চেষ্টা করছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের সাফল্য, রিজার্ভ নিয়ে এত বাগাড়ম্বরের পর দেখা যাচ্ছে লোডশেডিং আর ডলার ঘাটতি।
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও রুশ বিপ্লব বার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল শনিবার শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
বজলুর রশীদ ফিরোজ আরও বলেন, আইএমএফের কাছে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ নেয়ার জন্য অসম শর্তে রাজি হওয়ার আগে প্রতি বছর ৭০০ কোটি ডলার পাচার বন্ধ করা উচিত ছিল। এখন আইএমএফের ঋণের অজুহাতে কৃষি, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ অন্যান্য খাতে বরাদ্দ কমানোর অপকৌশল করছে। পুঁজিবাদী ব্যবস্থা অক্ষুণ্ন রেখে মানুষ এই দুর্দশা থেকে মুক্তি পাবে না। তাই শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি, কৃষি ফসলের ন্যায্য দাম, বেকারের চাকরি, ছাত্রের শিক্ষা, সব মানুষের চিকিৎসা, নারীর নিরাপত্তা আর বৃদ্ধদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হলে শোষণ, লুণ্ঠন, ফ্যাসিবাদী শাসনবিরোধী লড়াইকে সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে পরিচালিত করতে হবে।
বর্তমান সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে লড়াইকে তীব্র করার পাশাপাশি দলীয় সরকারের অধীনে নয়; নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আন্দোলনকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান তিনি। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাসদ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ। পার্টির সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতনসহ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তী, বাসদ ঢাকা মহানগর কমিটির সদস্য আহসান হাবিব বুলবুল, খালেকুজ্জামান লিপন, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের দপ্তর সম্পাদক রুখসানা আফরোজ আশা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক ছাত্রনেতা শোভন রহমান। সমাবেশ পরিচালনা করেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জুলফিকার আলী।সমাবেশ শেষে একটি বর্ণাঢ্য লাল পতাকা মিছিল শাহবাগ, কাঁটাবন, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, ঢাকা কলেজ, নিউ মার্কেট, নিলক্ষেত, টিএসসি হয়ে শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়।