সরকার ৬৭ লাখ তরুণ-তরুণীকে আয়বর্ধক পেশায় প্রশিক্ষণ দিয়েছে

আগের সংবাদ

১০ ডিসেম্বর কী হবে ঢাকায়? বিএনপির সমাবেশ ঘিরে উত্তাপ বাড়িয়েছে আমানের আল্টিমেটাম > রাজপথে মোকাবিলা করবে আ.লীগ

পরের সংবাদ

কুয়াকাটায় বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ : উচ্ছেদ আতঙ্কে চার শতাধিক পরিবার

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : আগে পুনর্বাসন, পরে উচ্ছেদ- এমন দাবিতে প্ল্যাকার্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে উচ্ছেদ আতঙ্কে থাকা ভূমিহীন ৪ শতাধিক পরিবার। গতকাল শনিবার সকাল থেকে কুয়াকাটা পৌর শহরের পাঞ্জুপাড়া ও হুইচান পাড়া এলাকা থেকে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। উচ্ছেদকৃত ৪ শতাধিক পরিবারের সঙ্গে যুক্ত হয় সহা¯্রাধিক লোকজন। বিক্ষোভকারীরা প্রায় দেড় ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় পুলিশ-বিক্ষোভকারীরা মুখোমুখি হলে উতপ্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়। উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে না গেলেও জেলা প্রশাসন কিছুটা নমনীয় হন। নিজ নিজ দায়িত্বে বাড়িঘর দ্রুত সময়ে সরিয়ে নিতে নির্দেশনা দেন। কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শংকর চন্দ্র বৈদ্য ও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিলে যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরায় সচল হয়। বিক্ষোভকারীরা বলেন, চার শতাধিক ৫০-৬০ বছর ধরে বেড়িবাঁধের বাহিরে বসবাস করে আসছে। হঠাৎ করে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন উচ্ছেদের সিদ্ধান্তে তাদের বাড়িঘর সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়। কোন প্রকার আগাম নোটিস না দিয়ে উচ্ছেদের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে বাধ্য হয়। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী পাঞ্জুপাড়া গ্রামের আব্বাস কাজী, ময়না, হোসেন পাড়া গ্রামের আ. রহিম, মনোয়ারাসহ একাধিক বিক্ষোভকারীদের দাবি পুনবাসনের ব্যবস্থা না করে উচ্ছেদ করলে তারা বাড়িঘর নিয়ে কোথায় গিয়ে থাকবেন। স্ত্রী সন্তান নিয়ে পথে বসতে হবে। তাই পুনর্বাসন না করে উচ্ছেদ করলে তারা সর্বোচ্চ প্রতিরোধ করার চেষ্টা করবেন। প্রয়োজন তাদের জীবন দিয়ে দিবেন। এ সময় বিক্ষোভকারীরা আরো বলেন, সরকার ২০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। আর আমরা এদেশের নাগরিক হয়ে কেন আশ্রয়হীন থাকবো এমন প্রশ্ন ছিল সরকারের কাছে তাদের। এ সময় বিক্ষোভকারীরা পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার জন্য জেলা প্রশাসকসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান। বিক্ষোভে কুয়াকাটা জিরো পয়েন্টের পূর্বদিকে বেড়িবাঁধের বাহিরে সরকারি জমিতে বসবাসকারী নারী শিশুসহ সহ¯্রাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের পূর্বপাশে দুই কিলোমিটার এলাকার ৭৩ একর ভূমির মালিকানা দাবি নিয়ে সরকারের সঙ্গে মনির আহম্মেদ ভূঁইয়া গং, সিরাজুল ইসলাম মিয়াজী গংদের সঙ্গে ১৯৭২ সাল থেকে মামলা চলে আসছে। এ মামলায় কখনো সরকার পক্ষ আবার কখনো পাবলিকের পক্ষে রায় দেয় আদালত। ৫০ বছর ধরে এ মামলা চলে আসছিল। গত ১০ নভেম্বর ২০২২ ইং পটুয়াখালী জেলা জজ আদালত নিষেধাজ্ঞা স্থাগিত করলে জেলা প্রশাসক সরকারি জমিতে থাকা বাড়িঘর, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদের উদ্যোগ নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় জেলা প্রশাসন উচ্ছেদ কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
জানা গেছে, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন নগরীতে রুপান্তরের লক্ষ্যে সরকার মেঘা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এই মেঘা প্রকল্প বাস্তবায়নে মহা উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রনয়ণে কাজ করছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় কুয়াকাটায় বেড়িবাঁধের বাইরের সব স্থাপনা সরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ হাতে নেয়।
এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, কুয়াকাটায় বেড়িবাঁধের বাহিরে সৈকত লাগোয়া দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সরকারি জমি। সরকারি জমি দীর্ঘ বছর ধরে ভুয়া মালিকানা দাবিতে ভোগদখল করে আসছিল কতিপয় অবৈধ বসবাসকারীরা। আদালত কর্তৃক মালিকানা দাবি নামা নিস্পত্তি হয়েছে। মালিকানা নিয়ে জটিলতা নিরসন হয়েছে। এই জমি এখন সরকারের। তাই সরকারি জমি উদ্ধারে জেলা প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেয়।
তিনি আরো বলেন, সরকারি জমিতে যারা অবৈধভাবে বাড়িঘর নির্মাণ করে বসবাস করে আসছে তাদের সরে যেতে হবে। এসব অবৈধ বসবাসকারীদের বাড়িঘর সরিয়ে নেয়ার জন্য সময় দেয়া হয়েছে। প্রকৃত ভূমিহীনদের সরকার পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবেন বলে জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়