প্রকাশিত: নভেম্বর ১২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
মো. সাজ্জাদ হোসেন শাহ্, সুনামগঞ্জ থেকে : হাওর বেষ্টিত ভাটির জনপদ সুনামগঞ্জে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণকাজে এবার জেলার ১২টি উপজেলায় (পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী ৯৫০টি প্রকল্পে) ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কাবিটা স্কিম প্রণয়ন ও বাস্তবায়নকল্পে বাস্তবায়ন ও মনিটরিং জেলা কমিটির সভায় এ তথ্য জানায় সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড।
বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। জেলা প্রশাসক বলেন, এবারের বাঁধ নির্মাণ কাজে পিআইসি কমিটিতে যেসব সদস্য রাখা হবে, তা অবশ্যই যাচাই-বাছাই করে রাখতে হবে। যাদের জমি আছে তাদের রাখতে হবে। তবে তাদের ভালো মানুষ হতে হবে। একটি পিআইসিকে একটি কাজ দেয়া হবে। কোনো কারণে বাঁধ ভাঙলে যেন পিআইসি পালিয়ে না যায়। তিনি বলেন, এবারের বাঁধ নির্মাণকাজ তদারকিতে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে থাকবেন।
জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন আরো বলেন, বিগত সময়ে ভালোমানের বাঁধ নির্মাণ হয়নি। এবার তা খেয়াল রাখতে হবে। কোনো অবস্থায় যেন বাঁধের পাশ থেকে মাটি উত্তোলন না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে ভেঙে যাওয়া একটি বাঁধ হাজার হাজার কৃষকের কান্নার কারণ। এবার বাঁধের কাজ ভালো করতে দুটি মনিটরিং টিম গঠন করা হবে।
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার, নির্বাহী প্রকৌশলী-২ মো. শামসুদ্দোহা, উপবিভাগীয় প্রকৗশলী আতাউর রহমান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সুমন মিয়া, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা পারভীন, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিউর রহিম জাদিদ, তাহিরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সুপ্রভাত চাকমা, শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনোয়ার উজ-জামান, জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ দেব, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আমজদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুল মোমেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) একেএম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও তথ্য প্রযুক্তি) শেখ মহি উদ্দিন, আরডিসি মো. সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার গতকাল শুক্রবার বিকালে ভোরের কাগজকে জানান, এবার বাঁধ নির্মাণের জন্য একশত কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এবার এক হাজার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সার্ভে করা হবে। গতবারের বেড়িবাঁধ নির্মাণে পিআইসিদের বকেয়া ছিল নয় কোটি টাকা। এবার সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য জেলা কমিটিতে সদস্য থাকবেন ১৩ জন। কিন্তু আমরা তা বর্ধিত করে ২৮ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি করেছি।
উল্লেখ্য, হাওরে একসময় ঠিকাদারদের মাধ্যমে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ হতো। তখন হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হতো। পরে বাঁধের কাজে পিআইসির মাধ্যমে স্থানীয় কৃষক ও সাধারণ মানুষকে যুক্ত করা হয়। ২০১৭ সালের বন্যায় হাওরে ফসলহানির পর বাঁধ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এ অভিযোগে ঠিকাদার ও পিআইসির বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলাও হয়। পরে বাঁধ নির্মাণে নতুন নীতিমালা করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ঠিকাদারি প্রথা বাতিল করে সরাসরি যুক্ত করা হয় স্থানীয় কৃষক, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।