স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী : আতঙ্কিত হওয়ার মতো অবস্থায় নেই বাংলাদেশ

আগের সংবাদ

সরকারি ওষুধ সিন্ডিকেটের পেটে : রোগীর ভাগ্যে জোটে যৎসামান্য, বিনামূল্যে মিলে কোন ওষুধ জানেন না রোগী, তিন স্তরে পাচার হয়

পরের সংবাদ

লাইটারেজ জাহাজ শ্রমিকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার

প্রকাশিত: নভেম্বর ১২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বন্দর কর্তৃপক্ষ চরপাড়া ঘাটের ইজারা বাতিল করায় আন্দোলনকারী লাইটারেজ জাহাজ শ্রমিকরা তাদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছেন। তাদের মূল দাবিটি বন্দর কর্তৃপক্ষ মেনে নেয়ায় শ্রমিকরা তাদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছেন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন।
এর আগে শুক্রবার সকাল থেকে এই চরপাড়া ঘাটের ইজারা বাতিলসহ ৫ দফা দাবিতে লাইটারেজ জাহাজ শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করছিল। ফলে গতকাল সকাল থেকে নৌপথে চট্টগ্রাম থেকে সারাদেশে কোনো পণ্য পরিবাহিত হয়নি। জানা যায়, চট্টগ্রামে লাইটারেজ শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন, চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে তা বন্ধসহ ৫ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির কারণে শুক্রবার সকাল থেকে নৌপথে চট্টগ্রাম থেকে সারাদেশে পণ্য পরিবহন বন্ধ করে দেয়া হয়। পাশাপাশি বহির্নোঙ্গরে অবস্থানরত বড় জাহাজগুলো (মাদার ভ্যাসেল) থেকেও পণ্য পরিবহন বন্ধ হয় যায়। ‘সর্বস্তরের নৌযান শ্রমিকরা’ ব্যানারে এ ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করা হয়। আন্দোলনকারীদের দাবিগুলোর মধ্যে লাইটারেজ শ্রমিকদের ওঠানামায় ব্যবহৃত চরপাড়া ঘাটের ইজারা বাতিল, চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যানকে প্রত্যাহার, পতেঙ্গা থানার ওসিকে অপসারণ এবং সাঙ্গু নদীর মুখ খনন করে লাইটারেজ জাহাজের জন্য নিরাপদ পোতাশ্রয় নির্মাণের কথা রয়েছে।
এদিকে এ সমস্যা সমাধানের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর ভবনে বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে লাইটারেজ শ্রমিক নেতা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বন্দর ব্যবহারকারীরা এক বৈঠকে বসেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিষয়টি সমাধানের খবর পাওয়া যায়।
সকাল থেকে লাইটারেজ জাহাজের শ্রমিকরা কর্ণফুলী নদীর ১৬টি ঘাট এবং বহির্নোঙ্গরে অবস্থানরত মাদার ভ্যাসেল থেকে পণ্য তোলা-নামানো বন্ধ করে দেন। এর ফলে বন্দর থেকে নৌপথে সারাদেশে পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে লাইটারেজ শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে বন্দরের বহির্নোঙর থেকে সারাদেশে আমদানি পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে যায়। যে জাহাজগুলো পণ্য বোঝাই করে গন্তব্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল সেগুলো অলস বসে ছিল। আবার কর্ণফুলী নদীর বেসরকারি ঘাটগুলোতেও লাইটারেজ থেকে পণ্য খালাস বন্ধ করে দেন নৌযান শ্রমিকরা। তবে জ্বালানি পরিবহন ধর্মঘটের বাইরে ছিল।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকালে নগরের বাংলাবাজার এলাকায় ‘সর্বস্তরের নৌযান শ্রমিকরা’ ব্যানারে আয়োজিত এক সমাবেশে শুক্রবার থেকে লাগাতার কর্মবিরতি কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়। লাইটারেজ শ্রমিকদের এ কর্মবিরতির বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, শ্রমিকরা ঘাট দিয়ে যাতে নিরাপদে নৌকায় উঠতে পারেন এবং অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে নৌযান পরিচালনা করতে না পারে, সে জন্য দরপত্রের মাধ্যমে চরপাড়া ঘাট ইজারা দেয়া হয়েছে।
শ্রমিকদের সুবিধার জন্যই বন্দর কর্তৃপক্ষ ঘাট তৈরি করে দিয়েছে। কিন্তু ঘাটটি তো কাউকে না কাউকে পরিচালনা করতে হবে। সবদিক বিবেচনা করে শ্রমিকদের থেকে শুধুমাত্র দশ টাকা মাশুল নেয়ার শর্তে বন্দর কর্তৃপক্ষ ঘাটটি ইজারা দিয়েছে। এটা নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি বা অনভিপ্রেত ঘটনার কোনো অবকাশ নেই।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বন্দর এবং বহির্নোঙর থেকে সারাদেশের নৌরুটে অন্তত হাজার লাইটারেজ জাহাজ পণ্য আনা নেয়া করে। এসব জাহাজে শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। আমদানি করা ভোগ্যপণ্য, সিরামিকস ও ইস্পাতশিল্পের কাঁচামাল, সার, কয়লা, সিমেন্ট ক্লিংকারসহ বিভিন্ন খোলা পণ্য নিয়ে বহির্নোঙ্গরে আসা মাদার ভ্যাসেল (বড় জাহাজে) থেকে পণ্য খালাস হয় লাইটারেজ জাহাজে। এরপর নৌরুটে বিভিন্ন গন্তব্যে সেসব পণ্য নিয়ে যায় লাইটারেজ জাহাজগুলো। লাইটার জাহাজে পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকলে চট্টগ্রাম থেকে সারাদেশে নদীপথে পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে যাবে। এতে করে শুধু যে ব্যবসায়ীরাই বিপাকে পড়বেন তা নয়, এর প্রভাব পড়বে বিভিন্ন পণ্যের ওপর যা মাশুল গুণতে সবে সাধারণ ভোক্তাদেরই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়