পুণ্যস্নানে শেষ হবে সুন্দরবনের রাসমেলা

আগের সংবাদ

মিলছে আইএমএফের ঋণ > বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো : রাহুল আনন্দ

পরের সংবাদ

খাল ভরাটে নামছে না জমির পানি : সঠিক সময়ে আলু চাষ নিয়ে অনিশ্চয়তা

প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

তাজুল ইসলাম রাকিব, লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ) থেকে : দেশের সিংহভাগ আলু উৎপাদন হয় মুন্সীগঞ্জ জেলা তথা বিক্রমপুরে। গত মৌসুমে জেলায় ৩৭ হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় ১৩ লাখ টন আলু উৎপাদন হয়েছে বলে উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে। আলু ছাড়াও সরিষা ও বাদামসহ অন্যান্য রবি ফসল হয়ে থাকে এ জেলায়। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় এ অঞ্চলে আবাদ মৌসুম ২ মাস পিছিয়ে গেছে। উপজেলায় গত কয়েক বছর ধরে সঠিক সময়ে চাষাবাদ করতে পারেনি কৃষকরা। এর অন্যতম কারণ সঠিক সময়ে জমির পানি নামতে পারেনি। এবারো লৌহজংয়ে সঠিক সময়ে আলু চাষ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লৌহজং উপজেলার বেশিরভাগ খালের প্রবেশ মুখ পদ্মার বালুমাটি দিয়ে ভরাট হয়ে গেছে। এতে করে বর্ষার পানি জমি থেকে নামতে পারেনি। তাই এখনো অনেক জমিতে পানি জমে রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে টানা ৪ দিনের বৃষ্টির কারণে এবং জমি থেকে বর্ষার পানি নামতে না পারার কারণে খিদিরপাড়ার চক, বাঐসার-মাইজগাও চক, চাঁইনপাড়া-মিঠুসার চক, পয়শা-ঘোলতলী চক, ধারার হাট-মাধাইশুর চক, নওপাড়া-শুরপাড়া চক, বৌলতলী-পশ্চিমপাড়া চক, নওপাড়া-উত্তর গাও চক, গাওদিয়া বেঁজগাও, ঘোলতলী, কলমা, নাগেরহাটসহ বেশ কিছু এলাকার জমিতে এখনো কোমর পানি।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা কৃষকের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, নতুন নতুন সড়ক (রাস্তা) নির্মাণ, খালগুলো ভরাট হওয়ার কারণে জমির পানি নামতে পারে না। কালভার্ট ও পাইপ স্থাপন করা গেলে এ সমস্যার সমাধান হবে।
উত্তরগাও গ্রামের কৃষক মো. মিজান মোড়ল বলেন, নওপাড়া-উত্তরগাও চকে ২৫-৩০ কানি (স্থানীয় পরিমাপ) জমি রয়েছে। প্রতি বছর এ সময় আলু বপন করা হয়ে যেতো। কিন্তু এ বছর জমিতে এখন পর্যন্ত হাঁটু পানি। উত্তরগাও খাল দিয়ে পানি নামতো। এই খালটি পলিমাটি পরে ভরাট হয়ে প্রবাহ হারিয়ে গেছে। নওপাড়া পোড়াগঙ্গা খালে পানি নামার জন্য পাইপ বসানো ছিল। তা এখন নষ্ট হয়ে গেছে।
কৃষক তাইজুল ইসলাম খান বলেন, ধারার হাট বালিগাঁও খালটি পুনর্খনন করা হলে কৃষি জমিতে পানি জমে থাকবে না। এতে করে আমরা সঠিক সময়ে চাষাবাদ করতে পারব।
বাসার গ্রামের আলু চাষি মো. রাজিব হাওলাদার বলেন, আমাদের জমিগুলোতে এক সময়ে তিন ফসলি চাষাবাদ করতে পারতাম। এখন তা পারি না। জমি থেকে সঠিক সময়ে পানি নামাতে এবং বর্ষার পানি জমি থেকে নামার ব্যবস্থা করতে হলে খালগুলোকে পুনর্খনন করতে হবে।
লৌহজং এলাকার কৃষকের দাবি, অতিসত্বর খালগুলোকে দখলমুক্ত ও পুনর্খনন করা হোক। এ বিষয়ে লৌহজং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, খালগুলো ভরাট হয়ে গেছে, পানি সরছে না। এখন আমাদের আলু, সরিষা, বাদামসহ অন্যান্য রবি ফসল লাগানোর কথা ছিল। কিন্তু কৃষক তা লাগাতে পারছে না। খালগুলোর মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়াও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছে। ইমিডিয়েটলি খাল খনন করতে হবে। সেই সঙ্গে আমরা সরকারিভাবে কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। আগামীতে লৌহজংয়ে ৫০০ মিলিমিটার খাল খনন করা হবে। এ বিষয়ে রেজ্যুলেশনের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হয়েছে। আগামী সপ্তাহে সার্ভে করা হবে। আশা করি আগামী বছর থেকে কৃষকরা উপকৃত হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়