কাগজ প্রতিবেদক : ভুল প্রশ্নপত্র বিতরণ ও পরে পরীক্ষা স্থগিত এবং ২১ জনের বহিষ্কারের মধ্য দিয়ে চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রথমদিন কাটল। এদিন বিকালে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে বিএমটির একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষায় প্রথমে ভুল প্রশ্ন বিলি করা হয়। পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা পর কর্তৃপক্ষের এই ভুল নজরে আসে। এরপর পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।
তবে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ভুলের দায় স্বীকার না করে বলেছে, অনিবার্য কারণে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষা প্রশাসন থেকে এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন উঠেছে, ভুলের দায় কার। পরীক্ষার নতুন তারিখ পরে জানানো হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। এবার কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি (বিএম/বিএমটি) এইচএসসি (ভোকেশনাল), ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স পরীক্ষায় ১ লাখ ২২ হাজার ৯৩১ জন অংশ নিচ্ছে। মোট এক হাজার ৮৫৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৬৭৩টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন পরীক্ষার্থীরা।
এদিকে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রথমদিনেই ২০ হাজার ৩৫৪ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। এর মধ্যে নয়টি সাধারণ বোর্ডে ১৫ হাজার ২৫৫ জন এবং মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে ৫ হাজার ৯৯ জন। এছাড়া বহিষ্কার করা হয়েছে ২১ পরীক্ষার্থীকে। গতকাল রবিবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা শেষে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
সকালে পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে রাজধানীর বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, কেউ যদি গুজব ছড়ানো বা প্রশ্নফাঁসের চেষ্টা করে তাহলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিভাবকদের অনুরোধ করে তিনি বলেন, সন্তানকে পৌঁছে দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে যেন তারা কেন্দ্র ত্যাগ করেন। তাহলে কোনো পরীক্ষার্থীকে কেন্দ্রে আসতে সমস্যা হবে না।
কোচিং সেন্টার বন্ধ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোচিং বন্ধের নির্দেশনা রয়েছে। আর একই কোচিং সেন্টারে অনেক ধরনের কোচিং চলে। এটি শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা শিক্ষা বোর্ডের পক্ষে একা বন্ধ করা সম্ভব নয়। স্থানীয় প্রশাসনেরও সহযোগিতা প্রয়োজন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দীপু মনি বলেন, কোচিংয়ের প্রয়োজন আছে। ক্লাসে এত শিক্ষার্থী, সবার প্রতি শিক্ষকদের আলাদা নজর দেয়া সম্ভব নয়।
শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, আগামী বছরের পরীক্ষা এগিয়ে আনা হবে। এবার আমরা চেষ্টা করেছিলাম জুলাই-আগস্টে পরীক্ষা নিয়ে আসতে। কিন্তু দেশের একটি অঞ্চলে বন্যার কারণে পরীক্ষা নিতে দেরি হয়ে গেল।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে ২ লাখ ৭৩ হাজার ৭০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ছিল ৩ হাজার ৫০৯ জন, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৮৭ হাজার ৮৮৪ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৩৫৬ জন, রাজশাহী বোর্ডে ১ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২ হাজার ১৫৮ জন, বরিশাল বোর্ডে ৬১ হাজার ১১৩ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৯৬৭ জন, সিলেট বোর্ডে ৬৫ হাজার ৩৬৯ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৯৬৮ জন, দিনাজপুর বোর্ডে ৯৬ হাজার ৭০০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৮১৮ জন, কুমিল্লা বোর্ডে ৮৪ হাজার ১৯০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৭৬২ এবং যশোর বোর্ডে ৯৯ হাজার ২৩২ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৯০৪ জন, ময়মনসিংহ বোর্ডে ৬২ হাজার ২৫৬ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৮১৩ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। সাধারণ নয়টি শিক্ষা বোর্ডে ৯ লাখ ৫৮ হাজার ৯৫১ পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ছিল মোট ১৫ হাজার ২৫৫ জন।
অপরদিকে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে ৯৩ হাজার ২৫২ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৫ হাজার ৯৯ অনুপস্থিত ছিল। সব বোর্ড মিলিয়ে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২১ জন। এর মধ্যে কুমিল্লা বোর্ডে ৫ জন ও রাজশাহী বোর্ডে ১ জন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।