গ্রেপ্তার ৭ : ইশরাকসহ ১৩০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

আগের সংবাদ

শর্তগুলো কঠিন হলেও যৌক্তিক : আইএমএফের শর্ত মেনেই ঋণ নেয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের, ব্যাংক ঋণের সুদ বাড়ানোর প্রস্তাবে ব্যবসায়ীদের আপত্তি

পরের সংবাদ

তিন দিনব্যাপী রাস উৎসব শুরু আজ : দুবলার চর ও কুয়াকাটায় প্রস্তুতি সম্পন্ন

প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : হিন্দুদের অন্যতম ধর্মীয় রাস উৎসব শুরু হচ্ছে আজ সোমবার। রাসলীলা নামে পরিচিত এ উৎসবের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ, সুন্দবনের দুবলার চর এবং কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের ভক্ত ও পূজারিরা। রাস উৎসবকে ঘিরে এসব জায়গায় গতকাল রবিবার থেকেই বসেছে রাসমেলা। আমাদের প্রতিনিধি আনোয়ার হোসেন আনু, কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) এবং বাবুল আকতারের (খুলনা) পাঠানো তথ্য নিয়ে এ প্রতিবেদন।
কুয়াকাটায় আজ সোমবার হিন্দু ধর্মালম্বীদের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী অন্যতম ধর্মীয় উৎসব রাস পূর্ণিমার মেলা ও গঙ্গা¯œান অনুষ্ঠিত হবে। আগামীকাল মঙ্গলবার ভোরে পুণ্য ¯œানের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই উৎসব। রাস উৎসবকে ঘিরে কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী মেলা বসেছে। রাসমেলায় কৃঞ্চের হাজার হাজার ভক্ত, লাখো পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের আগমন ঘটবে। আশা করছে, পূজা উদযাপন কমিটি। রাস পূর্ণিমার মেলা ঘিরে কুয়াকাটার রাধাকৃষ্ণ মন্দির ও সেবাশ্রম সাজানো হচ্ছে নতুন সাজে। চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। কারিগরদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় রং করা হচ্ছে ১৮ জোড়া যুগল প্রতিমা। গতকাল দুপুরের পর থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পুণ্যার্থীরা কুয়াকাটা সৈকতে এসে সমবেত হয়েছেন। আজ সন্ধ্যায় পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন রাস উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মেলার সামগ্রী নিয়ে এসে পসরা সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। মেলা ও গঙ্গা¯œানকে কেন্দ্র করে অপ্রতিকর ঘটনা এড়াতে কুয়াকাটা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে। সিসিক্যামেরা স্থাপনসহ নেয়া হয়েছে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কলাপারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শংকর চন্দ্র বৈদ্য জানান, ৮ নভেম্বর সকালে কুয়াকাটায় অনুষ্ঠিত হবে পুণ্যস্নান। তাই আগতদের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
কার্তিক-অগ্রহায়ণের পূর্ণিমা তিথিতে প্রতি বছর সুন্দরবনের দুবলার চরের মেলায় হাজার হাজার

পুণ্যার্থী আর পর্যটক ভিড় করে। আজ মূল উৎসব শুরু হলেও গতকাল থেকেই সেখানে বিভিন্ন ধরনের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছে রাসমেলা। শুক্লপক্ষের চাঁদের

আলোয় শোভিত নীরব সুন্দরবন চরাঞ্চল সরব হয়ে উঠবে পুণ্যার্থীদের পূজা ও আরাধনায়। দুর্গম সাগর-প্রকৃতির সৌন্দর্যের মাঝে পুণ্য অর্জন আর সঞ্চার যেন মিলে মিশে একাকার হয়ে যায়। কার্তিক-অগ্রহায়ণে শুক্লপক্ষের ভরাপূর্ণিমা সাগর উছলে ওঠে। চাঁদের আলোয় সাগর-দুহিতা দুবলার চরে আলোর কোল মেতে ওঠে রাস উৎসবে।
বঙ্গোপসাগরের মোহনায় সুন্দরবনের দুবলাচরে ও আলোর কোলে রাস পূর্ণিমায় রাধাকৃষ্ণের পূজা, পুণ্যস্নান অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে রাস উৎসবে পূর্ণিমা তিথিতে চরে নির্মিত মন্দিরে নামযজ্ঞ, রাধাকৃষ্ণ, কমল কামিনী ও বনবিবির পূজা অনুষ্ঠিত হবে। অটুট বিশ্বাস আর পুণ্য ভক্তিতে কমল কামিনীর দর্শন মেলে। পুণ্যার্থীরা কমল কামিনী দর্শনের আশায় নীল কোমলের সাগর মোহনায় সাগর ঢেউয়ে স্নান করে। রাস পূর্ণিমায় প্রথম আসা সমুদ্র ঢেউকে নীল কোমলের ঢেউ বলা হয়।
প্রকৃতির অকৃপণ হাতের সৃষ্টি লোনা জলের সাগরের এই রাসমেলায় দূরদূরান্তে তীর্থযাত্রীদের ঢল নামে। ভয়ংকর সুন্দর এই সুন্দরবন। যেখানে একদিকে অ্যাডভেঞ্চার, অন্যদিকে ভয় আর শিহরণ। জলে কুমির, আর ডাঙ্গায় বাঘ। বনের প্রতিটি মুহূর্ত যেন রহস্য আর রোমাঞ্চকের এই মেলায় দর্শনার্থীরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অভাবনীয় রূপ উপভোগ করে। প্রতি বছর উৎসবের দিনগুলোতে নীরব সুন্দরবন যেন লোকালয় হয়ে জেগে ওঠে।
হিন্দু ধর্মাবলম্বী লোকরা পূর্ণিমার প্রথম প্রহরে সাগর জলে স্নান করে মনোবাসনা পূর্ণ ও পাপমোচন হবে এ বিশ্বাস নিয়ে রাসমেলায় যোগ দিলেও সময়ের ব্যবধানে এ উৎসব নানা ধর্ম ও বর্ণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। এ সময় অসংখ্য বিদেশি পর্যটকেরও আগমন ঘটে। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা নির্বিশেষে সাগর চর এলাকায় উপস্থিতিতে কোলাহল, পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠবে। প্রতি বছর রাস উৎসব মানুষের মিলনমেলায় রূপ নেয়। সাগরপাড়ে দুবলা ও আলোরকোল চরসমূহে অনুষ্ঠিত রাস উৎসব সুন্দরবনের ঐতিহ্যকে আরো সমৃদ্ধ করেছে।
পুণ্যস্নানে নিরাপদে যাতায়াতের জন্য দর্শনার্থী ও তীর্থযাত্রীদের জন্য সুন্দরবন পশ্চিম বনবিভাগ পাঁচটি পথ নির্ধারণ করেছে। এ সব পথে বন বিভাগ, পুলিশ, বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের টহল দল তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীদের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়