৪০তম বিসিএস : নন-ক্যাডারদের সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ মোমবাতি প্রজ্বালন

আগের সংবাদ

ঝুলে গেল সমন্বিত তিস্তা প্রকল্প : ভূরাজনৈতিক চাপের কারণে এই প্রকল্প এগিয়ে নিতে আগ্রহ হারিয়েছে সরকার, এখনো হাল ছাড়েনি চীন

পরের সংবাদ

ভূপেন হাজারিকাকে গানে গানে স্মরণ

প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : মঞ্চে ছড়িয়ে শীতের ঝরা মরা পাতা, আলো আঁধারের লাল নীল বাতির মাঝে মঞ্চের পাশে টিম টিম করে জ্বলছিল হারিকেনের আলোও। এর মধ্যে শিল্পীরা ছড়ালেন অন্যরকম মুগ্ধতা। শুরুতে ‘শরৎ বাবু খোলা চিঠি দিলাম তোমার কাছে’ সম্মেলক গান পরিবেশন করেন শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা।
‘মেঘ থম তম করে’, ‘বিস্তীর্ণ দুপাড়ে’, ‘ও দোলা ও দোলা’, ‘এই গান হোক বহু আস্থাহীনতার’, একক গানগুলো গেয়ে শোনান শিল্পী ময়ুখ হাজারিকা। এরপর ‘সবার হৃদয়ে রবীন্দ্রনাথ’, ‘আমি এক যাযাবর’ একক গান গেয়ে শোনান মিসমি বোস। দিল বাহার খান গেয়ে শোনান ‘অনেক জ্বালাইছ কন্যা’। ‘পিরিতি ছাড়িলে’ গানে নৃত্য পরিবেশন করেন একাডেমির নৃত্যদল। এরপর গাইলেন গীতাঞ্জলি কাকলি, লিয়াকত আলী লাকীসহ অন্যরা।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে ভূপেন হাজারিকার ১১তম প্রয়াণ দিবস স্মরণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গানে গানে এভাবে আসাম এবং বাংলাদেশের শিল্পীরা উপমহাদেশের বরেণ্য শিল্পী ভূপেন হাজারিকার সম্মান জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অসীম কুমার উকিল, সংস্কৃতি সচিব আবুল মনসুর এবং ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী এ এস এম শামসুল আরেফিন উপস্থিত ছিলেন। শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পী মনীষা হাজারিকা এবং ব্যতিক্রম মাসদোর সভাপতি ড. সৌমেন ভারতীয়া।
স্বাগত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে ড. সৌমেন ভারতীয়া বলেন, ভূপেন হাজারিকা আমাদের অন্তরের একজন মানুষ। তিনি বাংলার মানুষের হৃদয়ে গেঁথে রয়েছেন তার সৃষ্টিশীল গানের মধ্যমে। শিল্পীরা কখনো প্রয়াত হন না। তিনি অমর, আমাদের মাঝেই রয়েছেন।
ভূপেন হাজারিকাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করে কণ্ঠশিল্পী মনীষা হাজারিকা বলেন, হাজারিকা তার জীবনে মানবতার গান করেছেন। তার প্রতিটি মানবকল্যাণের গান বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ভূপেনদার আত্মার সম্পর্ক ছিল অনেক। তিনি বারবার আসাম থেকে বাংলায় ফিরে এসেছেন। তার সেই আসা আমাদের জন্য উপদেশ হিসেবে সুরের জাদুতে রেখে গেছেন। তাই আজো গানের ফেরারি হয়ে বারবার বাংলায় ফিরে আসি। ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশের সমন্বয়কারী শামসুল আরেফিন বলেন, আমরা আসামের সঙ্গে অনেকভাবে জড়িত। তাই তো প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় দুই বাংলার সংস্কৃতির মেলবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি। এর মধ্যদিয়ে বাংলা-ভারতের মধ্যকার যে সম্পর্ক রয়েছে তা যেন দিনে দিনে আরো দৃঢ় হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ভারত থেকে আগত অতিথিদের অভ্যর্থনা জানাতে আসা অসিম কুমার উকিল বলেন, ভূপেন হাজারিকার গান সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া আমাদের মাঝে দেয়াল হতে পারিনি। তার গান গেয়ে আমরা ’৭৫-র সামরিক শাসক জেনারেল জিয়ার অত্যাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে সাহস যুগিয়েছি।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, ভূপেন হাজারিকা একজন গুণী মানুষ ছিলেন। তার গান আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল। আমাদের জীবনের কিছু আয়ু তাদের জন্য উৎসর্গ করে হলেও এমন গুণী মানুষের হাজারো বছর বেঁচে থাকার প্রয়োজন রয়েছে। লিয়াকত আলী লাকী বলেন, ভূপেন হাজারিকা কেবল শিল্পী ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন গবেষক। তার গানের গবেষণা
এবং চর্চা হওয়া প্রয়োজন রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়