৪০তম বিসিএস : নন-ক্যাডারদের সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ মোমবাতি প্রজ্বালন

আগের সংবাদ

ঝুলে গেল সমন্বিত তিস্তা প্রকল্প : ভূরাজনৈতিক চাপের কারণে এই প্রকল্প এগিয়ে নিতে আগ্রহ হারিয়েছে সরকার, এখনো হাল ছাড়েনি চীন

পরের সংবাদ

বন্ধ ছিল সব ধরনের গণপরিবহন : বিএনপির সমাবেশ ঘিরে বরিশালে জনভোগান্তি

প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এম. কে. রানা, বরিশাল থেকে : বিএনপির সমাবেশ ঘিরে ধর্মঘটের কারণে বরিশালে খেয়া পারাপারের ট্রলার, লঞ্চ, বাস, মাইক্রোবাস, মাহিন্দ্রা টেম্পু, সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ থাকে। ফলে সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাধারণ মানুষও ভোগান্তিতে পড়েন। বাধ্য হয়ে অটোভ্যান, অটোরিকশা, বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে সড়ক-মহাসড়ক হয়ে সাধারণ মানুষ গন্তব্যে পৌঁছান। অন্যদিকে খেয়া পারাপারের নৌকা-ট্রলার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নদীপথেও মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। অনেকেই বাধ্য হয়ে জেলেদের নৌকায় নদী পাড়ি দেন। আর নদীবেষ্টিত বরিশালের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে আসা মানুষ ঝুঁকি নিয়ে নদী পাড়ি দেন ট্রলার, বাল্কহেডে। নিয়মিত গণপরিবহনগুলো বন্ধ থাকায় এসব যানবাহনের চালকদের বিরুদ্ধে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ তুলেছেন যাত্রীরা।
ব্যাটারিচালিত ভ্যানের চালক মানিক বলেন, বাস চলাচল বন্ধ, সেইসঙ্গে মহাসড়কে মাইক্রোবাস, মাহিন্দ্রা টেম্পুও চলছে না। এ অবস্থায় স্বল্প দূরত্বে যাওয়া মানুষরা ভ্যানেও যেতে চাচ্ছেন। তবে নথুল্লাবাদ ও রুপাতলী থেকে বিএনপির সমাবেশস্থলে মানুষ বেশি যায় ভ্যানে। কারণ এক ভ্যানে ৭-৮ জন যাওয়া যায়।
এদিকে ধর্মঘটের কারণে মহাসড়কগুলোতে প্রভাব পড়লেও বরিশাল শহরের মধ্যে তেমন প্রভাব পড়েনি। গতকাল সকাল থেকে শহরের রাস্তায় প্রচুর খালি রিকশা দেখা গেছে। তবে নগরের চৌমাথা, রুপাতলী, আমানতগঞ্জ, নাজিরের পুল থেকে শহরতলীতে যেতে রিকশাসহ সব যানবাহনেই বেশি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
এদিকে মহাসমাবেশে যোগ দিতে আসা অনেক মানুষ পায়ে হেঁটেই যাতায়াত করেন বলে জানান অটোরিকশা চালক কালাম। তিনি বলেন, শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ পায়ে হেঁটে বিএনপির সমাবেশস্থল বঙ্গবন্ধু উদ্যানে যান। হাতে গোনা অল্প কিছু লোক রিকশা-অটোরিকশায় যান। আর নৌপথে আসা যাত্রীরা নগরীর কেডিসি কলোনী ও চাঁদমারী এলাকায় নেমে পায়ে হেঁটেই সমাবেশস্থলে পৌঁছান।
সব প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে বিএনপির বিভিন্ন জেলা উপজেলার কেন্দ্রীয় ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে ট্রাক, পিকআপ, মাইক্রোবাস, অটোরিকশা, ভ্যান, ইজিবাইক ও মোটরসাইকেলসহ ছোট বড় যানবাহনে করে এই গণসমাবেশে যোগ দিতে দেখা যায়। বেলা গড়াতেই হাতে বাঁশ ও লাঠি নিয়ে মিছিলে মিছিলে সমাবেশস্থলে নেতাকর্মীদের ঢল নামে।
এদিকে বরিশালের সমাবেশে আসার পথে বরগুনায় ছগির খান (৩০) নামের এক বিএনপি কর্মীর

মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার রাত ৮টার দিকে বরগুনা সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়নের বিষখালী নদীতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ছগির নলটোনা ইউনিয়নের মোস্তাকপুর বাজারে ইলেকট্রিক ও মোবাইল সার্ভিসিংয়ের ব্যবসা করত। ছগিরের চাচা পলাশ খান জানান, বরগুনা সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়নের বিষখালী নদীতে বরিশালগামী একটি ট্রলার থেকে আরেকটি ট্রলারে লাফ দিয়ে যাবার সময় আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পরে তাকে আহত অবস্থায় বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অন্যদিকে গণসমাবেশে যোগ দিতে গিয়ে বাধার মুখে পড়তে পারেন, এমন আশঙ্কায় কয়েকদিন আগে থেকেই বরিশাল নগরী ও এর আশপাশের এলাকায় অবস্থান নেন দলের নেতাকর্মীরা। আবার অনেকেই আগের রাতে সমাবেশের মাঠে তাঁবু খাটিয়ে না হলে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়েছেন।
এদিকে সকাল ৯টার পর বরিশালে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েন মিডিয়া কর্মীরা। সমাবেশ কাভার করতে যারা বরিশালে অবস্থান করছিলেন তাদের ঢাকায় সংবাদ প্রেরণের জন্য বিভিন্ন প্রান্তে ছুটাছুটি করতে হয়েছে। ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়ায় পুরো বিশ্বের সঙ্গে বরিশাল এক প্রকার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়