৪০তম বিসিএস : নন-ক্যাডারদের সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ মোমবাতি প্রজ্বালন

আগের সংবাদ

ঝুলে গেল সমন্বিত তিস্তা প্রকল্প : ভূরাজনৈতিক চাপের কারণে এই প্রকল্প এগিয়ে নিতে আগ্রহ হারিয়েছে সরকার, এখনো হাল ছাড়েনি চীন

পরের সংবাদ

পুষ্টিগুণে ভরপুর ও উচ্চ ফলনশীল : টিস্যু কালচার কলা চাষে ঝুঁকছেন কৃষক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ওবায়দুল ইসলাম রবি, রাজশাহী শহর থেকে : ফুল থেকে টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে উন্নতজাতের পাঁচ প্রকার কলার চারা উদ্ভাবন করা হয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন এই গবেষণার উদ্ভাবক। তার উদ্ভাবিত নতুন জাতের এই কলা অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন, কম সময়ে উচ্চ ফলনশীল। দেশব্যাপী চাষিদের মধ্যে এই কলার চারার চাহিদা বেড়েছে বহুগুণ।
দেশের অধিকাংশ জেলার কৃষকরা রাবি গবেষকের উন্নতজাতের কলা চাষ করে ব্যাপক লাভবান হচ্ছেন। প্রচলন পদ্ধতির চেয়ে নতুন উদ্ভাবক কলা চাষে প্রায় ৪০ শতাংশ বেশি লাভ করা সম্ভব। টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে উন্নতমানের রপ্তানিযোগ্য ইউনিফরম কলা উৎপাদন করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব বলেও মনে করছেন গবেষক।
জানা গেছে, ২০১৭ সালে টিস্যু কালচারের মাধ্যমে কলার চারা উদ্ভাবনের জন্য প্রকল্প হাতে নেন ওই গবেষক। এই গবেষণা কাজে ব্যয়ের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও রাবি প্রশাসন ৪ লাখ টাকা দেয়।
গবেষক আনোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন গ্রীষ্ম ও উপগ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশে কলার চাষ করা হয়। উৎপাদনের দিক থেকে খাদ্যশস্যের মধ্যে বিশ্বে কলার অবস্থান চতুর্থ। শীতপ্রধান দেশগুলোতে কলা রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দক্ষিণ আমেরিকাসহ ভারত ও ফিলিপাইন।
মূলত বাংলাদেশের কৃষকরা সনাতন পদ্ধতিতে চাষ করায় বিদেশে রপ্তানিযোগ্য কলা উৎপাদন করতে পারে না। অপরদিকে উদ্ভাবিত টিস্যু কালচার কলার চারা আধুনিক পদ্ধতিতে উৎপাদিত হয়। ফলে বছরের যেকোনো সময় কলার চারা রোপণ করা যায়। সনাতন পদ্ধতিতে শুধু বছরে দুই বার কলার চারা রোপণ করা হয়। এ কারণে বছরের সবসময় ভালো মানের কলা পাওয়া যায় না। টিস্যু কালচার কলার চারা ল্যাবরেটরিতে তৈরি হয়। তাই এই চারাগুলো শতভাগ রোগ বা জীবাণুমুক্ত হয়। যার ফলে কীটনাশক কম ব্যবহার করতে হয়। এটি রোপণের পর সময় ও জাতভেদে পাঁচ থেকে সাত মাসের মধ্যেই কলার মোচা বের হয় এবং ৯ থেকে ১১ মাসের মধ্যে কলা সংগ্রহ করা যায়।
তিনি আরো বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য হলো- অল্প খরচে দেশের মানুষের স্বল্প মূল্যে অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন নির্ভেজাল কলা খাওয়ানো। পাশাপাশি টিস্যু কালচারের মাধ্যমে উৎপাদিত চারা সারাদেশে ব্যাপকহারে চাষাবাদের জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা। এই লক্ষ্যে গত দুই বছর পুরো দেশের কৃষকদের মাঝে পাঁচ জাতের চারা বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। ইতোমধ্যে টিস্যু কালচারের মাধ্যমে কলার চারা রোপণে কৃষকদের অভাবনীয় চাহিদা বেড়েছে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, টিস্যু কালচারের মাধ্যমে রাবির গবেষকদের উদ্ভাবিত উন্নতজাতের কলার চারা ইতোমধ্যেই সারাদেশে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এই সাফল্যে সারাদেশে বিপ্লব ঘটে যাবে। রাবির প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. তানজিমা ইয়াসমিন বলেন, নতুন উদ্ভাবিত এই কলার চারা দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। সাধারণ কলার চেয়ে এই কলা অনেক বেশি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়