৪০তম বিসিএস : নন-ক্যাডারদের সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ মোমবাতি প্রজ্বালন

আগের সংবাদ

ঝুলে গেল সমন্বিত তিস্তা প্রকল্প : ভূরাজনৈতিক চাপের কারণে এই প্রকল্প এগিয়ে নিতে আগ্রহ হারিয়েছে সরকার, এখনো হাল ছাড়েনি চীন

পরের সংবাদ

নন্দীগ্রামে শৃঙ্খলা নেই বগুড়া-নাটোর সড়কে

প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়া-নাটোর মহাসড়ক। গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কের সঙ্গে ঢাকা, রংপুর, নাটোর, রাজশাহী ও নওগাঁসহ বিভিন্ন জেলার সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। প্রতিদিন এই সড়কে বাস, পাথরবোঝাই ট্রাকসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী ভারী যানবাহন চলাচল করে। নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ডে নেই ট্রাফিক পুলিশ, নেই ফুটওভার ব্রিজ, নেই রোড ডিভাইডার। কুন্দারহাট হাইওয়ে থানার সামনে দিয়েই মহাসড়কে চলে সিএনজি অটোরিকশাসহ সবধরনের থ্রি-হুইলার। প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে পারেনি হাইওয়ে পুলিশ। শৃঙ্খলা কবে ফিরবে- এমন প্রশ্ন সাধারণ মানুষের।
সরজমিন দেখা গেছে, নন্দীগ্রাম শহরের বাসস্ট্যান্ডে ফুটওভার ব্রিজ না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পারাপার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। যে কোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। স্বাধীনতার ৫১ বছরেও সদরের বাসস্ট্যান্ডে ট্রাফিক ব্যবস্থা বাস্তবায়ন হয়নি। উপজেলা পরিষদ-থানা রোডে দিনের বেলায় ব্যস্ততম রাস্তার উপরেই ট্রাক রেখে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মালামাল ওঠানামা করে। এর বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেয়নি নন্দীগ্রাম পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। তবে মৌখিকভাবে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেছেন মেয়র। থানা থেকে মাঝে মধ্যে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হলেও তা স্থায়ী রূপ নেয়নি। পৌরসভার পক্ষ থেকে যানজট নিরসনে বাসস্ট্যান্ডের মুখে এক ব্যক্তিকে দিয়ে সাময়িকভাবে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা হলেও তা কাজে আসছে না। সিএনজি অটোরিকশা, রিকশা-ভ্যানসহ যানবাহনের নির্দিষ্ট স্ট্যান্ড নেই। অনেকে বলছেন, প্রয়োজন পরিকল্পিত স্ট্যান্ড ব্যবস্থা, সচেতনতা এবং কঠোরতা।
সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ৮ আগস্ট নন্দীগ্রাম পৌর এলাকার ইসলামপুরে সেলিনা পাম্পের সামনে মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে আরেকটি চলন্ত ট্রাক ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই পরিবহন ব্যবসায়ী হায়দার প্রামানিক নিহত হন। একই বছরের ২৩ ডিসেম্বর নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মহাসড়ক পার হওয়ার সময় ট্রাকের ধাক্কায় আব্দুল গফ্ফার (৬৫) নিহত হন। ২০২২ সালের ৭ মার্চ মহাসড়কের দামগাড়া এলাকায় অটোভ্যান (থ্রি-হুইলার) ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে আবু জাফর নিহত হন। ১৬ জুলাই রনবাঘা এলাকার মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে সিএনজি অটোরিকশার ধাক্কায় আলতাফ হোসেন ও মোসলেমা খাতুন নামে দুজন মারা যান। ২৬ অক্টোবর নন্দীগ্রাম ফিলিং স্টেশন এলাকায় মহাসড়কে থামিয়ে রাখা ট্রাকের পেছনে বাসের ধাক্কায় হেলপার বাবু মিয়া (২৩) ও যাত্রী মাহবুবুর রহমান তালুকদার (৩৮) নামে দুজন নিহত হন। বেশ কয়েকটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটলেও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে পারেনি হাইওয়ে পুলিশ। ফিলিং স্টেশন ও বাসস্ট্যান্ডে মহাসড়কের পাশে দিনে ও রাতে ট্রাক রেখে বাড়িতে যান চালকরা। প্রাণহানির ঘটনা ঘটলে প্রশাসনের তৎপরতা কয়েকদিন চোখে পড়ে, এরপর সব আগের অবস্থায় ফিরে যায়।
জানতে চাইলে কুন্দারহাট হাইওয়ে থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, থ্রি-হুইলার একেবারেই তুলে দেব। মহাসড়কে উঠতে দেব না। সড়কে যারা ট্রাক রাখে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
নন্দীগ্রাম পৌরসভার মেয়র মো. আনিছুর রহমান বলেন, বাসস্ট্যান্ডে একটি ফুটওভার ব্রিজ করার উদ্যোগ নিচ্ছি। উপজেলা রোডে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সামনে রাস্তায় ট্রাক রেখে দিনের বেলা কেউ যেন মালামাল ওঠানামা না করান, এজন্য ব্যবসায়ীদের মৌখিকভাবে বলা হয়েছে। সিএনজি অটোরিকশার নির্দিষ্ট স্ট্যান্ড ছিল না, সম্প্রতি সাময়িকভাবে সেই ব্যবস্থা করেছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিফা নুসরাত বলেন, বাসস্ট্যান্ডে ট্রাফিক পুলিশ রাখার মতো সদস্য থানায় নেই। মহাসড়কের পাশে যারা গাছের গুঁড়ি রেখে ব্যবসা করেন, তাদের কঠোরভাবে বলা হয়েছে। গাছের গুঁড়ি সরিয়ে না নিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ট্রাফিক ব্যবস্থা জেলা থেকে নিয়ন্ত্রণ করে। ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে নন্দীগ্রামে কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়