৪০তম বিসিএস : নন-ক্যাডারদের সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ মোমবাতি প্রজ্বালন

আগের সংবাদ

ঝুলে গেল সমন্বিত তিস্তা প্রকল্প : ভূরাজনৈতিক চাপের কারণে এই প্রকল্প এগিয়ে নিতে আগ্রহ হারিয়েছে সরকার, এখনো হাল ছাড়েনি চীন

পরের সংবাদ

আলোচনা সভায় বক্তারা : বাহাত্তরের সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠায় চাই ঐক্যবদ্ধ লড়াই

প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের কথা বাদ দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতা উল্লেখ করে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু প্রণীত সংবিধান ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। তারা বলেছেন, বাহাত্তরের সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের কোনো বিকল্প নেই। সংবিধান দিবস উপলক্ষে গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খিস্টান ঐক্য পরিষদ আয়োজিত ‘আদিবাসীদের আদিবাসী পরিচয়ে স্বীকৃতি দিয়ে ৭২-এর বঙ্গবন্ধুর সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠা চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তারা এই দাবি জানান। প্রসঙ্গত, দেশে প্রথমবারের মতো গত ৪ নভেম্বর সংবিধান দিবস পালিত হয়।
সভায় ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, একাত্তরের গণহত্যা ধর্মের নামেই হয়েছে। আর এসব হয়েছে ইসলাম ধর্মের নামে। আর সে কারণে বঙ্গবন্ধু ধর্মের নামে রাজনীতি নিষেধ করেছিলেন। ধর্মের পবিত্রতা রক্ষা করার জন্য ধর্মকে রাষ্ট্র ও রাজনীতি থেকে পৃথক করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে এই ৭২-এর সংবিধানকে সা¤প্রদায়িকীকরণের জন্য। এই সংবিধানকে দুই জেনারেল জিয়া ও এরশাদ কলঙ্কিত করেছেন। আমরা আশা করেছিলাম পঞ্চদশ সংশোধনীর আগে তা যেন আগের মতো হয়ে যায়। কিন্তু তা হয়নি।
সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সর্বকনিষ্ঠ সদস্য অধ্যাপক আবু সাইয়িদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার পঞ্চদশ সংশোধনী করেছে। কিন্তু জাতির পিতার হত্যাকারীরা সংবিধানের প্রস্তাবনার মাথায় যে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম যোগ করল, একই ধারায় রাষ্ট্রধর্ম সংযুক্ত করল- সেখানে কোনো হেরফের হয়নি। এটি নিঃসন্দেহে দুর্ভাগ্যজনক। প্রজাতন্ত্রের ৭ অনুচ্ছেদ, রাষ্ট্র পরিচালনার ২৭ অনুচ্ছেদ, মৌলিক অধিকার ও ৫১টি জায়গায় নাকি হাত দেয়া যাবে না, সংশোধন করা যাবে না। কেন করা যাবে না?
নাট্যকার মামুনুর রশীদ বলেন, আমাদের জনগণ সংবিধান বোঝে না, বাজেট বোঝে না। আর সংবিধান না বোঝার ফলে তারা কিছুই জানতে পারে না। যখন এরশাদ রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করেছিলেন তখন আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম। কিন্তু সেটা বড় আকার নেয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বঙ্গবন্ধু ৪ নভেম্বর সংসদে যে ভাষণ দিয়েছিলেন সেখানে তিনি চারটি খুঁটির কথা বলেছিলেন। গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদ। এই চারটি খুঁটি তিনি স্থাপন করেছিলেন ও বলেছিলেন।
গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি ও ঐক্য পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, অনেকে সংশোধনী নিয়ে বড় বড় বুলি আওড়াচ্ছেন। কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষতার ব্যাপারে কোনো কথা নেই। এই সংবিধানে বঙ্গবন্ধু আছেন, জেনারেল জিয়া আছেন, এরশাদ আছেন। আবার শেখ হাসিনাও আছেন। কারণ পঞ্চদশ সংশোধনী শেখা হাসিনা করেছেন। ভবিষ্যতে এগুলো নিয়ে আলাপ হবে।
বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাণা দাশগুপ্ত বলেন, বাহাত্তরের সংবিধান পাকিস্তানি মোড়কের সংবিধানের অনুরূপে আজও আবর্তিত। রাষ্ট্র, রাজনীতি, শিক্ষানীতি, সমাজনীতি, প্রশাসন সবটাই আজ মুক্তিযুদ্ধের মৌল চেতনা থেকে অনেক দূরে ছিটকে পড়েছে। বিগত ১৩ বছরে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দলের সরকার দেশের অবকাঠামোগত প্রচুর উন্নয়ন করেছে। কিন্তু আপামর বাঙালি জাতি মননে-মানসিকতায় ক্রমশ পিছিয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে আদিবাসীদের আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে বঙ্গবন্ধুর বাহাত্তরের সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের বিকল্প নেই।
ড. নিমচন্দ্র ভৌমিকের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট নারী নেত্রী ডা. ফৌজিয়া মোসলেম, নির্মল রোজারিও প্রমুখ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়