নিশ্চিত মৃত্যু থেকে ইমরান খানকে বাঁচালেন এক যুবক : প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের দিকে সন্দেহের তীর

আগের সংবাদ

এ মরণফাঁদ থেকে মুক্তি মিলবে কবে?

পরের সংবাদ

স্বস্তি নেই কোনো পণ্যে, ক্রেতাদের নাভিশ্বাস

প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাজারে কোনো পণ্য কিনতে গিয়েই স্বস্তি পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। প্রতিটি পণ্যের দামই হু হু করে বাড়ছে। মধ্যবিত্তরাও এখন দামের চাপে ব্যাগের তলানিতে পণ্য নিয়ে ফিরছেন ঘরে। নি¤œবিত্তদের অবস্থা অবর্ণনীয়। মাস খানেক আগে কমানো ভোজ্যতেলের দাম নতুন করে বাড়ানোর প্রস্তাব এসেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে। সব মিলে বাজারের অসহনীয় দামে নাকাল ভোক্তা।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, দাম বাড়ার কোনো কারণ না থাকলেও ফের বাড়তে শুরু করেছে মোটা চাল, আটা, ময়দা, তেল, চিনি, পেঁয়াজ, মসুর ডালসহ প্রায় সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। এসব পণ্যের বাড়তি দামের চোটে যেমন একদিকে ক্রেতারা চাহিদার তুলনায় পণ্য কম কিনছেন, তেমনি বিক্রেতাদেরও কেনাবেচা কমেছে। বাজারে নতুন করে অস্বস্তি নিয়ে এসেছে ভোজ্যতেল।
দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমেছিল এক মাস আগে। এর মধ্যেই আবার দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এবার তারা লিটারে ১৫ টাকা বাড়াতে চান। গত মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দেয়ার পর এরই মধ্যে বাজারে তেল সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে কোম্পানিগুলো। সেজন্য এখন বেশির ভাগ দোকানে আগের নির্ধারিত দাম অনুযায়ী তেল পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৮ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেল ১৫৮ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা থাকলেও কিনতে হচ্ছে আরও বেশি দরে।
শান্তিনগর বাজারের খুচরা বিক্রেতা জামাল উদ্দিন বলেন, সরকার ঘোষণা দেয়ার আগেই ডিলাররা তেলের দাম বেশি নেয়া শুরু করেছে। বোতলজাত সয়াবিনের পাশাপাশি খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দামও বেড়েছে পাইকারি বাজারে। পাইকারি পর্যায়ে প্রতি ড্রাম (২০৪ লিটার) সয়াবিন ও পাম তেলে এক থেকে দেড় হাজার টাকা বেড়েছে।
এছাড়া বাজারে চিনির দাম এখনো কমেনি। প্রতি কেজি খোলা চিনি ৯০ টাকা এবং প্যাকেটজাত ৯৫ টাকা নির্ধারিত থাকলেও বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকায়। আবার সরকারি চিনিকলের চিনিগুলো প্রতি কেজি ৮৫ টাকা দর নির্ধারিত থাকলেও সেসব বাজারে মিলছে না। গত তিন দিনে মিল পর্যায়ে মোটা চাল প্রতি বস্তায় (৫০ কেজি) ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। সে কারণে খুচরা বাজারে খোলা চালের দামও বেড়েছে ১ থেকে ২ টাকা। প্রতি কেজি পায়জাম ও গুটি স্বর্ণা জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৩ থেকে ৫৬ টাকায়। বিআর-২৮ জাতের চাল ৫৮ থেকে ৬০ টাকায়।
শুধু চাল নয়, খুচরা বাজারে নতুন করে বেড়েছে খোলা আটা-ময়দার দামও। প্রতি কেজি আটা বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। যা আগে ৫ টাকা কম ছিল। একইভাবে ভালো মানের ময়দার দাম ৬৫ থেকে ৭০ টাকা হয়েছে। ডালের দামও গত তিন-চার দিনে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। দেশি প্রতি কেজি মসুর ডাল ১২৫ থেকে ১৩০ এবং আমদানি করা ডাল ১০০ থেকে ১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে আরো ৫ টাকা বেড়ে দেশি পেঁয়াজের কেজি ঠেকেছে ৬০ টাকায়। আবার ভালো মানের বাছাই করা পেঁয়াজ নিতে গেলে কোথাও কোথাও ৭০ টাকাও দিতে হচ্ছে। আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বাজারে অধিকাংশ সবজির দাম ৮০ টাকা কেজি। ৮০ টাকা বা তার কিছু কমবেশি দামের সবজির তালিকায় রয়েছে কাকরোল, কচুর লতি, উচ্ছে, করলা, ঝিঙা ও শিম। বেগুন, পটল, চিচিঙ্গা, মুলা ও এক পিস ফুলকপি পাওয়া যাচ্ছে ৬০ টাকার মধ্যে।
কম দামে শুধু পেঁপে, যা ৪০ টাকা কেজি; আর টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। সেগুনবাগিচা বাজারে কথা হয় বেসরকারি কোম্পানির চাকরিজীবী সোলাইমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, বাজারে সবকিছুর দাম বাড়তি। দাম শুনে অনেকে পণ্য না নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
যেটা না নিলেই নয়, সেসব পণ্য এক কেজির জায়গায় আধা কেজি নিচ্ছেন। আগে যারা পুরো প্যাকেট নিতেন, তারা খোলা কিনছেন। দ্রব্যমূল্যের এই অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতিতে স্বস্তি নেই কারো। আর বাজারে একের পর এক জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। পরিস্থিতি যেন আমাদের মতো মানুষের বেঁচে থাকার অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে। সংসারের খরচ কমাতে কমাতে এমন জায়গায় গেছে, আর উপায় শেষ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়