নিশ্চিত মৃত্যু থেকে ইমরান খানকে বাঁচালেন এক যুবক : প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের দিকে সন্দেহের তীর

আগের সংবাদ

এ মরণফাঁদ থেকে মুক্তি মিলবে কবে?

পরের সংবাদ

ভারী অস্ত্র কিনতে সন্ত্রাসীদের ১৭ লাখ টাকা দেয় শারক্বীয়া : হিজরতে যাওয়া অর্ধশতাধিক তরুণের সন্ধান মেলেনি

প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার আরো ৪ সদস্য গ্রেপ্তার হলেও নতুন এই জঙ্গি সংগঠনের ডাকে তথাকথিত হিজরতের নামে ঘরছাড়া অর্ধশতাধিক তরুণের সন্ধান মেলেনি এখনো। এরই মধ্যে পার্বত্য এলাকায় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণ নেয়া ছাড়াও ভারী অস্ত্র কিনতে ১৭ লাখের বেশি টাকা খরচ করেছে তারা। এমন পরিপ্রেক্ষিতে হিজরতে যাওয়া তরুণদের খোঁজ না পাওয়া, পার্বত্যাঞ্চলে প্রশিক্ষণ ও ভারী অস্ত্র- এসব মিলিয়ে যে কোনো সময় বড় ধরনের হামলার আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। এসব বিষয় মাথায় রেখে সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে পার্বত্যাঞ্চলের গহিন এলাকায় সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য বাহিনীর সমন্বয়ে যৌথ অভিযান চালাচ্ছে র‌্যাব।
জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার আরো ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈনের দেয়া বক্তব্যে এমন তথ্য উঠে আসে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাতে কুমিল্লার লাকসাম এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। তারা হলেন-
আব্দুল কাদের ওরফে সুজন ওরফে ফয়েজ ওরফে সোহেল (২৪), ইসমাইল হোসেন ওরফে হানজালা ওরফে মানসুর (২২), মুনতাছির আহম্মেদ ওরফে বাচ্চু (২৩) ও হেলাল আহমেদ জাকারিয়া (৩৩)। এদের

মধ্যে বাচ্চু সংগঠনটির অর্থবিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক, সোহেল ও হানজালা হিযরতকৃত সদস্যদের সমন্বয়ক এবং জাকারিয়া সামরিক শাখার ৩য় সর্বোচ্চ ব্যক্তি। গ্রেপ্তার হওয়া জঙ্গিরা ও সংগঠনটির আমিরসহ দায়িত্বশীলরা সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতি নিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রশিক্ষণ নিতে নতুনদের আগ্রহী করে তুলত। সোহেল ও মানসুর সংগঠনটির আমির মাহমুদের একান্ত সহযোগী। সেই সুবাদে তারা সারাদেশে বাড়ি ছেড়ে যাওয়া সদস্যদের তাত্ত্বিক ও সশস্ত্র প্রশিক্ষণের জন্য দেশের

বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানোর কাজটি সমন্বয় করত। পটুয়াখালী, ভোলাসহ সমতলের বিভিন্ন এলাকায় প্রশিক্ষণ শেষে হিজরত করা ব্যক্তিদের কুমিল্লায় তাদের সেইফ হাউসে রাখা হতো। র‌্যাব লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মঈন জানান, পরবর্তী সময়ে সুবিধাজনক সময়ে তারা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যটক বা অন্য ছদ্মবেশে পার্বত্যাঞ্চলে প্রশিক্ষণ শিবিরে পাঠাতেন। গত মার্চ-এপ্রিলের দিকে ১৭ জন ও সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ১২ জন তরুণকে পর্যটকের ছদ্মবেশে বান্দরবানে পাঠিয়েছে তারা। খোঁজ না পাওয়া অর্ধশতাধিক জঙ্গি মাথাব্যথার কারণ কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা যে ৫৫ জনের তালিকা দিয়েছি, তাদের একজনকেও পাইনি। তারা কি পার্বত্য চট্টগ্রামের ভেতরে আছে নাকি বিভিন্নভাবে বেরিয়ে এসেছে। যেখানে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল তা গহিন বনাঞ্চল। যেখান থেকে পরিচয় গোপন করে যাওয়া-আসা অনেক সহজ। যখন যায়, তখন ট্যুরিস্ট হিসেবেই যায়। পার্বত্যাঞ্চলে অনেক অরক্ষিত বনাঞ্চল রয়েছে। যেখানে তারা বিভিন্নভাবে যেতে পারে।
জঙ্গিদের জন্য ভারী অস্ত্র কিনতে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) পেয়েছে ১৭ লাখ উল্লেখ করে কমান্ডার মঈন বলেন, জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার আশ্রয় প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র দেয়ার কাজটি টাকার বিনিময়ে করছে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফ। প্রতি মাসে ৩ লাখ টাকার বিনিময়ে জঙ্গিদের আশ্রয় ও প্রশিক্ষণ দিচ্ছে তারা। গত ৮-৯ মাসে দুই দফায় একে-২২, একে-৩২-এর মতো ভারী অস্ত্র কেনার জন্য কুকি-চিনকে ১৭ লাখ টাকা দিয়েছে জঙ্গিরা। র‌্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তার বাচ্চুর মাধ্যমে তারা জানতে পেরেছেন বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের মোবাইল ব্যাংকিং ও ব্যাংকিং চ্যানেলে তারা অস্ত্র কেনার জন্য টাকা দিয়েছে। টাকা পাওয়ার পর পার্বত্য চট্টগ্রামে যারা প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, র‌্যাব আনুমানিক ধরে নিয়েছে সংখ্যাটা ৫০-এর বেশি। তাদের তারা (কুকি-চিন) অস্ত্র সরবরাহ করেছে। এই অস্ত্রের মাধ্যমে তারা প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা ঠিক কী সংখ্যক অস্ত্র জঙ্গিদের কাছে রয়েছে, তার সংখ্যা জানাতে পারেনি। তবে বেশ কিছু অস্ত্র তাদের হাতে রয়েছে বলে জানিয়েছে। প্রশিক্ষণ ও নাশকতার জন্য যেগুলো ব্যবহৃত হতে পারে। র‌্যাবের গোয়েন্দা তথ্য ও গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে বাহিনীটি জানতে পেরেছে জঙ্গি সংগঠনকে দেশের বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে ১ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ডোনেশন পেয়েছে। কারা এই টাকা ডোনেট করছে, তাদের শনাক্তে র‌্যাব কাজ করছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়