বাংলা একাডেমির তিনটি পুরস্কার ঘোষণা

আগের সংবাদ

মহাসড়কে পদে পদে মরণফাঁদ :

পরের সংবাদ

বিমানের ১০ কর্মকর্তা-কর্মচারী গ্রেপ্তার : এমডির কক্ষ থেকেই প্রশ্নফাঁস

প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) কক্ষ থেকেই ফাঁস হয়েছে। এমডির অফিস সহকারী জাহিদ এই প্রশ্নপত্র ফাঁস করে। এরপর তা অন্য কর্মকর্তার যোগসাজশে বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেয়। তবে নিয়োগ পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে জড়িত কমিটির সদস্যদের দায়িত্ব ছিল সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করা। কিন্তু তারা যেহেতু সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেননি, তাই কমিটির কেউ দায় এড়াতে পারেন না। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ। তিনি বলেন, প্রশ্নফাঁস, পরীক্ষা বাতিল ও সার্বিক তদন্তে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ। এখন পর্যন্ত ৫০ লাখ টাকা লেনদেনের তথ্য মিলেছে। আরো অনেক ব্ল্যাংক চেক উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় যাদের দায় রয়েছে, যারা প্রশ্নফাঁস করেছেন, তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। তিনি বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিয়োগ পরীক্ষার আগেরদিন প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যায়। প্রশ্নফাঁস ও জালিয়াতির ঘটনায় গত ২১ নভেম্বর ডিবি লালবাগ প্রথমদিনই বিমানবন্দর, কাউলা থেকে আওলাদ হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, এনামুল হক, হারুন-অর-রশিদ ও মাহফুজুল আলম নামে বিমান বাংলাদেশের পাঁচ কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করে।
তাদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের আরো ৫ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন- মো. মাসুদ, জাহিদ হাসান, সমাজু ওরফে সোবহান, জাবেদ হোসেন এবং জাকির হোসেন। তাদের কাছ থেকে নগদ দেড় লাখ টাকা, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক ৩২টি, নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ১৭টি, মোবাইল ফোন ১৪টি, মোটরসাইকেল, ডায়েরি ৩টি, ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রের হার্ডকপি ও সফটকপি এবং নিয়োগ প্রার্থীদের প্রবেশপত্র ৫৪টি জব্দ করা হয়।
ডিবিপ্রধান হারুন বলেন, গ্রেপ্তার ১০ জনের মধ্যে ৯ জন প্রশ্নফাঁসে নিজেদের ও অন্যদের দোষ স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দিতে তারা প্রশ্নফাঁসের যাবতীয় অপকর্মের বিবরণ দিয়েছে। পরীক্ষা কমিটির মূল জিএম এডমিনের কক্ষে প্রশ্নপত্র রেডি হয়। সেখান থেকে একজন প্রশ্নপত্রের ছবি তোলে। ২০ অক্টোবর বিমানের লোগো মুছে ফেলে ৮০টি প্রশ্ন টিকচিহ্ন দিয়ে আরো দুজনের কাছে সরবরাহ করে। ওই দুজন মোটরসাইকেলে করে চলে যায়। আবার ১৯ অক্টোবর সামারাইজ প্রশ্নের ফটোকপি করতে এমডির অফিস সহকারী জাহিদ হোসেনকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি স্মার্টফোন সঙ্গে নিয়ে ফটোকপি করার সময় ছবি তুলে সোবহানের কাছে পাঠিয়ে দেন। সোবহান আরো কয়েকজনের কাছে সরবরাহ করে। গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য, ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি ও যাবতীয় ডিজিটাল তথ্য উপাত্তে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, তারা অর্থের বিনিময়ে আগেও অপকর্ম করেছেন। এক প্রশ্নের জবাবে হারুন-অর-রশিদ বলেন, এই প্রশ্নফাঁস করেছে অফিস সহকারী জাহিদ। নিয়োগ পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে জড়িত কমিটির সদস্যদের দায়িত্ব ছিল সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করা। কিন্তু তারা এড়াতে পারেন না। এই ঘটনায় গ্রেপ্তাররা নিয়োগ কমিটির সদস্যদের জড়িত থাকার বিষয়টি বলেছেন। তাদের দায় রয়েছে। আমরা ১৬৪ ধারায় গ্রেপ্তারদের জবানবন্দি বিশ্লেষণ করছি। গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করেছি। সবকিছু মিলে যাদের বিরুদ্ধে প্রশ্নফাঁসে দায় এসেছে, তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
গ্রেপ্তার কোনো আসামির জবানবন্দিতে এমডির নাম এসেছে কিনা জানতে চাইলে হারুন বলেন, যাদের দায় আছে তাদেরই আইনের আওতায় আনা হবে। মামলার তদন্ত ও নিষ্পত্তির স্বার্থে প্রয়োজনে আরো অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এখন পর্যন্ত আমরা বিমানের প্রশ্নপত্র

ফাঁসের ঘটনায় ৫০ লাখ টাকা লেনদেনের কংক্রিট তথ্য পেয়েছি। আমরা তদন্ত করছি।
উল্লেখ্য গত ২১ অক্টোবর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের ১২টি পদে নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ ধার্য ছিল। কিন্তু পরীক্ষার আগে একটি অসাধুচক্র বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে। পরে পরীক্ষাটি বাতিল ঘোষণা করা হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়