বাংলা একাডেমির তিনটি পুরস্কার ঘোষণা

আগের সংবাদ

মহাসড়কে পদে পদে মরণফাঁদ :

পরের সংবাদ

বক্তৃতায় আবুল হাসান চৌধুরী : দীনেশচন্দ্র সেন বাঙালি সংস্কৃতির প্রকৃত সাধক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : লোক-সাহিত্যবিশারদ, শিক্ষাবিদ, গবেষক ও বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসকারী দীনেশচন্দ্র সেন। তিনি ছিলেন বাঙালি সংস্কৃতির এক প্রকৃত সাধক। অখণ্ড বাংলার ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং জীবন নিয়েই ছিল তার আমৃত্যু গবেষণার আরাধনা। এই অখণ্ডতাকে সামগ্রিক করে তোলার জন্য তার দৃষ্টি নিবদ্ধ ছিল এ অঞ্চলের ব্রাত্য জনগোষ্ঠীর ওপর। কারণ তারাই বাংলার আত্মাকে প্রকৃত অর্থে ধারণ করেছে। এই অনার্য ব্রাত্যদের অধিকাংশেরই বসবাস ছিল পূর্ববঙ্গে। ফলে পূর্ববঙ্গকে মন্থন করেই তিনি উদ্ধার করেছেন সেই অমৃত, যার মধ্যে সংগুপ্ত রয়েছে ইতিহাসের প্রকৃত সত্য। বাঙালি সংস্কৃতির মধ্যেই তিনি খুঁজে পেয়েছেন অসা¤প্রদায়িক চেতনার বীজ।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে এই লোক-সাহিত্যবিশারদের ১৫৬তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে একক বক্তৃতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে ‘খাঁটি বাঙালি সারস্বত সাধক দীনেশচন্দ্র সেন’ শীর্ষক বক্তৃতা দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের অধ্যাপক আবুল হাসান চৌধুরী। বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। ধন্যবাদ জানান বাংলা একাডেমির সচিব এ. এইচ. এম. লোকমান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জেলহত্যা দিবস স্মরণে ১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বর কারাগারের অভ্যন্তরে নিহত চার জাতীয় নেতা স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, দীনেশচন্দ্র সেন বাংলা সাহিত্যের লোকায়ত প্রেক্ষাপটকে বিস্মৃতির অন্ধকার থেকে আলোর পরিসরে নিয়ে এসেছেন। জীবনের নানা প্রতিবন্ধকতা এবং শারীরিক অসুস্থতাকে উপেক্ষা করে তিনি তার সারাজীবন লোকসাহিত্য ও লোকসংস্কৃতি চর্চায় নিবেদন করে গেছেন। ধর্মীয় রক্ষণশীল পরিবেশকে অগ্রাহ্য করে তিনি হিন্দু-মুসলমানের সমন্বিত লোকঐতিহ্যের

ধারাকে শক্তিশালী করেছেন; আজকের দিনেও যার প্রাসঙ্গিকতা প্রবলভাবে অনুভূত হয়।
সেলিনা হোসেন বলেন, মৈমনসিংহ গীতিকা, পূর্ববঙ্গ গীতিকার মতো অসামান্য গ্রন্থ প্রণয়ন করে দীনেশচন্দ্র সেন বহির্বিশ্বে বাংলা সাহিত্যের লোকায়ত ধারাকে সার্থকভাবে তুলে ধরেছেন। জীবনব্যাপী সাধনায় বাংলা সাহিত্যের আন্তর্জাতিকায়নে অসামান্য ভূমিকা পালন করে তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন।
মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, দীনেশচন্দ্র সেন লোকায়ত বাংলার এক অনন্য মনীষার নাম। তিনি ‘বৃহৎ বঙ্গ’ গ্রন্থের মাধ্যমে যেমন বাংলার লোকইতিহাসকে পাঠকের কাছে তুলে ধরেছেন তেমনি তার জীবনব্যাপী লোকসাহিত্য ও লোকসংস্কৃতি চর্চা বাংলা ফোকলোরকে বিশ্বপরিসরে উপস্থাপন করেছে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির উপপরিচালক ড. সাইমন জাকারিয়া।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়