বাংলা একাডেমির তিনটি পুরস্কার ঘোষণা

আগের সংবাদ

মহাসড়কে পদে পদে মরণফাঁদ :

পরের সংবাদ

চবির চারুকলা ইনস্টিটিউট : এগারো দফা দাবিতে ক্লাস বর্জন শিক্ষার্থীদের

প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : নগরীর চট্টেশ্বরী রোড ধরে একটু উঁচু পাহাড়ি ঢাল বেয়ে বাদশা মিয়া সড়কেই মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে চট্টগ্রাম চারুকলা ইনস্টিটিউট। আগে ছিল এটি চারুকলা কলেজ। পরে ২০১০ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একীভূত করে চারুকলা ইনস্টিটিউটে উন্নীত করা হয়। কিন্তু নামেই ইনস্টিটিউট হয়েছে। শিক্ষার কোনো উন্নয়ন হয়নি তাতে। সেই ইনস্টিটিউট এখন নানা সমস্যায় জর্জরিত। এই ইনস্টিটিউটে গত বুধবার বেলা ১১টার দিকে হঠাৎ পেইন্টিং কক্ষে প্লাস্টার খসে পড়ে। এর আগেও এমনটি হয়েছিল। কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও সংস্কারের কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে ক্লাস করতে ভয় পেয়ে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত ও বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন। এরপরই তারা ক্লাশ বর্জন করে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বৃহস্পতিবারও বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা নানা দাবিদাওয়া সংবলিত স্লেøাগান লিখে ইনস্টিটিউটের শিল্পী রশিদ চৌধুরী আর্ট গ্যালারির সামনে অবস্থান নেয়। তারা ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে অনির্দিষ্টকাল ক্লাস বর্জনের ডাক দিয়েছেন।
শ্রেণিকক্ষের সংস্কার, পর্যাপ্ত শৌচাগার স্থাপন, পানি সরবরাহ নিশ্চিতসহ ১১ দফা দাবিতে ক্লাস বর্জন চলবে বলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দিয়েছেন। ‘ঝুঁকিপূর্ণ ক্লাসরুম ও ভবন চাই না’, ‘চারুকলার ডাইনিং কই’, ‘চিকিৎসার ব্যবস্থা চাই’, ‘মেয়েদের আবাসন চাই’, ‘টয়লেট কই’ ইত্যাদি স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছে গতকাল বৃহস্পতিবারও। তারা দ্রুত শ্রেণিকক্ষ সংস্কার, পর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, ডাইনিং চালু, ব্যক্তির ফিগার আঁকার জন্য মডেল নিয়োগ দেয়া, গ্রন্থাগারে গ্রন্থাগারিক নিয়োগ ও পর্যাপ্ত বইয়ের ব্যবস্থা, শিক্ষার্থীদের আঁকার সরঞ্জামের জন্য স্টেশনারি দোকানের ব্যবস্থা করা, পর্যাপ্ত শৌচাগারের ব্যবস্থা করা, শিক্ষার্থীদের জন্য বাস চালু, খেলার মাঠের ব্যবস্থা করা, বর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা এবং শ্রেণিকক্ষে পর্যাপ্ত লাইট, ফ্যান, ইজেল, লকার ও বেসিনের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন।
এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন পর্যাপ্ত বই নেই। আঁকার সরঞ্জাম নেই। শ্রেণিকক্ষে বসতে শিক্ষার্থীরা ভয় পান। কারণ, দেয়ালের প্লাস্টার প্রায়ই ভেঙে পড়ে। গতকাল বেলা ১১টার দিকে পেইন্টিং কক্ষে প্লাস্টার ভেঙে পড়ে। তারপরই শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেন।
ইনস্টিটিউট হওয়া সত্ত্বেও চারুকলার শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পান না বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ রয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭০ সালে। ২০১০ সালে নগরের সরকারি চারুকলা কলেজের সঙ্গে এক হয়ে গঠিত হয় চারুকলা ইনস্টিটিউট। বর্তমানে ইনস্টিটিউটে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৫৩ জন। তাদের মধ্যে ছাত্রী ১৭৯, ছাত্র ১৭৪ জন। এখানকার শিক্ষার্থীদের অর্ধেকের বেশি ছাত্রী হলেও তাদের মাত্র ১৩ আসনের একটি হোস্টেল রয়েছে। সেখানে কোনোরকমে ২৫ জন শিক্ষার্থী থাকেন। শিক্ষার্থীরা বলছেন, শ্রেণিকক্ষের কোথাও পানির ব্যবস্থা নেই। আঁকাআঁকির কাজ করার পর শিক্ষার্থীদের হাত ধোঁয়ার প্রয়োজন হলে তাদের চারতলা থেকে নিচতলায় নামতে হয়। পুরো ভবনে মেয়েদের জন্য একটি মাত্র শৌচাগার রয়েছে। এ কারণে তাদের লাইনে দাঁড়িয়ে শৌচাগার ব্যবহার করতে হয়।
শিক্ষার্থীদের এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রণব মিত্র চৌধুরী সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে কয়েকবার জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম মনিরুল হাসান বললেন, শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ দাবি ইতোমধ্যে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটির মাধ্যমে অনুমোদিত হয়েছে। শিগগির এসব বাস্তবায়ন করা হবে বলে আশা করছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়