জিএম কাদেরের দলীয় কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা

আগের সংবাদ

বিএনপি বাড়াবাড়ি করলে ফের জেলে পাঠানো হবে খালেদাকে

পরের সংবাদ

৪ স্কুলে কর্মচারী নিয়োগে কোটি টাকার বাণিজ্য

প্রকাশিত: নভেম্বর ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কামাল হাওলাদার, কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ) থেকে : কোটচাঁদপুর উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে চলছে অর্থ বাণিজ্যের মহোৎসব। এক্ষেত্রে চাকরি প্রার্থীদের মেধা বা যোগ্যতার বিষয়টি আমলে নিচ্ছেন না নিয়োগ কর্তৃপক্ষ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিক্ষা বিভাগের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই এ ব্যাপারে হতাশা প্রকাশ করেছেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, উপজেলায় ১টি সরকারি কলেজ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বাদে মোট ৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে মাধ্যমিক ২১টি, নিম্ন মাধ্যমিক ৩টি, মাদ্রাসা ৯টি ও ৭টি ডিগ্রি কলেজ। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকারিভাবে সৃষ্ট পদে নিয়োগ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যেই উপজেলার ৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে অখ্যাত দৈনিক পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচারের পর ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রভাবশালী সদস্যরা প্রার্থীদের সঙ্গে দেন দরবার করে সর্বোচ্চ অর্থ দাতাকে চাকরি দিয়েছেন। নিয়ম রক্ষার স্বার্থে প্রার্থীদের পক্ষ থেকে ২-৩ জন করে আবেদনকারী ছিল।
জানা যায়, ১০ সেপ্টেম্বর তালসার কাজী লুৎফর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী-কাম হিসাব সহকারী কম্পিউটার ল্যাব অ্যাসিসট্যান্ট, আয়া, নৈশ প্রহরী ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে ৫ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়। গত ৩ এপ্রিল মোজাফ্ফর হোসেন মাধ্যমিক বিদ্যালয় অফিস সহকারী-কাম-হিসাব সহকারী, আয়া ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে ৩ জনকে নিয়োগ দেয়। গত জুনে জালালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক, আয়া, নৈশ প্রহরী ও নিরাপত্তা কর্মীসহ ৪ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। গত বছরের ২১ অক্টোবর পৌর এলাকার এনকেআর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক (অবৈতনিক), নিরাপত্তাকর্মী ও নৈশ প্রহরী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সূত্রের অভিযোগ পদভেদে এসব চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে নিয়োগ কর্তৃপক্ষ মাথাপিছু ৭-১০ লাখ টাকা হারে গ্রহণ করেছেন। অভিযোগে জানা যায়, এলাকার প্রভাবশালী এক শীর্ষ জনপ্রতিনিধির আস্থাভাজন ব্যক্তির মাধ্যমে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও সদস্যরা যোগাযোগ রক্ষা করে এ নিয়োগ দিয়েছেন। এভাবেই ৪টি বিদ্যালয়ে সর্বমোট ১৫ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আর চাকরিপ্রাপ্ত প্রার্থীদের কাছ থেকে নিয়োগ কমিটি কোটি টাকারও বেশি অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। বিষয়টি এখন এলাকার সাধারণ মানুষের মুখে মুখে। অন্যদিকে বাকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে মোজাফ্ফর হোসেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুর রহমান বলেন, ৩ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে, তবে তাদের কাছ থেকে কোনো টাকা নেয়া হয়নি। এনকেআর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহিনুর রহমান বলেন, আমরা ৩ জনকে নিয়োগ দিয়েছি, তবে কারো কাছ থেকে কোনো টাকা নেয়া হয়েছে কি-না তা আমার জানা নেই। তিনি কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি। বিদ্যালয়ের সভাপতি জাকারিয়া হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, প্রচলিত সিস্টেমেই নিয়োগ দেয়া হয়েছে। জালালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আহসানুজ্জামান বাদল বলেন, নিয়োগে আমরা কোনো টাকা-পয়সা নেয়নি। তবে শীর্ষ জনপ্রতিনিধির পরামর্শে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এদিকে তালসার কাজী লুৎফর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাসুম রেজা বলেন, আমরা নিয়োগে কোনো টাকা নেয়নি। বরং নিয়োগ বোর্ডের প্রতিনিধিদের স্কুল ফান্ড থেকে সম্মানী দেয়া হয়েছে। নিয়োগ কমিটির অন্যতম সদস্য ডিজির প্রতিনিধি ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রতন মিয়া বলেন, আমি একজন সদস্য হিসেবে নিয়োগ বোর্ডে অংশগ্রহণ করি। যদি কেউ গোপনে কারো সঙ্গে পয়সা লেনদেন করে থাকে সেটি আমার জানার কথা নয়। নিয়োগের তারিখ ও চাকরিপ্রাপ্তদের নাম জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেননি। তিনি বলেন, নিয়োগের কোনো তথ্য আমাদের দপ্তরে রাখা হয় না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়