জিএম কাদেরের দলীয় কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা

আগের সংবাদ

বিএনপি বাড়াবাড়ি করলে ফের জেলে পাঠানো হবে খালেদাকে

পরের সংবাদ

হাফসেঞ্চুরি থেকে চার উইকেট দূরে সাকিব

প্রকাশিত: নভেম্বর ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : অস্ট্রেলিয়ায় চলছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অষ্টম আসর। বিশ্বসেরার এই মঞ্চে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাকিব আল হাসান। এবারের আসরে অনবদ্য এক রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন এই টাইগার কাপ্তান। ক্রিকেটের ক্ষুদ্র সংস্করণের বিশ্বকাপের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক সাকিব। ৪৬ উইকেট নিয়ে সবার উপরে তিনি। এবারের আসরে আর মাত্র ৪ উইকেট নিতে পারলে ক্রিকেট ইতিহাসের একমাত্র বোলার হিসেবে তিনি ছুঁতে পারবেন বিশ্বকাপে ব্যক্তিগত ৫০ উইকেটের মাইলফলক।
ভারতের বিপক্ষে গতকালের ম্যাচে অনন্য এক রেকর্ডের মালিক হন বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। হয়েছেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভের প্রথম ম্যাচেই রেকর্ড গড়েছিলেন কিউই পেসার টিম সাউদি।
সেদিন সাকিবকে টপকে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির প্রথম স্থান নিয়েছিলেন। ১২৭ উইকেট নিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সাউদি বনে গিয়েছিলেন সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক। গতকাল অ্যাডিলেডে ভারতের বিপক্ষে দুই উইকেট সংগ্রহ করে যৌথভাবে সাউদির পাশে নাম লেখালেন সাকিব। নির্ধারিত ৪ ওভারে ৩৩ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।
গতকালের ম্যাচের আগে সাকিবের উইকেট সংখ্যা ছিল ১২৫। মারমুখী ভঙ্গিতে খেলতে থাকা ওপেনারে কেএল রাহুলকে ফিরিয়েছেন সাকিব। অর্ধশতক করার পরপরই রাহুল সাজঘরে ফেরেন। সূর্যকুমার যাদবকে আউট করে সাকিব নিজের আগের রেকর্ডের সঙ্গী হন। কিউই বোলার সাউদির সঙ্গে অবস্থান করছেন এখন।
সাকিবের পরের অবস্থানে রয়েছেন আফগান তারকা ক্রিকেটার রশিদ খান। এর পরের অবস্থানে রয়েছেন সাবেক লঙ্কান তারকা পেসার লাসিথ মালিঙ্গা। তালিকার পঞ্চম স্থানে রয়েছেন কিউই স্পিনার ইশ সোধি। গত বছর লাসিথ মালিঙ্গাকে টপকে এককভাবে টি-টোয়েন্টির সেরা উইকেট সংগ্রাহক হয়েছিলেন সাকিব। দীর্ঘ এক বছর পর সাকিবের সেই রেকর্ড নিজের করে নেন সাউদি, যাতে সাকিব আবারো ভাগ বসিয়েছেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে ব্যক্তিগত ৪১ উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপের এবারের আসর শুরু করেছিলেন সাকিব। এ পর্যন্ত তিনি মাঠে নামেন ৪ ম্যাচে, শিকার করেন ৫ উইকেট। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচে ৪ ওভার বল করে ৩২ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন সাকিব। সে ম্যাচে ৯ রানের জয় পায় লাল-সবুজের জার্সিধারীরা।
দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে ২ উইকেট শিকার করেন তিনি। সে ম্যাচ অবশ্য ১০৪ রানের বিশাল ব্যবধানে হারে তারা। তৃতীয় ম্যাচ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এ ম্যাচে ৪ ওভার বল করে ৩৪ দেন সাকিব, পাননি কোনো উইকেট। গতকাল ভারতের বিপক্ষে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে ৪ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন তিনি।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গত আসরে শ্রীলঙ্কার পাথুম নিশাঙ্কাকে ফিরিয়ে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক হন সাকিব। সেবার ৪০ উইকেট নিয়ে তিনি ছাড়িয়ে যান পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদিকে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এর আগে সর্বোচ্চ ৩৯ উইকেট শিকার করে শীর্ষে ছিলেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি। এর আগের ম্যাচে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে মাত্র ৯ রানে ৪ উইকেট শিকারের মধ্য দিয়ে আফ্রিদিকে স্পর্শ করেন সাকিব আল হাসান।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সপ্তম আসরের মূলপর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে লঙ্কান দুই তারকা ব্যাটসম্যান পাথুম নিশাঙ্কা ও আভিস্কা ফার্নান্দোকে আউট করেন সাকিব। এই দুই উইকেট শিকারের মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের রেকর্ড গড়েন তিনি।
সাকিবের দখলে রয়েছে টি-টোয়েন্টির অনন্য সব রেকর্ড। ত্রিদেশীয় সিরিজে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪৪ বলে ৭০ রানের ইনিংস খেলার পথে বাংলাদেশ অধিনায়ক টপকে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সর্বোচ্চ রানকে। এর আগে বাংলাদেশ দলের হয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের মালিক ছিলেন সাবেক অধিনায়ক রিয়াদ। তবে ক্রাইস্টচার্চে রিয়াদকে পেছনে ফেলে ছোট ফরম্যাটের এই ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের মালিক বনে যান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ৭০ রান করার ফলে টি-টোয়েন্টিতে এই মুহূর্তে দেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান, সর্বোচ্চ উইকেট এবং সর্বোচ্চ অর্ধশতকের একক মালিক সাকিব। বলা যায় টি-টোয়েন্টি বাংলাদেশের প্রায় সব রেকর্ডই এখন তার। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, সাকিব টি-টোয়েন্টিতে ম্যাচ খেলেছেন ১০৮টি, রান করেছেন ২২৩০, বল খেলেছেন ১৮২৮টি। স্ট্রাইকরেট ১২১.৯৯ এবং ব্যাটিং গড় ২৩.৪৭। দলের হয়ে সর্বোচ্চ টি-টোয়েন্টিতে ১২টি অর্ধশতক এই অলরাউন্ডারের। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি সাকিব উইকেট নিয়েছেন ১২৭টি, ইকোনমি ৬.৮২ বল করে।
বর্তমান সময়ের অন্যতম তারকা খেলোয়াড় সাকিব। বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাস এবং পর্যালোচনা পর্বকে অনায়াসে ‘সাকিবপূর্ব’ এবং ‘সাকিবীয়’ এই দুইভাগে ভাগ করা যায়।
সাকিব খেললে তো বটেই এমনকি নিষিদ্ধ থাকলেই শিরোনাম হন খবরের। দেশের ক্রিকেটে ব্যক্তিগত অর্জন, সাফল্য, স্বীকৃতি, মর্যাদা রেখাচিত্র আঁকতে কিংবা বিতর্ক, নিষেধাজ্ঞা, শাস্তি কাটিয়ে প্রত্যাবর্তনের ইতিহাসের বড় অংশজুড়েই থাকবে সাকিব আল হাসানের নাম।
সাকিবের অতিমানবীয় পারফরমস্যান্সে ভর করে জিতে যায় দেশ। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং এই তিন ক্যাটাগরিতেই তিনি অনবদ্য। যার প্রমাণ যায় আইসিসির প্রকাশিত র‌্যাঙ্কিয়ে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অলরাউন্ডার মধ্যে শীর্ষে আছেন সাকিব। তার র‌্যাটিং পয়েন্ট ২৫৫।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়