জিএম কাদেরের দলীয় কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা

আগের সংবাদ

বিএনপি বাড়াবাড়ি করলে ফের জেলে পাঠানো হবে খালেদাকে

পরের সংবাদ

ভণ্ড কবিরাজ গ্রেপ্তার : তাবিজ দিয়ে হাতিয়ে নেয়া হতো টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার

প্রকাশিত: নভেম্বর ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : যাত্রীবাহী বাসে তাবিজ বিক্রি ও বশীভূতকরণের বই বিক্রির কাজ করলেও তা বাদ দিয়ে এক সময় কথিত কবিরাজি চিকিৎসার নামে প্রতারণা শুরু করেন ওয়াস কুরুনী (২৪)। প্রচারণার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে বেছে নেন তিনি। ‘কবিরাজ আলী আশরাফ’, ‘তান্ত্রিক কবিরাজ’ ও ‘হুমায়ুন আহমেদ’ ছাড়াও নামে-বেনামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রয়েছে তার। এই অ্যাকাউন্টগুলোতে মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপনের চিরাচরিত সমস্যা যেমন- উঠতি বয়সের ছেলে মেয়েদের গোপন রোগের চিকিৎসা, দাম্পত্য জীবনের সমস্যা, বিয়ে না হওয়া, প্রেমে ব্যর্থতা, চাকরি না পাওয়া, জমি-জমার ঝামেলা, কাউকে বশ করার প্রবণতা, বাণ মারার শক্তিশালী মন্ত্র, মামলায় জয়ী হওয়ার মন্ত্র, বিয়ের প্রস্তাব আসার তাবিজ, প্রেম সফল করার তাবিজ, বিয়ে বন্ধ করার তাবিজ, মানুষকে পাগল করার তাবিজ ইত্যাদি শিরোনামে চটকদার পোস্ট করা হতো। এ পোস্টগুলো বারবার শেয়ারের জন্য ২০-২২ জন নির্বাচিত এজেন্টও রয়েছে তার। শুধু পোস্ট শেয়ারেই সীমাবদ্ধ না থেকে আগ্রহীদের কবিরাজের সঙ্গে যোগাযোগের ব্যবস্থাও করে দিত এজেন্টরা। এখন পর্যন্ত প্রায় অর্ধ শতাধিক ব্যক্তি তার প্রতারণার শিকার হয়ে সর্বস্ব খুইয়েছেন বলে জানা গেছে। কেউ প্রতিবাদ করলে দেয়া হতো দুষ্ট জিন দিয়ে ক্ষতির হুমকিও।
ভণ্ড কবিরাজ ওয়াস কুরুনীকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র‌্যাব-৩ এর কমান্ডিং অফিসার (সিও) লে. কর্ণেল আরিফ মহিউদ্দিন। গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে গতকাল বুধবার সকালে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সিও লে. কর্র্নেল আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, ওয়াস কুরুনী আগ্রহী নারী ও পুরুষ ভুক্তভোগীদের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে চ্যাটিং ও ভয়েস কলের মাধ্যমে সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং তাদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেয়। প্রাথমিকভাবে জিন চালান দেয়ার মাধ্যমে ওষুধ দেয়া ও গায়েবি চিকিৎসা শুরু করার জন্য দুর্লভ কিছু উপাদান যেমন, কচি কবুতরের রক্ত, ইঁদুরের মাংস, বানরের লোম, বাদুরের পা, গভীর রাতে শ্মশানঘাট হতে মাটির কলসিতে পানি আনাসহ দুষ্প্রাপ্য জিনিস সংগ্রহ করতে বলত। তখন ভুক্তভোগীরা জানায় এসব জিনিস তাদের পক্ষে সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। তখন এসব জিনিস সংগ্রহ করার বদলে মোটা অঙ্কের টাকা নেন তিনি। কেউ তার প্রতি অবিশ্বাস বা সন্দেহ প্রকাশ করলে দুষ্ট জিন দিয়ে নিয়মিতভাবে তাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে বলে হুমকি দিত। এভাবে ভুক্তভোগীদের গায়েবি ভয় ভীতি দেখিয়েও ধাপে ধাপে তাদের কাছ বিকাশের মাধ্যমে টাকা নিত। গ্রেপ্তার ব্যক্তি কখনো কোনো ভুক্তভোগীর সঙ্গে দেখা করতে চাইত না। অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার নেয়ার পর ভুক্তভোগীদের ফোন নম্বর ও তার এজেন্টরা মোবাইল থেকে ব্লক করে দিত, যাতে করে ভুক্তভোগীরা কোনোভাবেই তাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে না পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়