জিএম কাদেরের দলীয় কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা

আগের সংবাদ

বিএনপি বাড়াবাড়ি করলে ফের জেলে পাঠানো হবে খালেদাকে

পরের সংবাদ

টিকেট কালোবাজারির অভিযোগ : ময়মনসিংহ রেলস্টেশনে জিম্মি যাত্রীরা

প্রকাশিত: নভেম্বর ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রুহুল আমীন খান, ময়মনসিংহ থেকে : ময়মনসিংহ রেলস্টেশনে টিকেট কালোবাজারিদের দৌরাত্ম্য লাগামহীনভাবে বেড়ে গেছে। এতে জিম্মি হয়ে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। অভিযোগ উঠেছে, খোদ রেলস্টেশন কর্মচারীরাই এই টিকেট কালোবাজারিতে জড়িত। এই সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে অবৈধ টিকেট বাণিজ্য করলেও এনিয়ে স্টেশন কর্মকর্তার কোনো ভ্রƒক্ষেপ নেই- এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী যাত্রীদের। জানতে চাইলে টিকেট কালোবাজারির সত্যতা স্বীকার করেন খোদ স্টেশন সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম। বলেন, টিকেট কালোবাজারি আছে, এটা থাকবেই। তবে আমি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। কিন্তু অগোচরে হলে আমি কী করব- এই প্রশ্ন রাখেন এই কর্মকর্তা।
তবে যাত্রীরা চাইলে কালোবাজারি বন্ধ হওয়া সম্ভব দাবি করে এই কর্মকর্তা আরো বলেন, স্টেশনে জিআরপি পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী আছে, তাদের দায়িত্ব এসব দেখা। তবুও বিভিন্ন পথে টিকেট কালোবাজারে যাচ্ছে। কিছুদিন আগেও রেজিস্ট্রি করা বীরমুক্তিযোদ্ধার টিকেট কালোবাজারিদের হাতে ধরা পড়েছে। কিন্তু সব দোষ হয় আমার।
তিনি আরো দাবি করেন, যতদিন পর্যন্ত টিকেটের চাহিদা এবং সরবরাহে সমন্বয় না হবে, ততদিন টিকেট কালোবাজারি থাকবেই। কারণ ময়মনসিংহ স্টেশনে প্রতিদিন যাত্রী হয় কমপক্ষে ১ হাজার জন। এর বিপরীতে সিটসহ টিকেট পায় মাত্র ২৩৭ জন। এই অবস্থায় কী আর করার আছে?
তবে নিয়মিত এই রেলপথে চলাচল করা একাধিক কর্মজীবী যাত্রীর অভিযোগ, ময়মনসিংহ রেলস্টেশনের খোদ টিকেট বুকিং ও হেড বুকিং সহকারীরাই এই কালোবাজারির মূলহোতা। তারাই এই কালোবাজারি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে বাড়তি মূল্যে টিকেট বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে রয়েছেন- হেড বুকিং সহকারী হামিদুর রহমান, রেলওয়ে সহজ ডট কমের কর্মচারী জাকির, বুকিং সহকারী রফিক, রিমু, জুলফিকার ও সোহেল। তারা বিভিন্ন কায়দায় স্টেশন কাউন্টার থেকে এসব টিকেট কালোবাজারিদের হাতে পৌঁছে দেয়।
এরপর স্টেশন এলাকার চিহ্নিত কালোবাজারি তপন সাহা, মিনার, আ. ছাত্তার, জাবেদ, মুহিত, ইজ্জত আলী, আবু তাহের এবং সংশ্লিষ্টরা মিলে এই টিকেট অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি করে থাকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্যমতে, ময়মনসিংহ জংশন রেলস্টেশন হয়ে প্রতিদিন ৪২টি ট্রেন চলাচল করে থাকে। এর মধ্যে আন্তঃনগর ট্রেন ৭টি- তিস্তা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, অগ্নিবীণা, হাওর, মোহনগঞ্জ ও বিজয় এক্সপ্রেস।
স্টেশন কর্তৃপক্ষ আরো জানায়, এসব ট্রেনে প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার যাত্রী চলাচল করে থাকে। এর বিপরীতে সিটসহ টিকেট বরাদ্দ রয়েছে ২৩৭টি, আর সিট ছাড়া টিকেট বরাদ্দ আছে প্রায় ৭ শত। আন্তঃনগর ৭টি ট্রেনে প্রতিদিন ২৮টি টিকেট যুদ্ধাহত বীরমুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য বরাদ্দ। কিন্তু সংরক্ষিত এই ২৮টি টিকেটের একটিও পান না সংশ্লিষ্টরা। প্রতিদিন এসব টিকেট বিক্রি হয় কালোবাজারে। নগরীর বাকৃবি এলাকার বাসিন্দা প্রয়াত বীরমুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. আল আমিন মণ্ডল বলেন, কয়েকবার আমি ট্রেনে যাতায়াতের জন্য টিকেট কাটতে গিয়েছিলাম, কিন্তু কোটা থাকলেও আমি টিকেট পাইনি। তার অভিযোগ, এসব টিকেট প্রতিদিন কালোবাজারে বিক্রি হয়ে যায়। তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও টিকেট বুকিং হেড ও সহকারীদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়