জিএম কাদেরের দলীয় কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা

আগের সংবাদ

বিএনপি বাড়াবাড়ি করলে ফের জেলে পাঠানো হবে খালেদাকে

পরের সংবাদ

কর্মকর্তাদের প্রধানমন্ত্রী : নিজেদের জনগণের খাদেম ভাবতে হবে

প্রকাশিত: নভেম্বর ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭২ সালে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ করে দেয়া একটি ভাষণকে উদ্ধৃত করে সরকারি কর্মচারীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সরকারি কর্মচারী ভাইয়েরা, আপনাদের জনগণের সেবায় নিজেদের উৎসর্গ করতে হবে। জাতীয় স্বার্থকে সব কিছুর ঊর্ধ্বে স্থান দিতে হবে। এখন থেকে অতীতের আমলাতান্ত্রিক মনোভাব পরিবর্তন করে নিজেদের জনগণের খাদেম বলে বিবেচনা করতে হবে’। তিনি বলেন, জনগণের সেবক হিসেবেই নিজেদের বলতে হবে। আমি এটাই চাই যে, জনগণের সেবা করে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।
বিসিএস প্রশাসন একাডেমিতে ১২৪, ১২৫ ও ১২৬তম আইন ও প্রশাসন কোর্সগুলোর সমাপনী ও প্রশিক্ষণার্থীদের সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে গতকাল বুধবার তিনি এসব কথা বলেন। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন বিভাগের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম।
প্রশাসনের নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাঙালি সব থেকে মেধাবী। পাকিস্তান আমলে তারা একটু সুযোগও পেত না। একজন বাঙালিও কোনোদিন সেক্রেটারি হওয়ার সুযোগ পায়নি। অথচ জ্ঞানে বাঙালিদের সবচেয়ে বেশি উৎকর্ষ ছিল। তারপরও তারা স্থান পায়নি। একথা মনে রাখতে হবে। একজন সচিব বাঙালি ছিল না। কোনো জেনারেল, মেজর জেনারেল, ব্রিগেডিয়ার- কেউই বাঙালি ছিল না। একজন মাত্র কর্নেল হতে পেরেছিল। তার নিচে সব পদ। সব পদ তারাই দখল করেছিল। আজ আমরা সবকিছুই হতে পারছি সেটা দেশ স্বাধীন হয়েছে বলেই। একথা মাথায় রেখে সবাইকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যবদলে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে আমরা রূপকল্প-২০২১ ঘোষণা দিয়েছিলাম। তারই পরিপ্রেক্ষিতে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা করে আমরা আমাদের নির্দিষ্ট কাজগুলো করি। পাশাপাশি জাতিসংঘ ঘোষিত এমডিজি (সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) সফলভাবে বাস্তবায়ন করি। এখন এসডিজি-২০৩০ (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। এজন্য সমন্বয় করে সব পরিকল্পনা আমরা নিচ্ছি।
নিজেদের জনগণের খাদেম বলে বিবেচনা করতে হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিকল্পনা নেয়ার ক্ষেত্রে আমাদের নীতিমালা হচ্ছে, যে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করলে দ্রুত ফল আসবে, মানুষের কল্যাণে কাজে লাগবে সেটিই নেয়া হবে। একটা বিরাট অঙ্কের টাকা পেলাম আর একটা পরিকল্পনা নিলাম, সেটা আমরা নেব না। বৈশ্বিক পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রতিটি দেশে জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে। এ কারণে জ্বালানির দাম বাড়ায় অস্থিরতা বেড়েছে। সেজন্য এই মুহূর্তে করণীয় কী, তা আমাদের ঠিক করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙালিরা জুডিশিয়াল সার্ভিসে কখনো আবেদন করতে পারত না পাকিস্তান আমলে। জাতির পিতা সেই পথ খুলে দেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পরপরই পাকিস্তানি আমলের পদ্ধতি পরিবর্তন করে এডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস রি-অরগানাইজেশন কমিটি গঠন করে দিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্রের উপযোগী প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।
প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি, যারা এই নবীন অফিসার, তাদের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। একজন অফিসার একটা এলাকায় যখন কাজ করেন, ওই এলাকার সার্বিক উন্নয়নে বিশাল ভূমিকা রাখার একটা সুযোগ আছে। অনেকে এসে বলবেন, এটা-ওটা চাই, এখানে এটা করতে হবে, ওটা করতে হবে। ওভাবে হবে না। সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হবে। তাহলে আমরা সঠিকভাবে উন্নতি করতে পারব। আমি মনে করি, আমাদের নবীন অফিসাররা সেভাবে ব্যবস্থা নেবেন। আপনাদের সামনের দিনগুলো আরো সম্ভাবনাময় হোক, সুন্দর হোক, উজ্জ্বল হোক, সফল হোক, সেই কামনা করি।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় ১২৪, ১২৫ ও ১২৬তম আইন ও প্রশাসন কোর্স সুচারুরূপে সম্পন্ন করার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, বিসিএস প্রশাসন একাডেমিসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়োজিত সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়