প্রকাশিত: নভেম্বর ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
কাগজ প্রতিবেদক : কোনো কাজই ছোট নয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যে কোনো কাজ করে নিজের অর্থ নিজে উপার্জন করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোটা অত্যন্ত গর্বের বিষয়। কারণ কোনো কাজকে আমরা ছোট করে দেখি না। কোনো কাজকে আমরা ছোট করে দেখব না। গতকাল মঙ্গলবার সকালে ‘জাতীয় যুব দিবস-২০২২’ উদ্বোধন এবং ‘জাতীয় যুব পুরস্কার-২০২২’ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতি বছর ১ নভেম্বর জাতীয় যুব দিবস পালিত হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য- ‘প্রশিক্ষিত যুব উন্নত দেশ : বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, সচিব মেসবাহ উদ্দিন, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আজহারুল ইসলাম খান। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ‘জাতীয় যুব পুরস্কার-২০২২’ বিজয়ী ২১ জনের হাতে পুরস্কার তুলে দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী। পুরস্কার হিসেবে একটি ক্রেস্ট, সনদ এবং নির্দিষ্ট মূল্যমানের চেক দেয়া হয়। পুরস্কার বিজয়ীদের পক্ষে মো. জাকির হোসেন এবং রীতা জেসমিন অনুষ্ঠানে অনুভূতি ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় যুব দিবসের একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি এবং এর থিমসং পরিবেশিত হয়।
প্রতি জেলা-উপজেলায় যুব কাউন্সিল গঠন করা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর মাধ্যমে যুবকরা যেন কাজ করতে পারে। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে, সেই উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। কারণ, একটি প্রশিক্ষিত যুবশ্রেণি গড়ে তোলা একান্তভাবে অপরিহার্য। দেশে এখন কত প্রশিক্ষিত যুবক রয়েছেন, তারও একটি ডাটাবেজ তৈরির প্রক্রিয়া চলছে।
তরুণদের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী আসন্ন বৈশ্বিক দুর্ভিক্ষ ও খাদ্য সংকট মোকাবিলায় খাদ্য উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে হবে।
বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থাও বলছে, বিশ্বে আগামীতে খাদ্যাভাব ও দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে। সে অবস্থায় বাংলাদেশকে এর থেকে মুক্ত রাখতে হলে আমাদের প্রতি ইঞ্চি জমি যেমন আবাদ করতে হবে তেমনি খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে। সেক্ষেত্রে আমি আমাদের যুব সমাজকে আহ্বান করব, যেন আরো উদ্যোগ নেন। যার যার এলাকাভিত্তিক কাজ করতে পারেন। কেননা, খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাত করতে পারলে আমরা যেমন নিজেদের চাহিদা মেটাতে পারব তেমনি অনেক দুর্ভিক্ষপীড়িত দেশকে সহায়তা করতে পারব। আমাদের মাটি ঊর্বর। আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে আমাদের জনশক্তিকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে।
যুবকদের সামাজিক মর্যাদা বাড়ানোর দিকেই সরকারের দৃষ্টি রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের মাঝে নেতৃত্বের যে গুণাবলি ও প্রতিভা আছে তা বিকশিত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তাদের কর্মক্ষমতা যেন দেশের কাজে লাগে সেজন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
প্রশিক্ষিত যুবশ্রেণির ডাটাবেজ তৈরির প্রক্রিয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা হলে বোঝা যাবে কারা কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছে আর কারা এর বাইরে রয়েছে। তাদেরও কর্মসংস্থানের আওতায় আনার প্রচেষ্টা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি যুব সমাজ। আর আজকে পৃথিবীর অনেক দেশই বয়োবৃদ্ধের দেশ হয়ে গেছে। এখনও বাংলাদেশের একটা বিরাট কর্মক্ষম যুবসমাজ রয়েছে, যেটা আমাদের কাজে লাগাতে হবে। আমরা যুবসমাজকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির হালনাগাদ জ্ঞান দিয়ে গড়ে তুলতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি, যাতে তারা পরিবর্তনশীল বিশ্বে প্রতিযোগিতার যোগ্য এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে সক্ষম হয়।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী ৬৪টি জেলায় ৬৪ হাজার যুবককে প্রশিক্ষণ দেয়া এবং বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপনে ঋণ দেয়ার জন্য যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এই উদ্যোগটি সময়োপযোগী। বর্তমান বৈশ্বিক অবস্থা বিবেচনা করে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বাড়ছে। আমরা দেশকে বাঁচাতে পারব, যদি আমরা বায়োগ্যাস প্লান্ট এবং সৌরশক্তি স্থাপন করতে পারি।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।