স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের সাবেক এমডি কারাগারে

আগের সংবাদ

এসডিজি অর্জনে তিন চ্যালেঞ্জ : চারটি অভীষ্ট সঠিক পথে, ছয়টিতে উন্নতি, তিনটি অপরিবর্তিত, দুটির মূল্যায়নে উপাত্তে ঘাটতি

পরের সংবাদ

সুখস্মৃতি নিয়ে অ্যাডিলেডে টাইগাররা

প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে নিজেদের প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে ৯ রানে হারিয়ে শুভ সূচনা করে বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে ঘটে ছন্দপতন। এ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১০৪ রানের বিশাল হার দেখে টাইগাররা। তৃতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ায় লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। এ ম্যাচে শেষ ওভারের নাটকীয়তায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩ রানের জয় পায়। জয়ের সুখস্মৃতি নিয়ে গতকাল অ্যাডিলেডে পৌঁছায় বাংলাদেশ দল। আগামীকাল চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী ভারতের মোকাবিলা করবে সাকিব বাহিনী।
গতকাল বিকালে ব্রিসবেন থেকে অ্যাডিলেডের বিমানে ওঠেন সাকিব আল হাসানরা। বিমান পথে দূরত্ব প্রায় ২ ঘণ্টা ৪০ মিনিট। সন্ধ্যা নামতেই গ্রুপ পর্বের শেষ দুই ম্যাচের ভেন্যু শহরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ দল। আগের দিনের ম্যাচ আর ভ্রমণ- সব মিলিয়ে একটা দিন বিশ্রামেই থাকবে টাইগাররা। বাংলাদেশ দলের মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ ইমাম জানিয়েছেন, আজ অনুশীলন নেই বাংলাদেশ দলের। এর আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামার আগের দিনও বিশ্রামে কাটিয়েছিলেন সাকিবরা। সেদিন শুধু ঐচ্ছিক অনুশীলনে দেখা গিয়েছিল নুরুল হাসান সোহান ও ইয়াসির রাব্বিকে।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত ১১ ম্যাচে মুখোমুখি হয় দুদল। এর মধ্যে ভারতের জয়ের আধিক্যই বেশি। রোহিত শর্মা বাহিনীর ১০ জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশ জয় পায় মাত্র ১ ম্যাচে। গ্রুপের তিনটি করে ম্যাচ শেষে দুই দলের পয়েন্ট সমান। তবে সবশেষ ম্যাচে তাদের অভিজ্ঞতা ভিন্ন। নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে শুরুর পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বিধ্বস্ত হয় বাংলাদেশ। তবে জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে সাকিব আল হাসানের দল। অন্যদিকে পাকিস্তানের পর নেদারল্যান্ডসকেও হারিয়ে উড়ছিল ভারত। তাদের জয়যাত্রা থামিয়ে দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এ অবস্থায় ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতলে বাংলাদেশ সরাসরি চলে যাবে সেমিতে। কিন্তু একটা ম্যাচ হারলেই সমীকরণটা আরো কঠিন হয়ে যাবে। কারণ ভারত ৪ পয়েন্ট পেলেও রান রেটে বেশ মজবুত, ০.৮৪৪। তাছাড়া দলটি শেষ দুই ম্যাচে লড়বে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের সঙ্গে। এখানে একটা জয় তাদের এগিয়ে দেবে অনেকটা। তবে দুটি ম্যাচ জিতলে তারা সরাসরিই উঠে যাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। এদিকে ভারত যদি বাংলাদেশকে হারায় আর জিম্বাবুয়ের কাছে হারে, তখন দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ের অর্জন হবে ৭ পয়েন্ট। আবার ভারত যদি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয় পায় আর বাংলাদেশের কাছে হারে, তখন শেষ চারে উঠে যাবে বাংলাদেশ আর দক্ষিণ আফ্রিকা।
সব মিলিয়ে সেমির পথে লড়াইয়ের সমীকরণ অনেকটাই কঠিন বাংলাদেশের জন্য। এদিকে আবহাওয়ার খবর বলছে, অ্যাডিলেডে আগামীকাল বাংলাদেশ ও ভারতের ম্যাচের দিন নেমে আসতে পারে বারিধারা। ৭০ শতাংশ সম্ভাবনা বৃষ্টির। আর সেটা হলে ভারতের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে স্বস্তি পেতে পারেন সাকিব আল হাসানরা।
এই গ্রুপে সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। পার্থে গত রবিবার ভারতকে হারানোর পর তিন ম্যাচে তাদের রয়েছে ৫ পয়েন্ট। তারা শেষ দুই ম্যাচ খেলবে পাকিস্তান ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। এর একটিতে হারলেও সমস্যা নেই তাদের। ভালো নেট রান রেটের কারণে সেমিফাইনালের টিকেট পেয়ে যাবে তারা।
গত কয়েক বছরে বহুদলীয় আসরে শ্বাসরুদ্ধকর সব লড়াই উপহার দিয়েছে বাংলাদেশ ও ভারত। এবার সেমিফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখার লড়াই হওয়ায় আরেকটি জমজমাট ম্যাচের আশা জাগছে। এই দুই দলের মধ্যে প্রতিদ্ব›িদ্বতা নতুন উচ্চতায় পৌঁছায় ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর। অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত সেই বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ১০৯ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। তবে ওই ম্যাচে আম্পায়ারদের কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্ত পরবর্তীতে অনেক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। তারপর প্রায় ৭ বছর পেরিয়ে গেলেও ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে বাংলাদেশের দর্শকদের মধ্যে থাকে অন্যরকম উত্তেজনা। মাঠের লড়াইয়েও দেখা যায় বাড়তি ঝাঁজ। সেই বিশ্বকাপের পর ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। সেই সাফল্য আরো তাতিয়ে দেয় দুই দলের লড়াই।
সব মিলিয়ে গত ছয় বছরে বহুদলীয় টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ ও ভারতের মুখোমুখি ছয় ম্যাচের চারটিই ছিল তুমুল উত্তেজনাপূর্ণ। তবে প্রতিবার শেষ হাসি হেসেছে ভারত। অতীত পরিসংখ্যান ভারতের পক্ষে থাকলেও বিশ্বকাপে দুই দলের অবস্থা বিবেচনায় বাংলাদেশের পিছিয়ে থাকার কথা নয়। এদিকে ছন্দে ফিরেছেন বাংলাদেশের ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত। আগের ম্যাচে তিনি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫৫ বলে ৭১ রানের ইনিংস খেলেন। বল হাতে তাসকিনের পারফরম্যান্স বাংলাদেশকে আশা জাগাচ্ছে। বাংলাদেশের জয় পাওয়া দুই ম্যাচের দুইটিতেই ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন তিনি।
এদিকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ বলে পাওয়া জয়ের আত্মবিশ্বাস ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ। ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে নাজমুল হোসেন শান্ত বলেন, এখনই শেষ চারের কথা ভাবছেন না তারা, ‘ম্যাচ জিতলে তো আত্মবিশ্বাস বাড়েই। দলের পরিবেশও আগে থেকেই ভালো। (সেমিফাইনাল নিয়ে) আসলে চিন্তা করছি না। আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ যেতে চাই। ওইটাই চিন্তা আছে যে পরের ম্যাচ আমরা কতটা ভালো খেলতে পারি।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়