স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের সাবেক এমডি কারাগারে

আগের সংবাদ

এসডিজি অর্জনে তিন চ্যালেঞ্জ : চারটি অভীষ্ট সঠিক পথে, ছয়টিতে উন্নতি, তিনটি অপরিবর্তিত, দুটির মূল্যায়নে উপাত্তে ঘাটতি

পরের সংবাদ

মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত : সরকারি অফিস এবার ৯টা-৪টা

প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : অফিসের সময়সূচিতে ফের পরিবর্তন এনেছে সরকার। দুই মাস ১০ দিনের মাথায় মন্ত্রিসভার বৈঠকে গতকাল সোমবার এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত অফিসের সময় একঘণ্টা পিছিয়ে সকাল ৯টা থেকে ৪টা পর্যন্ত করা হয়েছে। এখন যা সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত। বেসরকারি অফিস, ব্যাংক-বিমা ও আদালতের সময়সূচি তারা নিজেরা নির্ধারণ করবে। আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই বৈঠকেই আগামী বছরে ২২ দিন ছুটির তালিকাও অনুমোদন হয়েছে। এতে ১৪ দিন সাধারণ ছুটি, বাকি ৮ দিন নির্বাহী আদেশে ছুটি। তবে ৮ দিন শুক্র ও শনিবার থাকায় কর্মজীবীরা জাঁকিয়ে পাওনা ছুটি উপভোগ করতে পারবেন না।
সচিবালয়ে বৈঠকের বিস্তারিত সাংবাদিকদের ব্রিফ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, শীত যেহেতু চলে আসছে ১৫ নভেম্বর থেকে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের জন্য অফিসের টাইম ৮-৩টার জায়গায় ৯-৪টা করে দেয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক বা স্কুল-কলেজসংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন সেভাবেই হবে। বিদ্যুতের জন্য সময়সূচি এক ঘণ্টা কমিয়ে দেয়া হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, এখনো সেটাই আছে। এখন এটা ৯-৪টা করে দেয়া হলো। কারণ সকাল বেলায় ৮টার সময় শীতকালে অফিসে আসতে অসুবিধা হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, গত ২২ আগস্ট জ্বালানি সাশ্রয়ে অফিসের কর্মঘণ্টা কমিয়ে সময়সূচিতে বড় ধরনের পরিবর্তন করেছিল সরকার। সে সময় ঘোষণা দেয়া হয়, সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত অফিস সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত চলবে। ব্যাংক খোলা থাকবে সকাল ৯টা থেকে ৪টা পর্যন্ত। ব্যাংকের সময় পরে ৩টা পর্যন্ত করা হয়। এছাড়া স্কুল ও কলেজ সপ্তাহে দুইদিন বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়। সরকারের তরফ থেকে তখন জানানো হয়েছিল সারাদেশে আমন উৎপাদনে যাতে নিরবচ্ছিন্নভাবে সেচ দেয়া যায়, সেজন্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মাধ্যমে মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সময়সূচির ব্যাপারে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানানো হয়েছিল। এছাড়া নতুন সময়সূচি ঢাকার যানজট কমিয়ে আনবে বলেও বলা হয়েছিল। সিদ্ধান্তটি কার্যকর হওয়ার পর প্রথম কয়েকদিন ব্যাপক বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছিল। বিশেষত, ঢাকার সড়কে এবং ব্যাংকগুলোতে কাজের সময় কমে যাওয়ার কারণে। অনেকেই মনে করেন, অফিস এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একই সময়সূচি থাকার কারণে বড় শহরগুলোতে ভোরবেলায় অসহনীয় যানজট তৈরি হচ্ছিল। এখন নতুন সময়সূচি চালু হলে অফিস এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শুরুর সময়টা আর একই রকম থাকছে না।
এদিকে সরকারের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নানা কারণ দেখিয়ে বারবার অফিস সময় বদল করা হয়েছে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে জ¦ালানি সংকটের কারণেই অফিস সময় বদল করেছিল। আগে ৯টা থেকে ৫টা অফিস থাকলেও সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছিল শুক্রবার। ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে সাপ্তাহিক ছুটি দুদিন শুক্র ও শনিবার করা হয়। এত বছর পর অফিস সময় এগিয়ে আনা হলো সেই জ্বালানি সংকটের কারণেই। ১৯৭৭ থেকে ’৮২ সাল পর্যন্ত অফিস সময়সূচি ছিল ১০টা থেকে ৫টা। ওই সময় সাপ্তাহিক ছুটি ছিল দেড় দিন। শনিবার অর্ধদিবস এবং রবিবার পূর্ণদিবস ছুটি। ১৯৮২ সালে এরশাদ সরকার সাপ্তাহিক ছুটি নির্ধারণ করে শুক্র ও শনিবার। এরশাদ এ ছুটি নির্ধারণে ধর্মীয় অনুভূতি কাজে লাগিয়েছিলেন। ওই সময় সকাল সাড়ে ৭টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত অফিস ছিল। ১৯৮৩ সালে দেশ গঠনে বেশি সময় কাজ করার কথা বলে শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি বাদ দেয়া হয়। এরপর থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত সাপ্তাহিক ছুটি একদিনই ছিল। মাঝে বৃহস্পতিবার হাফ হলিডেও ছিল। এক সময় সচিবালয়ের অফিস এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের অফিস সময়সূচিতেও পার্থক্য ছিল। সচিবালয়ের অফিস ৮টায় শুরু হলেও মাঠপ্রশাসনের অফিস শুরু হতো ১০টায়। ১৯৯৬ সাল থেকেই কেন্দ্রীয় প্রশাসন এবং মাঠপ্রশাসনের অফিস সময় এক করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়