স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের সাবেক এমডি কারাগারে

আগের সংবাদ

এসডিজি অর্জনে তিন চ্যালেঞ্জ : চারটি অভীষ্ট সঠিক পথে, ছয়টিতে উন্নতি, তিনটি অপরিবর্তিত, দুটির মূল্যায়নে উপাত্তে ঘাটতি

পরের সংবাদ

টেড কেনেডি জুনিয়র : যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক ঢাবির বটগাছটির মতো

প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঢাবি প্রতিনিধি : যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলা ভবনের সামনের বটগাছটির মতো- এমন মন্তব্য করেছেন প্রয়াত মার্কিন সিনেটর এডওয়ার্ড এম কেনেডির পুত্র টেড কেনেডি জুনিয়র। গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তির উপর এক স্মারক বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি।
টেড কেনেডি জুনিয়র বলেন, আমি এইমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলার বটগাছটি পরিদর্শন করেছি, যেটি আমার বাবা ১৯৭২ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের প্রতীক হিসাবে রোপণ করেছিলেন। গত ৫০ বছর ধরে এই গাছটি যেমন বেড়ে উঠেছে তেমনি বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কও বেড়ে চলেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে তিনি আরো বলেন, আমার বাবা যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের সম্পর্কের ও গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারের প্রতীক হিসেবে সে সময় বটগাছটি রোপণ করেছিলেন। পাকিস্তানিরা ওই জায়গায় থাকা বটগাছটি উপড়ে ফেলে দিয়েছিল কারণ সেখানে শিক্ষার্থীরা একত্রিত হতো ও আন্দোলন সংগ্রাম শুরু করত। বাবা গাছটি রোপণ করেছিলেন যাতে শিক্ষার্থীরা আবার সেখানে জড়ো হয়ে রাজনৈতিক আলোচনা করতে পারে।
কেনেডি জুনিয়র বলেন, আমার বাবা আমাদের বড় হওয়ার সময় এই মহান জাতির গল্প বলেছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়া লাখ লাখ বাঙালির কথা, নিজ বাচ্চার মৃতদেহ কোলে রাখা মায়েদের কথা, ১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর শিক্ষক ও ছাত্রকে এলোপাতাড়ি গুলি করার কথা বলেছিলেন।
তিনি বলেন, আমার বাবা ১৯৭২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারিতে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন তখন এখানকার শিক্ষার্থীরা তাকে অভ্যর্থনা জানিয়েছিল। সে সময় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দিলেও যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল।
বক্তব্যের শেষে টেড কেনেডি জুনিয়র যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরো মজবুত হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং এই আয়োজনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
এ সময় তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারকে ১৯৭১ এ সিনেটর এডওয়ার্ড এম কেনেডির করা ‘ক্রাইসিস ইন সাউথ এশিয়া’ শিরোনামের প্রতিবেদনের মূল কপি উপহার দেন।
অনুষ্ঠানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের নিক্সন প্রশাসন মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিলেও যুক্তরাষ্ট্রের অনেক জনগণ, কনস্যুলেট ও সিনেটররা সে সময়

পাকিস্তানিদের সাহায্য করার জন্য মার্কিন প্রশাসনের বিরোধিতা করেছিল। সিনেটর এডওয়ার্ড এম কেনেডিও তাদের মধ্যে একজন ছিলেন যিনি নিক্সন প্রশাসনের সমালোচনা করেছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান পিতার মূল্যবোধ সমুন্নত রাখার জন্য টেড কেনেডি জুনিয়রকে ধন্যবাদ জানান। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে মার্কিন সিনেটর এডওয়ার্ড এম কেনেডির অসামান্য অবদানের কথা স্মরণ করে উপাচার্য বলেন, সে সময় বাংলাদেশের পক্ষে তিনি আন্তর্জাতিক জনমত গড়ে তুলেছিলেন। এ সময় এম কেনেডির বাংলাদেশ সফরের মাধ্যমে দুই দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো জোরদার হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এর আগে টেড কেনেডি জুনিয়র ও তার পরিবারের সদস্যরা রিকশায় করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও কলা ভবনের সামনের সেই ঐতিহাসিক বটগাছটি সপরিবারে পরিদর্শন করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়