পাইলিংয়ের সময় শ্রমিক নিহত

আগের সংবাদ

প্রাথমিক শিক্ষায় তুঘলকি কাণ্ড : পাশাপাশি দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে একটি করা হচ্ছে > শিক্ষক প্রশিক্ষণ ৬ মাস

পরের সংবাদ

রানীনগরে কাঁটা বেগুন গাছে গ্রাফটিং করে টমেটো চাষ

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. আবু বকর সিদ্দিক, নওগাঁ থেকে : নওগাঁর রানীনগরে কাঁটা বেগুন গাছে গ্রাফটিং কলম করে টমেটো চাষে সফল হয়েছেন আদর্শ কৃষক জহুরুল ইসলাম বাদল। মাত্র পৌনে ৮ শতক জমিতে ১০ হাজার টাকা খরচ করে টমেটো চাষ করে তিনি আসা করছেন লাখ টাকার বেশি লাভ হবে। ইতোমধ্যে তার চাষকৃত টমেটো বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে। কৃষক বাদল উপজেলার একডালা ইউনিয়নের শিয়ালা গ্রামের মৃত আজাহার আলীর ছেলে।
ভোরের কাগজকে বাদল জানান, দীর্ঘদিন আগে থেকে তিনি বিভিন্ন সবজি চাষ করে আসছেন। প্রতি বছর তিনি বিভিন্ন সবজির পাশাপাশি টমেটোও চাষ করে থাকেন। এরই মধ্যে ইন্টারনেটে কাঁটা বেগুন গাছে গ্রাফটিং কলম করে টমেেেটা চাষ পদ্ধতি দেখে কাঁটা বেগুনের বীজ সংগ্রহ শুরু করেন।
তিনি বলেন, প্রথমে কাঁটা বেগুনের বীজ বপনের পর চারার বয়স ১৫ দিন হলে টমেটোর বীজ বপন করতে হয়। এরপর চারার বয়স এক মাস হলে গ্রাফটিং কলম করে এক সপ্তাহ ছায়াযুক্ত স্থানে রাখার পর, পরের এক সপ্তাহ রোদে রাখতে হয়। এরপর জমিতে চারা রোপণ করতে হবে। কৃষক বাদল বলেন, এবার পরীক্ষামূলক প্রায় পৌনে ৮ শতক জমিতে ৮০০ পিস টমেটো কলম চারা রোপণ করেছেন।
কাঁটা বেগুন গাছ অতি বৃষ্টি, স্যাঁতসেঁতে এবং প্রখর রোদ সহনশীল হওয়ায় গাছের গোড়া নষ্ট হয় না। ফলে কলমের গাছ প্রায় ৮ মাস পর্যন্ত টিকে থাকে এবং ফল পাওয়া যায়। এছাড়া সাধারণ টমেটো গাছের চাইতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি। তাই রোগবালাইও কম। এতে কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের খরচ কম হওয়ায় লাভও বেশি হবে। তিনি বলেন, পৌনে ৮ শতক জমিতে টমেটো চাষ করতে এ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রতিটি গাছ থেকে শেষ পর্যন্ত প্রায় ৫-৬ কেজি টমেটো পাবেন বলে ধারণা করছেন। তিনি ইতোমধ্যে ক্ষেত থেকে টমেটো তোলা শুরু করেছেন।
গত কয়েক দিনে প্রায় ১২০ কেজির মতো টমেটো তুলে স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি ১১০-১২০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, মৌসুমের শুরুতেই ফল পাওয়ায় চড়া দামে বিক্রি করতে পারছেন, তাই চাষকৃত জমি থেকে লক্ষাধিক টাকা লাভ হবে এমনটায় আসা তার। আগামী বছর টমেটো চাষের পরিধি বাড়াবেন বলেও জানান তিনি।
এর আগে ইন্টারনেটে দেখে পরীক্ষামূলক পরিত্যক্ত ছায়াযুক্ত ৬ শতক জায়গায় প্রায় এক হাজার ৬০০ বস্তায় আদা চাষ করেছেন। হয়তো আগামী ২-৩ মাসের মধ্যেই আদা তুলতে পারবেন। তিনি বলেন, আদা চাষে প্রতি বস্তায় খরচ হয়েছে প্রায় ২০-২২ টাকা। তবে বস্তা প্রতি আদার ফলন প্রায় দেড় থেকে দুই কেজি পরিমাণ পাবেন বলে আসা করছেন। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে সার্বিক পরামর্শ নিচ্ছেন। বাদল জানান, সরকারিভাবে সার্বিক সহযোগিতা পেলে এবং উন্নত প্রযুক্তি অনুসরণ করে আবহাওয়ার সঙ্গে মানানসই যে কোনো ফসল ফলাতে পারলে অবশ্যই স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব।
এ ব্যাপারে রানীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম ভোরের কাগজকে বলেন, রানীনগরে এই প্রথম কৃষক বাদল গ্রাফটিং কলম করে টমেটো চাষ করেছেন। আমরা তাকে সার্বিকভাবে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে আসছি। তিনি বলেন, গ্রাফটিং কলম গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি এবং গোড়া অতি সহজে পচে না, তাই গাছ দীর্ঘজীবী হয়। ফলে দীর্ঘসময় ধরে ফল পাওয়া যায়। এছাড়া আগাম চাষ করার কারনে টমেটোর দামও ভালো পাওয়া যায়। এতে কৃষকরা অধিক লাভবান হবেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়