মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ : ফরহাদকে সরানো হচ্ছে, মুস্তাফিজ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ

আগের সংবাদ

সব দলকেই নির্বাচনে চাই

পরের সংবাদ

শিক্ষাদানে শিক্ষকের অভিব্যক্তি ও শারীরিক ভাষার গুরুত্ব

প্রকাশিত: অক্টোবর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শিক্ষার প্রাথমিক স্তরেই শিশুচিত্তে লেখাপড়া শেখার প্রকৃতি-পদ্ধতি, বিষয় ও পরিবেশ যে প্রত্যক্ষ প্রভাব ফেলে তার ফল সুদূরপ্রসারী। যে কোনো জাতির কাক্সিক্ষত স্বপ্ন সোপানের শীর্ষ চূড়ায় পৌঁছার অন্যতম অত্যাবশ্যক বিষয় হচ্ছে শিক্ষা। শিক্ষা জাতিকে সমৃদ্ধ করে, বিবেককে জাগ্রত করে। আর শিক্ষক হচ্ছেন এই জাগ্রত বিবেকের নির্মাতা, তথা মানুষ গড়ার কারিগর। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণে একজন শিক্ষক ব্যক্তিগতভাবে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষাদানের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে থাকেন। তন্মধ্যে শিক্ষকের মৌখিক অভিব্যক্তি ও শারীরিক ভাষা শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
শিক্ষকের অভিব্যক্তি শিক্ষার্থীদের শিক্ষকের প্রতি আকর্ষণে সহায়তা করে, যার ফলে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক-শিক্ষার্থী মিথস্ক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন হয়। বিদ্যা-বুদ্ধিতে উত্তম, স্বাস্থ্যে প্রদীপ্ত, সুরুচি সম্পন্ন পোশাক, পরিচ্ছন্ন ভাবভঙ্গি, সুন্দর ও মার্জিত বাচনভঙ্গি, মুদ্রাদোষ রহিত এবং মধুর ব্যক্তিত্ববান শিক্ষকের চেহারা স্বভাবত-ই শিক্ষার্থীর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা আকর্ষণ করে। উদার, স্বচ্ছ, উজ্জ¦ল, মুক্ত দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী শিক্ষকের থাকবে একটি তৃতীয় নয়ন। যে নয়ন অপরের চিত্তকে আকর্ষণ করে, আবিষ্কার করে, আশা-আশ্বাস-নিরাপত্তা দেয়। ভালো কাজের স্বীকৃতি দিতে দ্বিধাবোধ করে না। অযথা পীড়ন-তাড়নে শিক্ষার্থীকে করে না হীনম্মন্য। সুদর্শন চেহারাই কেবল শিক্ষককে শিক্ষার্থীপ্রিয় করে তোলে না বরং তার মোহনীয় ব্যক্তিত্ব, মমত্ববোধ এবং পাঠদানে নমনীয় নীতিই শিক্ষার্থীর শ্রদ্ধা অর্জনে সাহায্য করে। পাঠদানকালে শিক্ষক কিছুটা রাশভারি হলেও তার মধ্যে পিতামাতাসুলভ স্নেহ-মমতা, ক্ষমা, নিরাপত্তা এবং সহানুভূতি থাকবে- এটাই শিক্ষার্থীরা আশা করে থাকে। কাজেই শাসন-সোহাগের সুদৃষ্টি দিয়ে শিক্ষক যা পড়াবেন, যতটুকু পড়াবেন, সহজভাবে পড়াবেন।
পাঠদানকালে শিক্ষক যতটা সম্ভব হাসিখুশি ও নমনীয় থাকবেন। পাঠদানের সময় শ্রেণিতে শিক্ষকের দৈহিকভাষা এমন হবে যাতে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের বক্তব্য দৈহিকভাষা প্রয়োগের মাধ্যমে অনেকটা বুঝে নিতে পারে। তিনি এক জায়গায় স্থিরভাবে দাঁড়িয়ে পাঠদান করবেন না, আবার খুব বেশি নড়াচড়াও করবেন না। তবে শ্রেণির সব শিক্ষার্থীর প্রতি দৃষ্টি রেখে পাঠদান করবেন। মেধাবী শিক্ষার্থীর দীপ্ত জীবন এবং জীবন সাধনার জন্য উদ্দীপনা জোগাবেন এবং ক্ষীণমেধা সম্পন্ন শিক্ষার্থীর স্বাবলম্বী জীবন এবং জীবন সাধনার জন্যও তিনি সাহস জোগাবেন। কখনোই তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করবেন না। শিক্ষকের সুন্দর ও নমনীয় দৃষ্টিভঙ্গি এবং শৈল্পিক বাচনভঙ্গিই পারে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষাদানের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে। পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে জানা গেছে, প্রতিটি শ্রেণিতে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষার্থী থাকে। তাই শ্রেণিকক্ষে শিক্ষাদানের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে বিভিন্ন কৌশল (ভূমিকাভিনয়, সম্ভাষণ) ইত্যাদি ব্যবহার করলে ভালো হয়। তবে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষাদানের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে মৌখিক অভিব্যক্তি ও শারীরিক ভাষা কৌশল গ্রহণ করা অধিকতর ফলপ্রসূ।
সামগ্রিকভাবে একজন অভিজ্ঞ শিক্ষক পাঠদান প্রক্রিয়া ফলপ্রসূ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের কৌশল প্রয়োগ করে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষাদানের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চেষ্টা করে দেখবেন। মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নে মানসম্মত শিক্ষকের বিকল্প নেই। এজন্য শিক্ষকের বিভিন্ন ধরনের পেশাগত প্রশিক্ষণ যেমন আবশ্যক এবং তেমনি পেশাগত জ্ঞান বাস্তবে প্রয়োগ করার মানসিকতাও প্রয়োজন।

এস এম রাকিবুল হাসান
সহকারী শিক্ষক, মস্তমাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
মির্জাপুর, টাঙ্গাইল।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়