মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ : ফরহাদকে সরানো হচ্ছে, মুস্তাফিজ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ

আগের সংবাদ

সব দলকেই নির্বাচনে চাই

পরের সংবাদ

অনিয়মিত লোডশেডিংয়ে জনদুর্ভোগ

প্রকাশিত: অক্টোবর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চলমান লোডশেডিং প্রতিদিন প্রকট আকার ধারণ করছে। এলাকাভিত্তিক দুঘণ্টা লোডশেডিং হওয়ার কথা থাকলেও সেই স্থলে চার-পাঁচ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। লোডশেডিং মহামারি রূপ নিচ্ছে। বিদ্যুৎ ছাড়া জনজীবনে দুর্ভোগ বেড়েছে। সারাদেশ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পরীক্ষা চলমান। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজগুলোতে মাস্টার্স-ডিগ্রি পরীক্ষা চলমান। সামনে অনার্স শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ও পরীক্ষা আরম্ভ হবে। পরীক্ষার সময়ে বিদ্যুৎ না থাকায় পরীক্ষার্থীদের তীব্র গরমে অস্বস্তিতে পরীক্ষা দিতে হয়। বিদ্যুৎহীনতার কারণে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) রুটিন করে লোডশেডিং দেয়।
সরকার যেখানে ঘোষণা দিয়েছে এলাকাভিত্তিক দুঘণ্টা লোডশেডিং হবে। সেক্ষেত্রে ডিপিডিসি পাঁচ-ছয় ঘণ্টা লোডশেডিং দিচ্ছে। যা সাধারণ গ্রহীতাদের মনে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। ওদের লোডশেডিং শিডিউল ভীষণ রকমের বিরক্তিকর। সকালে ভোর বেলায় একবার বিদ্যুৎ নেবে। তখন বিদ্যুৎহীন থাকতে হয় পাক্কা এক থেকে দেড় ঘণ্টা। তারপর দুপুর বেলা খাবারের সময়ে কারেন্ট চলে যায় আবার। যা খুবই বিরক্তিকর। মানুষ খাবার খাওয়ার সময়টুকুতেও পর্যন্ত বিদ্যুৎ পাচ্ছে না। এরপর বিকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মাঝে আবার দেড় দুঘণ্টার লোডশেডিং। সন্ধ্যা বেলায় শিক্ষার্থীদের পড়শোনার সময় তখনও বিদ্যুৎ থাকছে না। মানুষ সারাদিনের তীব্র ব্যস্ত শিডিউল পার করে রাতে বিছানায় শরীরটা এলিয়ে দিলে বিদ্যুৎ চলে যায়। জনসাধারণের সময়। ২৪ ঘণ্টায় ৬-৭ বার লোডশেডিং হওয়া একটি উন্নয়ন শীল দেশের জন্য কখনো কাম্য নয়। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ডয়চে ভেলের কাছে দিনে এক ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের নতুন ব্যাখ্যা দিয়েছে। তারা বলছে, পুরো দিনে এক ঘণ্টা লোডশেডিং নয়। যখন লোডশেডিং করা হবে, তখন টানা সর্বোচ্চ এক ঘণ্টা করা হবে। এটা দিনে একাধিকবারও হতে পারে। ১৯ জুলাই থেকে বিদ্যুতের এই রেশনিং শুরু হয়। তখন বলা হয়েছিল প্রথম সাত দিন ২৪ ঘণ্টায় এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং করা হবে। পরে পরিস্থিতি বুঝে দুঘণ্টা করা হতে পারে। ২৫ জুলাই এক সপ্তাহ শেষে দুই ঘণ্টা বা তার বেশি লোডশেডিংয়ের কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়নি। কিন্তু বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলো ২৬ জুলাইয়ের যে লোডশেডিং শিডিউল প্রকাশ করেছে, তাতে সর্বনিম্ন তিন ঘণ্টা থেকে সর্বোচ্চ ৯ ঘণ্টার লোডশেডিং করা হচ্ছে। সিলেট অঞ্চলে পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। সিলেটের কোথাও চার ঘণ্টার কম লোডশেডিং নেই। সর্বোচ্চ ৯ ঘণ্টা সেখানেই।
পিডিবি সরাসরি কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ করে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ ও সিলেটের কিছু অঞ্চলে। ওইসব এলাকায় সর্বনিম্ন ২ থেকে সর্বোচ্চ ৬ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের তালিকা দেয়া হয়েছে। সিলেট ওসমানি বিমান বন্দরেই ৬ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। তবে এর আগে তারা ২৫-২৭ জুলাইয়ের যে শিডিউল প্রকাশ করে, তাতে সিলেটের মিয়াপাড়া, মেন্দিবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় সর্বোচ্চ ৯ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কথা বলা হয়। সর্বনিম্ন ৮ ঘণ্টা। বাংলাদেশে বিদ্যুতের সবচেয়ে বেশি গ্রাহক বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের। তারা উপজেলা পর্যায়ে এবং গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। তারা সর্বনিম্ন ৩ থেকে সর্বোচ্চ ৬ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের তালিকা দিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে সেটা মানা হচ্ছে না। সিলেটের বাসিন্দা মনোয়ার জাহান জানান, বিদ্যুতের যে শিডিউল দেয়া হচ্ছে, তাও মানা হচ্ছে না। গ্রামাঞ্চলে পল্লী বিদ্যুতের অবস্থা আগে থেকেই খারাপ ছিল। এখন আরো খারাপ। কোথাও কোথাও ১২-১৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। শেখ হাসিনা বলেন, ‘একদিকে করোনার একটা অভিঘাত, তার ওপরে এসেছে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ। যার ফলে আজকে সমগ্র বিশ্বে যেমন তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, অনেক দেশে এখন বিদ্যুতের জন্য হাহাকার। দেশবাসীকে অনুরোধ করব, বিদ্যুৎ আমরা সবার ঘরে পৌঁছে দিয়েছিলাম এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সবাই পাচ্ছিল। কিন্তু এখন আন্তর্জাতিক বাজারে বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে উপকরণগুলো, সেগুলোর দাম অত্যধিক বৃদ্ধি পেয়ে গেছে। যেমন ডিজেলের দাম বেড়েছে, তেলের দাম বেড়েছে, এলএনজির দামসহ সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। কয়লা এখন প্রায় পাওয়াই যায় না।’

তাসনিম হাসান মজুমদার
শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম কলেজ।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়