মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ : ফরহাদকে সরানো হচ্ছে, মুস্তাফিজ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ

আগের সংবাদ

সব দলকেই নির্বাচনে চাই

পরের সংবাদ

অণু জুড়ে ফেলার সহজ পদ্ধতি : ‘ক্লিক কেমিস্ট্রি’র গবেষণায় নোবেল পেলেন ৩ বিজ্ঞানী

প্রকাশিত: অক্টোবর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : অণুর গঠন এবং সংযুক্তি সংক্রান্ত গবেষণায় সাফল্যের জন্য এ বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ৩ বিজ্ঞানী। রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস গতকাল বুধবার এ পুরস্কারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানী ক্যারোলিন আর বার্তোজ্জি এবং কে ব্যারি শার্পলেসের পাশাপাশি ডেনমার্কের মর্টেন মেলডালের নাম ঘোষণা করে।
নোবেল পুরস্কারের ১ কোটি সুইডিশ ক্রোনার এই ৩ বিজ্ঞানী সমানভাবে ভাগ করে নেবেন। তাদের মধ্যে শার্পলেস ২০০১ সালে রসায়নে নোবেল পেয়েছিলেন। তিনি নোবেলের ইতিহাসে দ্বিতীয় বিজ্ঞানী হিসেবে দুবার রসায়নে এই সম্মাননা পেলেন। ‘ক্লিক কেমিস্ট্রি’ সংক্রান্ত তাদের গবেষণা আগামী দিনে ওষুধ শিল্পকে নতুন মাত্রা দিতে পারে বলে অভিমত নোবেল কমিটির।
১৯০১ থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত নোবেল পুরস্কারের ইতিহাসে রসায়নে এই নিয়ে মোট ১১৬ জন নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ৭ জন নারী বিজ্ঞানী। ২০২০ সালে নোবেল পুরস্কারের ইতিহাসে প্রথমবার কোনো একটি বিভাগে একসঙ্গে দুই নারীর নোবেলপ্রাপ্তি ঘটেছিল রসায়নেই। সেই বছর জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইউনিট ফর দ্য সায়েন্স অব প্যাথোজেনস-এর অধ্যাপক এমানুয়েল শার্পেন্টার এবং বার্কলের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জেনিফার এ দৌদনা যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন।
১৯০৩ এবং ১৯১১ সালে মাত্র ৮ বছরের ব্যবধানে দুবার দুই আলাদা বিষয়ে (পদার্থবিদ্যা এবং রসায়ন) নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন মাদাম কুরি। ১৯৫৮ এবং ১৯৮০ সালে রসায়নে দুবার নোবেল সম্মাননা পাওয়ার রেকর্ড ছিল ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ফ্রেডরিক স্যাঙ্কারের। গতকাল সেই রেকর্ড ছুঁয়ে ফেললেন শার্পলেস।
ব্যারি শার্পলেস এবং মর্টেন মেলডাল রসায়নের একটি কার্যকরি ফর্মের ভিত্তি স্থাপন করেছেন- আর তা হলো ক্লিক রসায়ন, যেখানে আণবিক বিল্ডিং ব্লকগুলো দ্রুত এবং দক্ষতার সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়। ক্যারোলিন আর বার্তোজ্জি ক্লিক রসায়নকে একটি নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছেন এবং জীবন্ত প্রাণীতে এটি ব্যবহার শুরু করেছেন। পাশাপাশি তার বায়োর্থোগোনাল প্রতিক্রিয়াগুলো এখন ক্যান্সারের চিকিৎসায় অবদান রাখছে।
গত বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে এই পুরস্কারে ভূষিত হন জার্মানির বেঞ্জামিন লিস্ট ও যুক্তরাষ্ট্রের ডেভিড ম্যাকমিলান। ‘অ্যাসাইমেট্রিক অর্গানোক্যাটালাইসিস’ নামে অণু তৈরির নতুন এক কৌশল আবিষ্কার করে এ সম্মাননা জিতেন তারা।
অক্টোবর শুরু মানে নোবেলের মৌসুম। অক্টোবরের প্রথম সোমবার থেকে ৬ দিনব্যাপী সারা বিশ্বের ৬ পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা শুরু হয়। প্রথমদিন ঘোষণা করা হয় চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেলজয়ীর নাম। এ বছর চিকিৎসায় নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন সুইডিশ বিজ্ঞানী সভান্তে পাবো। আদিম মানুষের জিনোম উদ্ঘাটন ও মানব বিবর্তনের জিনোম সম্পর্কিত আবিষ্কারের জন্য তাকে এ পুরস্কার দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার ঘোষণা করা হয়েছে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ীদের নাম। ‘বিজড়িত ফোটন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, বেল অসমতার লঙ্ঘন প্রতিষ্ঠা এবং কোয়ান্টাম তথ্য বিজ্ঞানে অগ্রণী ভূমিকা পালনের জন্য’ এ বছর পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ফরাসি বিজ্ঞানী অ্যাস্পেক্ট, যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানী ক্লজার এবং অস্ট্রিয়ার বিজ্ঞানী জেলিঙ্গার।
আজ বৃহস্পতিবার সাহিত্য এবং আগামীকাল শুক্রবার শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে। সবশেষ ১০ অক্টোবর ঘোষণা করা হবে অর্থনীতিতে পুরস্কার বিজয়ীর নাম। নোবেল শান্তি পুরস্কার দেয়া হয় নরওয়েতে। কিন্তু সাহিত্য ও অর্থনীতির মতো অন্যান্য পুরস্কার সুইডেন থেকে দেয়া হয়।
করোনা মহামারির কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে ছোট আকারের অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে আয়োজক কমিটির বাইরে অন্য কোনো অতিথি উপস্থিত ছিলেন না। এ বছর নোবেল ফাউন্ডেশন ২০২২ সালের বিজয়ীদের সঙ্গে গত দুই বছরের বিজয়ীদেরও আগামী ডিসেম্বরে স্টকহোমের নোবেল সপ্তাহে আমন্ত্রণ জানাবে। সেখানেই ১০ ডিসেম্বর নোবেল পুরস্কারের মূল্য ১ কোটি সুইডিশ ক্রোনারের (প্রায় ৯ লাখ ডলার) পাশাপাশি বিজয়ীদের হাতে একটি সনদ ও স্বর্ণপদক তুলে দেয়া হবে। ১৮৯৬ সালের ১০ ডিসেম্বর আলফ্রেড নোবেল মারা যান। সে জন্য এই তারিখেই বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়।
১৮৯৫ সালের নভেম্বর মাসে আলফ্রেড নোবেল নিজের মোট উপার্জনের ৯৪ শতাংশ (৩ কোটি সুইডিশ ক্রোনার) দিয়ে তার উইলের মাধ্যমে নোবেল পুরস্কার প্রবর্তন করেন। এই বিপুল অর্থ দিয়ে ১৯০১ সাল থেকে শুরু হয় পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসাবিজ্ঞান, সাহিত্য ও শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রদান। পরে এর সঙ্গে যুক্ত হয় অর্থনীতি, যার আনুষ্ঠানিক নাম ব্যাংক অব সুইডেন প্রাইজ। ১৯৬৮ সাল থেকে সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক আলফ্রেড নোবেলের অর্থনৈতিক বিজ্ঞানে অবদানের কথা স্মরণ করে এই পুরস্কার দেয়া শুরু করে। ১৯০১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৬টি শাখায় এখন পর্যন্ত ৬০৯ জন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়