সিনহার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য পেছাল

আগের সংবাদ

জাতীয় গ্রিড আধুনিকায়নে এবার গুরুত্ব দিন

পরের সংবাদ

শুভেচ্ছা বিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী : ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে কথা বলতে পারবে না কেউ

প্রকাশিত: অক্টোবর ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আবহমান বাংলার ঐতিহ্য ধরে রেখে সবাইকে ভিন্ন মত এবং ধর্মকে সম্মান দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়া যাবে না। যে যে ধর্মেরই হোক, যেই হোক ধর্মীয় অনুভূতিতে কেউ আঘাত দিতে পারবে না। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে কেউ কোনো কথা বলতে পারবে না। যে কোনো ধর্মের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য। শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার বিকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির অঙ্গনে উপস্থিত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যদি বিশ্বাস করি এ বিশ্ব সৃষ্টিকর্তার তৈরি, আল্লাহর তৈরি, যে যেভাবেই ডাকে না কেন সেই শক্তির প্রতি; যারাই যেভাবে যতটুকুু যার যার বিশ্বাস থেকে সে যেভাবে উদযাপন করে সেখানে সবাইকেই সম্মান দেখানো উচিত, কেউ কাউকে ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। ইসলাম ধর্মের উদারতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের ইসলাম অনেক উদার ধর্ম। আমাদের ইসলাম ধর্মে এটা নির্দেশ আছে যে সব ধর্মকে সম্মান দেখানো।
বাংলাদেশে সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সব সময় সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতির দেশ। আমরা জানি ’৭৫ এর পর অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে… কখনো কখনো কিছু কিছু ঘটনা ঘটে। কিন্তু আপনারা নিশ্চয়ই একটা জিনিস লক্ষ্য করেছেন, আমাদের সরকার সব সময় এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন। যে কোনো ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়। আমরা চাই, আমাদের এই দেশে যারা জন্মগ্রহণ করেছে, এই দেশে যারা বসবাস করে বা যারা বাংলাদেশের নাগরিক সে যে ধর্মেরই হোক সে তার ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করবে। আমরা প্রত্যেকটা উৎসবই ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সবাই মিলে উদযাপন করি। যে কারণে বলি ধর্ম যার যার উৎসব সবার। সব উৎসবে কিন্তু আমরা সম্মিলিতভাবে উদযাপন করে থাকি। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিষয়। আমাদের সবচেয়ে বড় সার্থকতা বাংলাদেশে এই চেতনা আমরা ধরে রাখতে পেরেছি।
তিনি বলেন, আমরা সব সময় চেষ্টা করি আমাদের এই দেশটা যেন অসা¤প্রদায়িক চেতনা নিয়ে চলতে পারে। কোথাও কোনো দুর্ঘটনা হলে সেটাকে খুব বড় করে না দেখে তার বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে সে বিষয়টিকে আপনাদের নজর দিতে অনুরোধ করব। সেই সঙ্গে আপনাদের সহযোগিতাও চাইব। আপনারাও সেই সহযোগিতা করবেন।
মুসলিমদের হেবা আইনের মতো সুবিধা হিন্দু স¤প্রদায়ের জন্যও চালু করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে বড় অভিযোগ ছিল শত্রæ সম্পত্তি আইন। সেটাও আমরা বাতিল করেছি, পরিবর্তন করে দিয়েছি। যার যার সম্পত্তিতে অধিকার ভোগ করতে পারেন। সেই ব্যবস্থা করেছি। এ সময় সব ধর্মের বিত্তবান মানুষকে কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে মানুষের সেবায় পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
২০২৩ সালে অর্থনৈতিক মন্দা বাড়ার পাশাপাশি বিশ্ব দুর্ভিক্ষের কবলে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বাংলাদেশের নাগরিকদের প্রতি ইঞ্চি জমিকে উৎপাদনের আওতায় আনতে হবে। সবাইকে অনুরোধ করব কারো কোনো এলাকায় ১ ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। কারণ সারা বিশ্বে এখন যে অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হয়েছে- আমি যখন জাতিসংঘে গিয়েছি সেখানে অনেক দেশের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, সবাই খুব দুশ্চিন্তাগ্রস্ত যে ২০২৩ সালে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। আরো ব্যাপক অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে আমি বলব, আমাদের দেশের মানুষকে এখন থেকেই ব্যবস্থা নিতে হবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমাদের মানুষ আছে, আমাদের মাটি অত্যন্ত উর্বর, কোনো জমি যেন অনাবাদি না থাকে। যে যা পারেন উৎপাদন বাড়িয়ে নিজেদের সঞ্চয় বাড়াতে হবে। বিদ্যুৎ, পানি সবকিছু ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। ভবিষ্যৎ চিন্তা করে আমাদের এখন থেকেই সেভাবে কাজ করে যেতে হবে।
রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত, পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞার ফলে সারাবিশ্বের মানুষের কষ্টের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারির পর আসল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। সেই যুদ্ধের ফলে দেয়া হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। ফলে আজকে শুধু বাংলাদেশ না, বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশের সাধারণ মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, নিত্য পণ্যের দাম বাড়ছে, বিদ্যুৎ গ্যাস এবং জ্বালানি প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেড়ে যাচ্ছে। এতে করে উন্নত দেশগুলোও এখন হিমশিম খাচ্ছে। এ সময় মহালয়া যোগ দিতে যাওয়ার সময় পঞ্চগড়ে নৌকাডুবির ঘটনায় শোক এবং সমবেদনা জানান প্রধানমন্ত্রী।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়