বসতঘর থেকে মা ও ২ শিশু সন্তানের মরদেহ উদ্ধার

আগের সংবাদ

বছরজুড়েই ‘উন্নয়নে’র দুর্ভোগ : ভাঙাচোরা সড়কে সমন্বয়হীন খোঁড়াখুঁড়ির ফাঁদ > নিত্যসঙ্গী তীব্র যানজট > সামান্য বৃষ্টিতেই জলজট

পরের সংবাদ

ড. আবদুল মজিদ, সাবেক চেয়ারম্যান, এনবিআর : নিজেদের রক্ষায় কী করছি সেটাই গুরুত্বপূর্ণ

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রপ্তানি কমে যাওয়ার তিনটি কারণকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ড. আবদুল মজিদ। এছাড়া দক্ষ মানবসম্পদের অভাবে সরকারের নানা উদ্যোগের পরেও প্রবাসী আয় কমছে বলে মনে করেন তিনি। ভোরের কাগজকে তিনি বলেন, মহামারি বা যুদ্ধের ওপরে দোষ চাপিয়ে আমরা নিজেরা পার পেয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আমাদের নিজেদের অর্থনীতির ভেতরে যে দুর্বলতা আছে, সেগুলো প্রকাশ করছি না। তিনি বলেন, সত্য বিষয়কে সামনে আনা উচিত। যুদ্ধ, মহামারি- এসব হতেই পারে। কিন্তু নিজেদের রক্ষায় কী করেছি বা করছি সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।
আবদুল মজিদ বলেন, রপ্তানি ও প্রবাসী আয়, অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই দুই সূচকে নেতিবাচক ধারার কারণে বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ নেমেছে ৩৬ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ এখন ৩৬ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার। তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে মন্দার আশঙ্কা করছে বিশ্বের বড় সংস্থাগুলোও। এ বিষয়ে বিশ্বের বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান অর্থনীতিবিদের নিয়ে মতামত জরিপ করেছে স¤প্রতি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ)। সুতরাং এ মন্দা থেকে বাঁচাতে আমরা নিজেদের জন্য কী করছি সেটাই দেখার বিষয়।
ড. মজিদ বলেন, প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, অতীতে অদক্ষ লোকবল বিদেশে পাঠানো হয়েছে। ফলে ধীরে ধীরে আমাদের দেশের মানবসম্পদের চাহিদা কমতে শুরু করেছে। এজন্য সরকার বিভিন্ন প্রণোদনা বা সুবিধা দেয়া সত্ত্বেও প্রবাসী আয় কমছে। তাই অবশ্যই দক্ষ জনবল তৈরি করতে হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, এত বছরেও তা সম্ভব হয়নি এবং এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো প্রস্তুতি নেই।
রপ্তানি আয় কমে যাওয়ার বিষয়ে এ অর্থনীতিবিদ বলেন, রপ্তানি আয়ের জন্য শুধুমাত্র একটি পণ্যের উপরে ভরসা করে বসে আছে সরকার। অন্য খাতগুলোকে তুলে আনতে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছ না। তিনি বলেন, রপ্তানি কমে যাওয়ার তিনটি কারণ উল্লেখযোগ্য। প্রথমতো, ডলারের দাম ওঠানামার জন্য আমদানি ব্যয় বেড়েছে। ডলারের অস্থিরতায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় রপ্তানি খাত। কারণ সে তখন ন্যায্য মূল্য পায় না। দ্বিতীয়ত, রপ্তানির উল্লম্ফনের যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছিল, তা ছিল মূলত ভাসমান উক্তি। কার্যত রপ্তানির পরিমাণ বাড়েনি। এখন প্রকৃত চিত্র ফুটে উঠছে। বিশ্বে অনেক উন্নত দেশ এখন বিশ্বমন্দার কবলে পড়েছে। এছাড়া আমাদের রপ্তানি আয়ের অন্যতম খাত হচ্ছে পোশাক। ফলে পোশাক এমন কোনো পণ্য না, যেটা না হলে মানুষের চলবে না। সুতরাং আমদানিকারক দেশগুলো খুব প্রয়োজন না হলে পোশাক কিনছে না।
তৃতীয়ত, আমাদের দেশের পরিবেশ পরিস্থিতিও রপ্তানিমুখী হচ্ছে না। কারণ কাঁচামাল আমদানি কমে যাচ্ছে, ফলে উৎপাদন কমছে। আর উৎপাদন কম হলে রপ্তানিও কম হবে। পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত। তিনি বলেন, আয় কমে যাওয়ার অনেকগুলো কারণের মধ্যে যুদ্ধ একটি অন্যতম কারণ। তিনি বলেন, করোনা মহামারি, যুদ্ধের ওপরে দোষ চাপিয়ে আমরা নিজেরা পার পেয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আমাদের নিজেদের অর্থনীতির ভেতরে যে দুর্বলতা আছে, সেগুলো প্রকাশ করছি না।
প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, অতীতে অদক্ষ লোকবল পাঠানো হয়েছে। ফলে দিনে দিনে আমাদের দেশের মানবসম্পদের চাহিদা কমেছে, সুতরাং অবশ্যই দক্ষ জনবল তৈরির দিকে মনোযোগ দিতে হবে। কিন্তু এত বছরেও তা সম্ভব হয়নি এবং এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো প্রস্তুতি নেই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়