জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির সর্বশেষ রিলিজ স্লিপের মেধা তালিকা ২ অক্টোবর

আগের সংবাদ

ইউক্রেনের ৪ অঞ্চল রাশিয়ায় যুক্ত : প্রেসিডেন্ট পুতিনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা, অবৈধ বলছেন ন্যাটো নেতারা

পরের সংবাদ

সংবাদ সম্মেলনে বিদায়ী আইজিপি : নষ্ট রাজনীতির দুষ্ট চর্চা এখনো আছে

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : পুলিশের বিদায়ী মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ বলেছেন, আমাদের দেশে এক ধরনের নষ্ট রাজনীতির দুষ্ট চর্চা ছিল, এখনো আছে। সেই এক শ্রেণির মানুষ অন্যায়ভাবে ও আযৌক্তিকভাবে আমাকে তাদের বিপক্ষে আবিষ্কার করেছেন। তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, তাদের প্রতিও কোনো অভিযোগ নেই, কোনো অনুযোগ নেই। তারাও ভালো থাকবেন, সে প্রত্যাশা করব। কারণ সবাইকে নিয়েই আমাদের আজকের বাংলাদেশ।
একইসঙ্গে বলতে চাই দীর্ঘ কর্মজীবনে বিশেষ করে ডিএমপি কমিশনার, র‌্যাব ডিজি ও আইজিপি হিসেবে দীর্ঘ ১২ বছর দায়িত্ব পালনকালে সব ভালো কাজের কৃতিত্ব সরকার ও জনগণের। আর ব্যর্থতাগুলো আমি নিচ্ছি। ব্যর্থতার দায় নেয়ার সৎ সাহস আমার আছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজারবাগ পুলিশ অডিটরিয়ামে দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ৩৪ বছরের কর্মজীবন শেষে অবসরে যাওয়ার আগে শেষ কর্মদিবসে নিজের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের নানা অর্জনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। চাকরি জীবনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়ে জানতে চাইলে বেনজীর আহমেদ বলেন, সব চ্যালেঞ্জই চ্যালেঞ্জ। যতক্ষণ না পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট চ্যালেঞ্জকে অতিক্রম করতে পারব ততক্ষণ পর্যন্ত সেটাই নির্দিষ্ট চ্যালেঞ্জ। তবে, ফরমালিনমুক্ত খাদ্য নিশ্চিত করা ও সুন্দরবনকে জলদস্যুমুক্ত করা অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ মনে হয়েছে। কক্সবাজারের কাউন্সিলর একরাম নিহতের ঘটনায় অনুসূচনাবোধ কাজ করে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে বেনজীর বলেন, যে পর্যন্ত বিষয়টি অন্যায্য বা অনৈতিক প্রমাণিত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত এ বিষয়ে আমার অনুভূতি প্রকাশ করার সুযোগ নেই।
অবসরে গিয়ে রাজনীতি করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবসরে গিয়ে অবসর নিয়েই ভাবব। এতদিন সরকারের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে মানুষের সেবা করার চেষ্টা করেছি। অবসরে ব্যক্তি হিসেবে মানুষের সেবা করার চেষ্টা করব। এক কথায়, সমাজের অংশ হিসেবেই থাকব।
বিক্ষোভ দমন করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে অনেক সময় মানুষ মারা যায়, এ বিষয়ে তিনি বলেন, এগুলো আনাকাক্সিক্ষত ঘটনা। আমাদের প্রাথমিক ও প্রধান লক্ষ্য থাকে মানুষের জীবন বাঁচানো। এর জন্যই আমাদের হাতে অস্ত্র থাকে। যদি এর ব্যত্যয় ঘটে তাহলে বিভাগীয় তদন্ত হয়ে থাকে।
উল্লেখ্য, ১৯৮৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে সহকারী পুলিশ সুপার হিসাবে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেয়া বেনজীর আহমেদ আইজিপি হন ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল। তার আগে প্রায় সাড়ে চার বছর এলিট ফোর্স র‌্যাবের নেতৃত্ব দেন। দায়িত্ব পালন করেছেন ডিএমপি কমিশনার হিসেবেও। তবে, ‘গুরুতর’ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে যুক্তরাষ্ট্র গত ডিসেম্বরে র‌্যাব ও এর সাবেক-বর্তমান ৭ কর্মকর্তার উপর নিষেধাজ্ঞা দিলে ওই তালিকায় বেনজীর আহমেদের নামও আসে।
যদিও বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে এই বিষয় নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই বলে জানিয়েছেন ড. বেনজীর আহমেদ।

পুলিশের মধ্যে মানবাধিকার উন্নয়নের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মানবাধিকার উন্নয়নে সরকারের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। এনজিওগুলোও পুলিশের প্রশিক্ষণের নামে শত শত কোটি টাকা এনেছে। তারাও যখনই পুলিশকে প্রশিক্ষণের জন্য ডেকেছে, পুলিশ গিয়েছে। তবে, রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের সংবিধানে মানবাধিকার নিয়ে বিস্তর বলা রয়েছে। যা বিশ্বের যেকোনো রাষ্ট্র থেকে সমৃদ্ধ। এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। এরই আলোকে হেফাজতে মৃত্যু আইন করা হয়েছে।
অবসরে অস্ত্রধারী পুলিশের নিরাপত্তা পাবেন বেনজীর : আইজিপি বেনজীর আহমেদ নিরাপত্তাজনিত কারণে অবসরের পরও অস্ত্রধারী পুলিশের নিরাপত্তা সুবিধা পাবেন। গত বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে পুলিশকে এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, আইজিপি ড. বেনজীর আহমদের অবসর প্রস্তুতিজনিত ছুটিকালে তার নিরাপত্তা দেয়ার লক্ষ্যে গাড়িসহ ১/৬ ফর্মেশনে সাদা পোশাকে এস্কর্ট, অস্ত্রসহ ইউনিফর্মধারী দুজন সার্বক্ষণিক দেহরক্ষী থাকবে। পাশাপাশি (বাড়ির নিরাপত্তায়) ১/৩ ফর্মেশনে হাউস গার্ড সার্বক্ষণিকভাবে মোতায়েন থাকবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়