সোনারগাঁওয়ে দলিল লিখককে হত্যা স্ত্রী আটক

আগের সংবাদ

জন্মদিনের শুভেচ্ছা : জননেত্রী শেখ হাসিনা আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার

পরের সংবাদ

স্বাবলম্বী হচ্ছেন দরিদ্র ও অসহায় নারী-পুরুষ : রাঙ্গুনিয়ায় বাড়ছে বনায়ন উদ্ধার হচ্ছে বনভূমি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মোহাম্মদ ইলিয়াছ, রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) থেকে : চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়ায় ব্যাপক আকারে বনায়ন কার্যক্রম চলছে। সুফল প্রকল্পের আওতায় ১৩ লাখ ৭৭ হাজার গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। উপজেলার রাঙ্গুনিয়া, খুুরুশিয়া ও ইছামতী রেঞ্জের আওতায় এসব বনায়ন করা হচ্ছে। বনায়নের কাজগুলো করানো হয়েছে স্থানীয় দরিদ্র ও অসহায় নারী-পুরুষের মাধ্যমে। এতে রাঙ্গুনিয়া জুড়ে বাড়ছে বনায়ন, উদ্ধার হচ্ছে বেদখল হওয়া বনভূমি। স্বাবলম্বী হচ্ছেন দরিদ্র ও অসহায় নারী-পুরুষ।
বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বন ও জীবিকা প্রকল্পের (সুফল) আওতায় স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি চারা রোপণের কাজ চলছে। বাগান টেকসই করার জন্য আহসানিয়া মিশন নামে একটি এনজিও সংস্থাও মাঠে কাজ করছে। এছাড়া সুফল প্রকল্পের মাঠ পর্যায়ে বাগানের আশপাশ থেকে হতদরিদ্রদের নিয়ে টেকসই বন-জীবিকার জন্য সমিতি করা হয়েছে। এ সমিতির সদস্যদের বিশ্বব্যাংক আর্থিক বরাদ্দ থেকে ঋণ দেয়া হয়। প্রতিটি বনবিটে ১৮ জন পাহারা দেবেন। সরকারিভাবে সম্মানি পাবেন প্রতিজন পাহারাদার। খুরুশিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম বলেন, রাঙ্গুনিয়ায় সুফল প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে। এরপর চারা উৎপাদন শেষে ২০২১-২২ অর্থবছরে খুরুশিয়া রেঞ্জের ৪ বিটে ১২২ হেক্টর বনভূমিতে ২ লাখ ৮০ হাজার গাছের চারা রোপণ করা হয়। এছাড়া এই প্রকল্পের আওতায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই রেঞ্জে আরো ১৪৫ হেক্টর বনভূমি সৃজন করা হবে। রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মাসুম কবির বলেন, এ রেঞ্জের কোদালা, নারিশ্চা, চিরিঙ্গা ও পোমরা বিটে ৩৩৮ হেক্টর জমিতে নানা প্রজাতির ৮ লাখ ৪৫ হাজার চারা রোপণ করা হয়েছে। এখানে লাগানো চারার আশপাশে আগাছা পরিষ্কার করে শূন্যস্থানে পুনরায় চারা রোপণ করা হচ্ছে।
ইছামতী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. কসরুল আমিন বলেন, ইছামতী রেঞ্জের দুটি বিট এলাকায় ৯০ হেক্টর ভূমিতে লাগানো হয়েছে ২ লাখ ৫২ হাজার গাছের চারা।
রাঙ্গুনিয়ায় সরকারি বনভূমির উঁচু নিচু পাহাড়ে নানা প্রজাতির চারা রোপণ করা হয়েছে। এখন চলছে লাগানো চারাগুলোর মধ্যে যেসব চারা নষ্ট কিংবা মারা গেছে সেখানে পুনরায় চারা লাগানো ও আগাছা পরিষ্কারের কর্মযজ্ঞ। ঔষধি ও বিভিন্ন প্রজাতির চারা রোপণের কাজ করছেন দরিদ্র নারী ও পুরুষ। রোপণ করা গাছের মধ্যে রয়েছে ড্যাকি জাম, পূতি জাম, কড়ই, নিম, আকাশমণি, গর্জন, কাঠবাদাম, বস বাদাম, লটকন, শিমুল, বহেড়া, গামারী, অর্জুন, কৃষ্ণচূড়া, কাজুবাদাম, জয়তুন, রাধাচূড়া, হরীতকী, পলাশ, বৈলাল, তৈলসুর, বধ নারিকেল, পারুল, নাগেশ্বরি, ছিকরামি, তুলা, রেইনট্রি, লোহা, পিতরাজ, সোনালু, মিঝিরি, ছারিয়ানসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। নারিশ্চা বিটে কাজ করা আলমাস খাতুন বলেন, তার বাড়ি উপজেলার পদুয়ার রাজার হাট এলাকায়। তিনি দীর্ঘদিন সুফল প্রকল্পে নার্সারির কাজ করছেন। এ বিটে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ জন নারী চারা রোপণ ও আনুষাঙ্গিক কাজ করছেন। চারা রোপণের কাজে ৬০ থেকে ৭০ জন পুরুষও কাজ করছেন। তারা প্রতিদিন যাতায়াত ভাড়াসহ ৫০০ টাকা করে ভাতা পান।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) শফিকুল ইসলাম বলেন, এ বনায়নের সঙ্গে স্থানীয় দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। পাহারাদাররা সমিতির মাধ্যমে এসব বনায়নে বিভিন্ন সুবিধা পাবেন। রাঙ্গুনিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার বলেন, রাঙ্গুনিয়ার সংসদ সদস্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ একজন পরিবেশ বিজ্ঞানী। তার প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন রাস্তা-ঘাটসহ পতিত জমি ও পাহাড়ে নিয়মিত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। তারই সাহায্যে রাঙ্গুনিয়ায় বাস্তবায়িত হচ্ছে এই সুফল প্রকল্পটি। এর ফলে বদলে যাচ্ছে এলাকার পরিবেশ ও প্রকৃতি। এটি সরকারের প্রশংসনীয় একটি উদ্যোগ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়