সোনারগাঁওয়ে দলিল লিখককে হত্যা স্ত্রী আটক

আগের সংবাদ

জন্মদিনের শুভেচ্ছা : জননেত্রী শেখ হাসিনা আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার

পরের সংবাদ

গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা : নদী রক্ষায় আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে স্থানীয় পর্যায়ে

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ‘প্রতিটি নদী রক্ষায় স্থানীয় পর্যায়ে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। নদী দখল, বালু ও পাথর উত্তোলনের সঙ্গে প্রভাবশালী, জনপ্রতিনিধি ও সরকারি দপ্তরের লোকজন জড়িত রয়েছে। দেশের নদীগুলো এখন বালুমহল, পাথরমহল, বর্জ্য ও ময়লার ভাগারে পরিণত হয়েছে। গত ২০ বছরে পাথর ও বালু উত্তোলনের ফলে সরকারের যে টাকা আয় হয়েছে, তার চেয়ে অনেক বেশি টাকার জমি ও পরিবেশ ধ্বংস হয়েছে।’
‘বালু-পাথর উত্তোলন ও দখল দূষণে নদ-নদীর জীর্ণদশা এবং পরিবেশ সংকট’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। বেসরকারি সংগঠন এএলআরডি, বেলা ও পানি অধিকার ফোরাম যৌথভাবে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে গতকাল সোমবার এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বেসরকারি সংগঠনের প্রতিনিধি ও গণমাধ্যম কর্মীরা নদী রক্ষার আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট রিজওয়ানা হাসান বলেন, নদী দখল ও দূষণের অত্যাচার সহ্যের বাইরে চেলে গেছে। বালু উত্তোলনকারীরা আইনের ঊর্ধ্বে বলেই মনে হয়। বালু উত্তোলনে বাধা দিতে গিয়ে সর্বশেষ চট্টগ্রামে ৭ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ২০১০ সালের আইন দিয়ে বালু উত্তোলনের কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পরিবেশগত সমস্যা থাকলে বালুমহল লিজ দেয়া যাবে না বলেও নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু এসব মানা হচ্ছে না।
চাঁদপুরের সেলিম খানকে হাইকোর্ট নদী থেকে বালু উত্তোলনের অনুমতি দিয়েছে। পরে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের এই আদেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ট্যানারির দূষণে বুড়িগঙ্গা নষ্ট হয়ে গেছে। অথচ ট্যানারি শিল্প অনেক সৃষ্টি করা যাবে, কিন্তু একটি বুড়িগঙ্গা নদী সারাজীবনেও সৃষ্টি করা যাবে না। আইনে নদী রক্ষার কথা বলা আছে। কিন্তু বাস্তবে সরকারের সংশ্লিষ্টরা এই ব্যাপারে জোরাল ভূমিকা নিচ্ছে না। বালু উত্তোলনে বাধা দিতে গেলেই হামলা আর হুমকির শিকার হতে হচ্ছে।
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদ বলেন, রংপুর বিভাগের বিভিন্ন নদী থেকে জনপ্রতিনিধিরা বালু উত্তোলন করছে। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান কোনো অভিযোগই আমলে নেন না। বালু ও পাথর উত্তোলন চক্র বেপরোয়া। এদের সঙ্গে প্রশাসনের লোকজনও রয়েছে। দখলদারদের বিরুদ্ধে থানা পুলিশ একটি জিডিও নেয় না। সরকার চাইলে ১ বছরের মধ্যে দেশের সব নদী থেকে বালু ও পাথর উত্তোলন বন্ধ করতে পারে। আমাদের দাবি- কেউ নদী দখল করলেই তাকে শাস্তি দিতে হবে। দখল-দূষণের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
সাভারের বশিরউদ্দিন বলেন, দখল ও দূষণে ধলেশ্বরী, বংশী, তুরাগ নদী একেবারেই শেষ অবস্থায় পৌঁছেছে। সুনামগঞ্জের সালেহীন শুভ বলেন, সিলেট এলাকার নদীগুলো বালু ও পাথর উত্তেলনের কারণে করুণ অবস্থায় পৌঁছেছে। শুধু পরিবেশ আইন দিয়ে নদীর দখল, দূষণ বন্ধ হবে না। অন্য আইনও ব্যবহার করতে হবে। সাতক্ষীরার মাধব চন্দ্র দত্ত বলেন, সাতক্ষীরার ছোট-বড় ২৭টি নদী থেকে প্রভাবশালী ও সরকারি দপ্তরের লোকজন বালু তুলে নিচ্ছে।
বান্দরবানের সাংবাদিক উসি থোয়াই মারমা বলেন, বান্দরবানের ৭টি স্থান থেকে পাথর উত্তোলনের ফলে নদী, ঝিরি, ঝরনা ও পরিবেশ ভয়াবহভাবে নষ্ট হচ্ছে। পাথর বহন করে নেয়ার জন্য অপরিকল্পিতভাবে পাহাড় ও গাছ কেটে রাস্তা বানানা হচ্ছে। এসব কাজে প্রভাবশালী চক্রের সঙ্গে স্থানীয় সাংবাদিকরাও জড়িত রয়েছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়