সহিংসতা প্রতিরোধে মাঠে থাকবে ১৪ দল

আগের সংবাদ

পঞ্চগড়ে নৌকা ডুবে নিহত ২৫, নিখোঁজ অর্ধশতাধিক : করতোয়া তীরে শোকের মাতম

পরের সংবাদ

বৈরী আবহাওয়াতেও আমনের আশানুরূপ ফলনের সম্ভাবনা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জিকরুল হক, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে : চলতি বর্ষাকালজুড়েই ছিল খরা। মাঝে মধ্যে যৎসামান্য বৃষ্টি হয়েছে। তারপরও আমন ফসল বুনেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কৃষকরা। বৃষ্টির পানির অভাবে অনেক কৃষক শ্যালো মেশিন দিয়ে আমন ক্ষেতে সেচ দিয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করেই আমনের চাষ করা হয়েছে এবার। ধানের উৎপাদনও আশানুরূপ হবে বলে কৃষি দপ্তর সূত্র জানিয়েছে। তবে অন্যবারের চেয়ে ফসল উৎপাদনে বাড়তি ব্যয় হয়েছে বলে কৃষক ও কৃষি দপ্তর উভয়ই স্বীকার করেছে।
এদিকে ফসল উৎপাদনে বাড়তি খরচের বিষয়ে কৃষকদের অসচেতনতাকেই দায়ী করছে কৃষি বিশেষজ্ঞরা। আর কৃষকরা বলছে সারের মূল্য ও ক্ষেতমজুরের পারিশ্রমিক বৃদ্ধি পাওয়ায় ফসল চাষে ব্যয় বেড়েছে। একই সঙ্গে তারা নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিকেও দায়ী করেছে।
কথা হয় বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের মধ্যম কৃষক জিয়া চৌধুরী ও আনু চৌধুরীর সঙ্গে। তারা জানান, নিত্যপণ্যের মূল্য অন্য সময়ের চেয়ে যেহেতু দ্বিগুণ বেড়েছে, সেজন্য শ্রমিকের মজুরিও বাড়তে বাধ্য। রাসায়নিক সারের দাম বাড়ায় ফসল উৎপাদনে অতিরিক্ত খরচ যোগ হচ্ছে। তাদের মতে সারের দাম বাড়তি হওয়ায় পরিমাণ মতো জমিতে সার প্রয়োগ করতে পারছে না কৃষকরা। ফলে উৎপাদনে মার খাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
কিন্তু কৃষি দপ্তর বলছে ভিন্ন কথা। সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি দপ্তরের উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার সুনীল কুমার দাস জানান, ফসল উৎপাদনে বাড়তি খরচের জন্য কৃষকদের অসচেনতা অনেকাংশেই দায়ী। একই সঙ্গে তিনি বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকেও দায়ী করেছেন। ওই কর্মকর্তার মতে এক বিঘা জমিতে (৩০ শতক) টিএসপি অথবা ডিএপি সার প্রয়োজন ১৭ কেজি। একইভাবে এমওপি ১৪ কেজি, জিপসাম ১২ কেজি, জিং ২ কেজি ও ইউরিয়া সার দরকার মাত্র ২৫ কেজি। অন্যদিকে ডিএপি সার ব্যবহার করা হলে টিএসপি এবং ইউরিয়া সারের প্রয়োজন পড়ে না।
অথচ কৃষকরা প্রয়োজনের দ্বিগুণ সার জমিতে ব্যবহার করছে। এজন্য কৃষকদের উৎসাহ যোগায় বহুজাতিক কোম্পানির প্রতিনিধি ও সার এবং কীটনাশক ব্যবসায়ীরা। কৃষকদের পুঁজি করে তারা তাদের ব্যবসা করতেই সুকৌশলে কৃষকদের কুপরামর্শ দিচ্ছে। এতে করেই ফসল উৎপাদনে ব্যয় বেড়ে চলেছে। এ কর্মকর্তার মতে, কৃষকরা অত্যন্ত সহজ, সরল। এই সুযোগকেই কাজে লাগায় ব্যবসায়ীরা। তার মতে জমির মাটি পরীক্ষা করে সার প্রয়োগ ও ফসলের চাষ করলে কৃষকরা সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন। এতে কৃষকরা বুঝতে পারবে তার জমিতে কি পরিমাণ কোন সার দিতে হবে। অথচ মাটি পরীক্ষা করার কোনো সুযোগ নেই দেশের উপজেলাগুলোতে। মাটি পরীক্ষাগার পুরাতন জেলা শহরে থাকায় কৃষকরা যেতে চাইছেন না। তাছাড়াও যাতায়াতে রয়েছে বড় ধরনের ব্যয় ও সময়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মমতা সাহা জানান, আবহাওয়ার বৈরী পরিবেশ ফসল উৎপাদনে তেমন ব্যাঘাত ঘটবে না। চলতি বছরে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে বলে আশা রাখছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়