সহিংসতা প্রতিরোধে মাঠে থাকবে ১৪ দল

আগের সংবাদ

পঞ্চগড়ে নৌকা ডুবে নিহত ২৫, নিখোঁজ অর্ধশতাধিক : করতোয়া তীরে শোকের মাতম

পরের সংবাদ

বাগান মানসিক চাপ কমায়

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জীবন-জীবিকার চিন্তা, অনিশ্চয়তা সবকিছু মিলে মনের ওপর এখন প্রচণ্ড চাপ। কেউ মেজাজ হারিয়ে ফেলছেন, কেউ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন, কেউ বিষন্নতা-হতাশায় ভুগছেন, কারও আবার আচরণে পরিবর্তন আসছে। তবে সংকটের ভেতরও বাগান প্রেমীদের জন্য আছে সুখবর।
বাগানের কাজ বা সবুজ প্রকৃতির কাছাকাছি থাকলে মানুষের স্ট্রেস বা মানসিক চাপ কমে।

ইট কাঠ পাথরের এই যান্ত্রিক জীবনে শরীর আর মনকে ফিট রাখতে প্রকৃতির কোন বিকল্প নেই। তাই সুযোগ থাকলে শুরু করুন আপনিও!
তবে শখের বাগানি হয়ে ওঠা কঠিন কিছু না।
বারান্দায় বাগানের জন্য কিন্তু যতœ গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমে মাটি তৈরি করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, সহজে যেন পানি নিষ্কাশন হয়, পরিপূর্ণ পুষ্টি পায়, মাটি যেন ঝুরঝুরে হয়। খেয়াল রাখতে হবে যেন গাছে অতিরিক্ত পানি দেওয়া না হয়। আবার কম পানিও দেওয়া যাবে না। বর্ষাকালে নিয়মিত বৃষ্টি হয়, তাই গাছের গোড়া না শুকিয়ে গেলে আলাদা করে পানি দিতে হবে না। খেয়াল রাখুন টব বা বেডে যেন পানি জমে না থাকে। কারণ তাতে ডেঙ্গু সংক্রমনেরও ভয় থাকে।
গাছ লাগানোর পর নিয়মিত বাগানের আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। তবে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো সঠিক গাছ নির্বাচন করা। জানতে হবে কোন গাছের জন্য কোন পরিবেশ দরকার। পাশাপাশি নানা নকশার পটে ইনডোর প্ল্যান্ট করতে পারেন। গাছগুলো সুন্দর করে রাখতে পারেন ঘরের কোণে বা ফাকা জায়গায়। ব্যবহার করতে পারেন ফ্যাশন এক্সেসরিজও। এই সময়কার ফ্ল্যাট বাড়ির বারান্দা বেশির ভাগ আয়তনে ছোট, তাই যাদের বারান্দায় বাগান করাটা একটু সমস্যা, তারা চাইলে কৃত্রিম উপায়ে বারান্দায় বাগান তৈরি করতে পারেন। এ জন্য বারান্দায় সিমেন্ট দিয়ে অর্ধ বৃত্তাকার বা পিয়ানোর আকৃতি স্ল্যাব বানিয়ে নিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন এক ফুটের বেশি যেন না হয়।
রাতে বারান্দা আরও সুন্দর করতে গাছের ফাঁকে ফাঁকে ল্যাম্পশেড ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার বাগান আরও সুন্দর দেখাবে। বারান্দার বাগান আরও সুন্দর রাখতে গাছজুড়ে দিতে পারেন নানাধরনের অনুসঙ্গ। মোটকথা, করোনার এই বৈশ্বিক সংকটের সময়েও আপনার হাতের আদরে লালিত বাগানে ছড়িয়ে পড়–ক সবুজ ভালবাসা। হোক না তা আপনার একচিলতে বারান্দায়!

ইনডোর প্ল্যান্টের জন্য গাছ নির্বাচনে অবশ্যই কৌশলী হতে হবে যাতে সহজেই যতœ নেয়া যায়।
বাপন রহমান, ডেকর আর্টিস্ট, ইডেন অন আর্থ
সাধারণত অ্যাপার্টমেন্টের বারান্দা খুব যে বড় হয় তা নয়। কিছু সবুজ গাছ, দুজন বসার ব্যবস্থা আর চা খাওয়ার পরিবেশ, এই তো। শৈল্পিকভাবে চাইলেই ছোট ছোট নানা আকৃতির মাটির টবে নানা ধরনের ছোট গাছ লাগানো যেতে পারে। অনেকে প্লাস্টিকের বোতলেও মানিপ্ল্যান্ট-জাতীয় গাছ লাগান। বারান্দার গ্রিলের সাথে ঝুলানো গাছগুলোও বেশ সুন্দর লাগে। তবে বারান্দার বাগানে অতিরিক্ত রোদ কিংবা বৃষ্টি কোনোটাই এসব গাছের জন্য ভালো নয়। টব নির্বাচনের ক্ষেত্রে অনলাইন কিংবা নার্সারিতে নানা ধরনের রঙিন বাহারি টব পেয়ে যাবেন সহজে। থিম বাগানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রাখতে পারেন অন্য ধরনের টবও। বাগান তৈরিতে ভিনটেজ ল্যাম্পশেড বা পেইন্টিংয়ের ব্যবহারও আনে নান্দনিকতা। ফ্ল্যাটের ডাইনিং, ড্রয়িং কিংবা প্রধান বেডরুম থেকে বেরোনোর পরই বারান্দার দেয়ালে সারি সারি লাগিয়ে রাখতে পারেন ছোট ছোট টব। ইনডোর প্ল্যান্টের জন্য গাছ নির্বাচনে অবশ্যই কৌশলী হতে হবে যাতে সহজেই যতœ নেয়া যায়। বারান্দায় রোদ কেমন আসে সেটাও নজরদারিতে রাখতে হবে। কখনও কড়া রোদ থেকে গাছের টব সরিয়ে ছায়াতেও রাখতে পারেন। রোদ নেমে গেলে আবার ফিরিয়ে দিতে পারেন তাদের পুরানো জায়গায়। এছাড়া টবের মাটিতে অতিরিক্ত সার এড়িয়ে যাওয়াই ভালো পাশাপাশি হাড়ের চূর্ণ ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়া গাছে নিয়মিত পানি দেয়ার ব্যাপারেও রাখতে হবে বাড়তি সতর্কতা।

সাধারণ একটা গাছও যদি সুন্দর ভাবে ডিসপ্লে করা যায় তা আরো অসাধারণ হয়ে ওঠে।
আদীবা জেরীন, উদ্যোক্তা ও প্রোডাক্ট ডিজাইনার, গার্ডেনিয়াক
বাগান করার শখ থেকে ২০০৬ সালে নিজের ছাদে প্রথম বাগান শুরু করি, একটা লন আর নান্দনিক কিছু গাছ দিয়ে ছাদ বাগানটা সাজাই। সবুজের সাথে দিন কাটাতে কাটাতে একসময় মনে হলো ঘরের বিভিন্ন কোনে আর ব্যালকনিতেও সবুজের ছোঁয়া চাই। কিন্তু আমার ব্যালকনি খুব একটা বড় না। তাছাড়া অনেককেই বলতে শুনেছি জায়গার অভাবে বাগান করতে পারছেন না। সেই থেকেই ভাবতে শুরু করলাম কিভাবে কম জায়গায় বাগান করা যায়। ২০১৭ এর শেষদিকে হাত দিলাম ঝুলানো ডিজাইনের কিছু প্ল্যান্টার তৈরিতে। যেমন ব্যালকনির গ্রিলের জন্য রেইলিং প্ল্যান্টার, কর্ণার প্ল্যান্টার, সিংগেল প্ল্যান্টার যেসব ব্যবহার করে সহজেই যে কেউ তাদের ছোট্ট ব্যালকনিতে কোনোরকম ফ্লোরস্পেস ব্যবহার ছাড়াই সুন্দর একটা বাগান শুরু করতে পারে। ব্যালকনির জন্য আমি চেষ্টা করেছি প্ল্যান্টারগুলো যেন হালকা, মিনিমালিস্টিক এবং ফাংশনাল হয়। আর বসার ঘরে, ডাইনিং বা বেডরুমের জন্য ডিজাইনগুলো কিছুটা অর্নামেন্টাল, এক্ষেত্রে কিছু প্ল্যান্টার দেয়াল ফ্রেমের আদলে, কিছু ওয়াল সেল্ফ হিসেবে বা ঝুলানো ডিজাইনের তৈরি করেছি। আমি মনে করি যেকোনো সাধারণ একটা গাছও যদি সুন্দর ভাবে ডিসপ্লে করা যায় তা আরো অসাধারণ হয়ে ওঠে। টবের পাশাপাশি রেইলিং প্ল্যান্টার, সিংগেল প্ল্যান্টার, কর্নার প্ল্যান্টার, সাকুলেন্ট হোল্ডার, হুইল প্ল্যান্টার, ফেন্স ফ্রেইম, টিয়ারড্রপ কেইজ, টুইনহার্ট, টুইন সার্কেল, মিনি রিংসহ নানা ডিজাইন এখন ট্রেন্ডে ইন। মূলতঃ ইচ্ছে থাকলেই ছোট্ট পরিসরে বাগান করে নিজেকে প্রফুল্ল রাখা যায় এবং মানসিকভাবে নির্মল ও সতেজ থাকা সম্ভব। গার্ডেনিয়াক-এর উদ্যোগের প্রধান লক্ষ্যই ছিল বাগান বিলাসিদের আরবান গার্ডেনিং-এ আরও উৎসাহিত করা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়