সহিংসতা প্রতিরোধে মাঠে থাকবে ১৪ দল

আগের সংবাদ

পঞ্চগড়ে নৌকা ডুবে নিহত ২৫, নিখোঁজ অর্ধশতাধিক : করতোয়া তীরে শোকের মাতম

পরের সংবাদ

বাংলাদেশ-চায়না বিজনেস সেমিনার : চীন-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্পর্ক সুবিশাল

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চীনের সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধি বুঝতে পেরেছিলেন এবং দ্রুত বর্ধনশীল দেশটির সঙ্গে বন্ধুত্ব¡পূর্ণ সম্পর্ক শুরু করেছিলেন। এজন্য বাংলাদেশকে চীনের প্রবৃদ্ধি অনুসরণ করতে হবে। চীন বাংলাদেশকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করছে, বিশেষ করে অবকাঠামো নির্মাণে, দেশের অর্থনীতিতে পরিবর্তন এনেছে উল্লেখ করে শামসুল চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সফর, সাংস্কৃতিক সফর, জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক এবং আরো অনেক ক্ষেত্রে সম্পর্ক জোরদার করার আহ্বানও জানান পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।
গতকাল শনিবার ঢাকার পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনীকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত চায়না-বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজেস কো-অপারেশন ফোরাম-২০২২ শীর্ষক বিজনেস নেটওয়ার্কিং প্রোগ্রামে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিসিসিসিআই) এবং চাইনিজ এন্টারপ্রাইজেস এসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশের (সিইএবি) যৌথ উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিসিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট গাজী গোলাম মুরতজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং, চীনে নিযুক্ত সদ্য বিদায়ী বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাহবুব উজ জামান, সিইএবি সভাপতি কে চাংলিয়ান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিসিসিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল আল মামুন মৃধা।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বাংলাদেশের অর্থনীতি স¤প্রসারণে প্রযুক্তিগত সহায়তা চেয়েছেন। সেই সঙ্গে রেনিউবল এনার্জি, প্রযুক্তি, এবং শিক্ষাগত বৃত্তি সম্পর্কিত সম্পর্ক আরো বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ চীনের বাজারে ৯৯ শতাংশ পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধা পাচ্ছে। তবে আমাদের দুই দেশের মধ্যে ব্যাপক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব এবং এফটিএ প্রয়োজন। বাংলাদেশ চায় চীন থেকে আরো বেশি এফডিআই আসুক। আমরা চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য ডেডিকেটেড ইপিজেড তৈরি করেছি। চীন অনেক ভূরাজনৈতিক সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশকে সাহায্য করতে পারে বলেও অভিমত পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গত ২০২০-২১ অর্থবছরে চীনে পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৬৮০ দশমিক ৬৫ মিলিয়ন ডলার। যেখানে ওই বছর আমদানি হয়েছে প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য। বক্তারা বলেন, এ বিশাল বাণিজ্য ব্যবধান কমিয়ে আনার জন্য আমরা প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। চায়না আমাদের প্রায় ৯৮ ভাগ পণ্য রপ্তানির ওপর ডিউটি-ফ্রি সুবিধা প্রদান করছে। বাংলাদেশ আগামী ২০২৬ সাল থেকে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন করছে। বাংলাদেশ আশা করছে চীন আরো তিন বছর বাড়িয়ে আগামী ২০২৯ সাল পর্যন্ত এ বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখবে।
চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, চীন-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক শক্তিশালী, পরিপূরক এবং ক্রমবর্ধমান। আমাদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক সুবিশাল এবং মজবুত। চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে দৃঢ় বন্ধুত্ব যৌথভাবে দুই দেশের জাতীয় নেতাদের প্রবীণ প্রজন্মের দ্বারা তৈরি করা হয়েছে এবং এটি একটি গভীর ঐতিহাসিক ও সামাজিক ভিত্তি এবং দৃঢ় জনসমর্থন উপভোগ করে। দুই দেশ সবসময় একে অন্যকে বিশ্বাস করেছে, সম্মান করেছে, সমর্থন করেছে এবং সাহায্য করেছে। গত শতাব্দীর ৭০-এর দশকের মাঝামাঝি চীন ও বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর থেকে, দেশদুটি কৃষি, বাণিজ্য, সামুদ্রিক বিষয়, জলবায়ু পরিবর্তন, অবকাঠামো, নগর ব্যবস্থাপনা এবং দারিদ্র্যের মতো ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য ব্যাপক সাফল্য ভাগ করে নিচ্ছে।
বিসিসিসিআই প্রেসিডেন্ট গাজী গোলাম মুরতজা বলেন, আমি মনে করি এখানে উল্লেখ করা অযৌক্তিক হবে না যে ইউক্রেন যুদ্ধের পর বিশ্বব্যাপী মহামারির কারণে ডলারের বিনিময় হার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। ডলারের দাম ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেহেতু বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে গড়ে ১৫ বিলিয়ন ডলারের বার্ষিক বাস্কেট বাণিজ্য হয়। শুধুমাত্র ডলারের বৈদেশিক মুদ্রার ওপর নির্ভরশীলতা বাংলাদেশ ও চীন উভয়ের জন্যই বিপজ্জনক ক্ষতির দিকে নিয়ে যায়।
বিসিসিসিআইর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মমুন মৃধা বলেন, আমরা বিভিন্ন চ্যানেল ও কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের প্রচার ও সুবিধার্থে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছি এবং আমরা কৃতজ্ঞ যে উভয় দেশের ব্যবসায়ী স¤প্রদায় এই উদ্যোগে ব্যাপক সাড়া দিয়েছে।
ফলস্বরূপ ২০০৩ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে আমাদের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ১ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ইউএস ডলার থেকে ১৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার ছাড়িয়েছে। আমাদের ৬৫০ এর বেশি সদস্য রয়েছে, যাদের মধ্যে প্রায় ৪৩০টি চীনা ব্যবসায়িক সংস্থা, যারা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সরাসরি অবদান রেখেছে বলেও মনে করেন এই নেতা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়