সহিংসতা প্রতিরোধে মাঠে থাকবে ১৪ দল

আগের সংবাদ

পঞ্চগড়ে নৌকা ডুবে নিহত ২৫, নিখোঁজ অর্ধশতাধিক : করতোয়া তীরে শোকের মাতম

পরের সংবাদ

নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রী : ভোটের মাধ্যমেই ক্ষমতায় আসে আ.লীগ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসে। শুধু আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে নির্বাচন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হয় এবং হবে। যা অতীতে ছিল না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কখনো কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেনি বরং আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসে। নিউইয়র্কের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স সেন্টারে গতকাল শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলতে চেয়েছিল, তারা কারা? দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আওয়ামী লীগ সবসময় লড়াই করেছে। বিএনপিকে আশ্বস্ত করে তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, জনগণ নির্বাচনে অবাধে তাদের ভোট দেবে। উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। আমি মনে করি, একটি স্বচ্ছ নির্বাচন বুঝতে পেরে তারা (বিএনপি) সত্যিই উদ্বিগ্ন। কারণ তারা ভোট কারচুপি ও ভোটার তালিকায় ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার রাখার সুযোগ পাবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা কখনো জনগণের ভোট পেয়ে ক্ষমতায় আসেনি, নির্বাচন নিয়ে তাদের প্রশ্নে এত গুরুত্ব দেয়ার কী আছে, আমি জানি না। তিনি আরো বলেন, ২০০৯, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে মানুষ নির্বিঘেœ ভোট দিয়েছে।
নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। এটা তাদের দলের সিদ্ধান্ত। তারা জানত সঠিক নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার কোনো সম্ভাবনা নেই। হত্যা, অভ্যুত্থান ও ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় আসা অভ্যাস তাদের। এটাই বাস্তবতা।
প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়ভাবে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছে। আওয়ামী লীগ সরকার দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়াকে সঠিক পথে এনেছে- যা সামরিক শাসন ও বিএনপি-জামায়াতের আমলে লাইনচ্যুত হয়েছিল। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) সম্পর্কে তিনি বলেন, ইভিএম একটি
আধুনিক পদ্ধতি এবং বিশ্বের অনেক দেশেই এটি ব্যবহৃত হয়।
দেশের প্রবাসীদের বিনিয়োগ নিয়ে অন্য এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীরা যাতে দেশে বিনিয়োগ করতে পারে সেজন্য বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। তিনি বলেন, সরকার দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের জন্য ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রবাসীদের মধ্যে যাদের এনআইডি নেই তারা পাসপোর্ট দিয়ে ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবেন। ইতোমধ্যেই সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এবারের জাতিসংঘের অধিবেশনে গুরুত্বপূর্ণ সব সভায় বাংলাদেশ সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ৭৭তম অধিবেশনে অংশ নিয়ে বহুপাক্ষিক ফোরামে বাংলাদেশের অবস্থান যেমন সুদৃঢ় করেছে, তেমনি বাংলাদেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রকে বিস্তৃত করবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুরুত্বপূর্ণ জলবায়ু ইস্যুতে অর্থবহ পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রে ধনী দেশগুলোর ব্যর্থতাকে ‘দুঃখজনক’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এক্ষেত্রে কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী দেশগুলো জোরালো বক্তব্য রাখলেও পরিস্থিতির গুরুত্বের সঙ্গে তাদের কার্যক্রম সঙ্গতিপূর্ণ নয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনের অংশগ্রহণ করতে গত ১৯ সেপ্টেম্বরে আমি নিউইয়র্কে আসি। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের হাই লেভেল উইক চলাকালে আমি মোট ৮টি উচ্চ পর্যায়ের সভা ও সাইড ইভেন্টে অংশ নিই। এ ছাড়া রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ১২টি দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নিই।
জাতিসংঘে দেয়া ভাষণের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের কারণে সৃষ্ট খাদ্য ও জ্বালানি সংকট এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তির জন্য অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে অধিক পারস্পরিক সংহতি প্রদর্শন করা প্রয়োজন। এসব সংকটের কারণে বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশসমূহ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সংকট ও বিরোধ নিষ্পত্তি করার জন্য বিশ্ব স¤প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাই। সংকট মোকাবিলায় জাতিসংঘকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করি।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আমি বলেছি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত শান্তি ও উন্নয়নভিত্তিক পররাষ্ট্রনীতি বর্তমান সংকট নিরসনে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমারে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও চলমান সংঘাত বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনকে দুরূহ করে তুলেছে। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করতে জাতিসংঘকে কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য আহ্বান জানিয়েছি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমন্ত্রণে একটি সংবর্ধনায় অংশ নেয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টকে আমি বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানয়েছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়