হাছান মাহমুদ : সেই নৈরাজ্যের পথেই হাঁটছে বিএনপি

আগের সংবাদ

ভূরাজনীতির ফাঁদে প্রত্যাবাসন! রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে এডিটরস গিল্ডের গোলটেবিল বৈঠক : ৫ বছরে সংকট আরো বেড়েছে

পরের সংবাদ

শুটিং থেকে ফিরে : ‘ভরদুপুরেই চলে আলো ছায়ার খেলা’

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

তখন ঘড়ির কাঁটায় ঠিক দুপুর ১২টা। মাথার ওপর শরৎকালের তাপদাহ। মানিকগঞ্জের এদিকে-ওদিকে ঘুরে ভীষণ ক্লান্ত। শুটিং চলছে ‘লতিফ দপ্তরি’ শিরোনাম নাটকের। এতে অভিনয় করছেন জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিম। শুটিং বাড়িতে ঢুকতে যাওয়ার আগেই গেটে থাকা মানুষটি বলল, ‘মোশাররফ ভাই নাই। তিনটা গলি পরেই শুটিং চলতেছে, ওখানে যান। তাইলে পাইবেন।’ আমি হাসি দিয়ে বললাম, ‘ধন্যবাদ’। তিন গলি পেরিয়ে একটা স্কুলে দেখা মিলল অভিনেতা মোশাররফ করিমের। সামনে এগিয়ে যাওয়ার সময়ই চোখে পড়ল কালো কাপড় দিয়ে বাড়িটির বাইরে থেকে সব কিছু ঢেকে রাখা হয়েছে। বিষয়টা কি? প্রশ্ন আসল মনে তাহলে কি রাতের দৃশ্য করা হচ্ছে? যেই কথা সেই কাজ। রুমের মধ্যে গিয়ে বুঝতে পারলাম সত্যি এখানে রাতের দৃশ্য করা হচ্ছে। পরিচালক শাব্দিক শাহীন। তিনিই মূলত নাটকটির রচয়িতা এবং তার সঙ্গে লিখেছেন বুলবুল মাসুউদ।
বসে আছেন মনিটরের দিকে তাকিয়ে। আমাদের দেখেই মুখে হাসি। কুশল বিনিময়ের পর। সেটে আসলেন অভিনেত্রী তানিয়া বৃষ্টি। এখন শুরু হবে দৃশ্য ধারণ। পরিচালক অভিনয় শিল্পীদের কিছুক্ষণ দৃশ্যটি বুঝিয়ে দিয়ে চিরাচরিত ভাষায় বললেন অ্যাকশন। কয়েকটি ডায়ালগ দিয়ে ক্যামেরার বাইরে চলে যান মোশাররফ। ওদিকে তানিয়া বৃষ্টি চেয়ে থাকে অপলক। শেষ হয় দৃশ্য ধারণ। এই ফাঁকে পরিচালক আমাদের জানিয়ে দিলেন আপাতত সেটে আছেন তারা দুইজন। অন্যরা আসবে বিকাল ৪টার পর। এবার এগিয়ে মেকআপ রুমের দিকে এগিয়ে গেলেন তারা। এখানকার দৃশ্য ধারণ শেষ। একটু পরই আউটডোরে শুটিং হবে। ওখানে সেট রেডি হচ্ছে। তাদের সঙ্গেও আলাপকালে বললেন ‘পুরোটাই একটি গ্রামের গল্প। তাই ভরদুপুরেই আলো-ছায়ার খেলা চলছে। তাই অনেক অল্পতেই এখানে অনেক গভীর রাত মনে হচ্ছে। জীবনের নানা রকমের টানাপড়েনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যায় মূল গল্প। বেশ ভালো একটি গল্প।’ এতটুকুই বলে উপরে চলে গেলেন তারা। আমরাও গিয়ে হাজির মেকআপ রুমে। মেকআপ রুমে কথা বলতে বলতেই শুরু সেট রেডি হয়ে যায়। এবার শুধু মোশাররফ করিমের দৃশ্য। চলছে নানা রকমের আয়োজনে দৃশ্য ধারণ। এই দৃশ্যটিও যখন রাতের তখন বাইরে কেবল দুপুর। আর আমাদের যেতে হবে বহুদূর। বিদায় নিতে নিতে পরিচালক গল্প নিয়ে বললেন, লতিফ পেশায় স্কুলের দপ্তরি। এটা তার পৈতৃক সূত্রে পাওয়া। স্কুলের সবার কাছে প্রিয় লতিফ ভাই। শিক্ষক থেকে শুরু করে সব বাচ্চা তাকে পছন্দ করে। লতিফ সৎ মানুষ। এক কথায় সাদা মনের মানুষ। দীর্ঘ ১০ বছর বাড়ির বাইরে ছিল। মূলত বাড়ির গাছ কাটাকে কেন্দ্র বাড়ি থেকে পালানো তার। এখনো অবিবাহিত লতিফের বিয়ের বয়স হয়েছে অনেক আগেই তবে স্কুলের চাপ। সঙ্গে মায়ের অসুস্থতা মিলিয়ে বিয়ে করা হয়ে ওঠেনি।
সুবর্ণচর প্রাইমারি স্কুলে হঠাৎ করে একজন নতুন ম্যাডাম আসে। নাম রতœা। খুব অল্প সময়েই রতœা ম্যাডাম স্কুলের সবার প্রিয় মুখ হয়ে ওঠেন। লতিফের ভেতরও পরিবর্তন দেখা যায়। আগে প্রতিদিন দুপুরে বাসায় খেতে যেত লতিফ। রতœা ম্যাডাম আসার পর থেকে আর যায় না। লতিফ টিফিন টাইমে রতœা ম্যাডামের খাওয়া দেখে। ম্যাডামের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক করার চেষ্টা করে। ভালো সম্পর্কও হয়ে যায় খুব সহজে। ম্যাডামের বাসার যাবতীয় কাজ করে দেয় লতিফ। কারণ লতিফ জানে ম্যাডাম একাই বাসায় থাকেন কারণ তিনি ডির্ভোসি। এদিকে স্কুলের বাচ্চাদের জন্য একটা সরকারি বাজেট আসে। যেটা কিনা স্কুল ম্যানেজিং কমিটির চেয়ারম্যানসহ স্কুলের কিছু শিক্ষক বাচ্চাদের না দিয়ে মেরে দেয়ার ফন্দি আঁটে। আর এই কাজের বিরোধিতা করে রতœা ম্যাডাম। রতœা ম্যাডামের জোরাজুরিতে বাচ্চাদের জিনিস মেরে দেয়ার অপশন পায় না অন্যরা। এদিকে ম্যাডামকে অন্যভাবে স্কুল থেকে বের করার চেষ্টা করে ম্যানেজিং কমিটি ও প্রধান শিক্ষক। ম্যাডামকে কীভাবে স্কুল থেকে সহজে বের করা যায় সেই প্ল্যান সাজায় তারা। অবশেষে তারা সবচেয়ে সহজ বুদ্ধি পায়, লতিফের সঙ্গে ম্যাডামের যেহেতু ভালো সম্পর্ক আর লতিফ যেহেতু ম্যাডামের বাসায় যায় তাই খুব সহজেই ফাঁসানো যাবে লতিফকে। অবশেষে একদিন সময় বুঝে রতœা ম্যাডামের বাসায় লতিফকে পায় তারা। মূলত বাসার বাজার করে চায়ের জন্য অপেক্ষা করছিল লতিফ। এই সময়ই এলাকার লোকসহ সবাই হাতেনাতে ধরে লতিফকে। বাকিটুকু দেখতে হলে দেখতে হবে নাটকটি। এতে আরো অভিনয় করেছেন কাজী আনিসুল হক বরুন, মাহবুব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়