হাছান মাহমুদ : সেই নৈরাজ্যের পথেই হাঁটছে বিএনপি

আগের সংবাদ

ভূরাজনীতির ফাঁদে প্রত্যাবাসন! রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে এডিটরস গিল্ডের গোলটেবিল বৈঠক : ৫ বছরে সংকট আরো বেড়েছে

পরের সংবাদ

ড্রাগন চাষে কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন তার

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এম কে রানা, বরিশাল থেকে : সৎ উপার্জনের উদ্দেশ্যে ইউটিউব ঘেঁটে ড্রাগন চাষ করে সফল হয়েছেন বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার দেহেরগতি ইউনিয়নের ইদিলকাঠী গ্রামের রফিকুল ইসলামের পুত্র পারভেজ মাহমুদ। ২০২১ সালের জুন মাসে ইউনিয়নের আরজি বাহেরচর মৌজায় নিজের ৬৩ শতাংশ জমিতে প্রায় আড়াই হাজার ড্রাগন গাছের চারা রোপণ করেন তিনি। ২০২২ সালের এপ্রিলে ফুল আসা শুরু হয়।
গত জুন মাসে প্রথমবারের মতো ১০০ কেজি ড্রাগন ফল রাজধানী ঢাকার কারওয়ান বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে পাঠান তিনি। প্রতি কেজি ড্রাগন ২৫০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। এ অঞ্চলে এই প্রথম কোনো প্রকার রাসায়নিক ওষুধ ছাড়াই নিজের তৈরিকৃত জৈব সার ও জৈব বালাই নাশক প্রয়োগ করে ড্রাগন চাষ করে সফলতা পাওয়ায় উপজেলা কৃষি অফিসের প্রসংশা কুড়িয়েছেন পারভেজ। তার এল আকৃতির ড্রাগন বাগান দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার লোকজন ভিড় জমাচ্ছেন।
জানা গেছে- একটি ড্রাগন গাছ বছরে ১০ মাস ফল দেয়। এ বাগান থেকে কোটি টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখছেন তিনি। তার বাগানে ৪টি জাতের বিভিন্ন স্বাদের ড্রাগন গাছ রয়েছে। পারভেজ মাহমুদের ড্রাগন ফল চাষে সফলতা দেখে আরো অনেকেই ড্রাগন চাষে উদ্বুদ্ধ হবে বলে আশা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
সরজমিনে দেখা যায়, টক-মিষ্টি ও মিষ্টি স্বাদের ড্রাগন গাছে রয়েছে ফুল, মুকুল এবং পাকা ড্রাগন ফল। বিদেশি ফলের বাগান করে সফলতা পাওয়ায় এলাকায় ইতোমধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি একই বাগানে পেঁপে, ওল কচু, বোম্বাই মরিচ, বেগুন, আলু, কচুসহ বিভিন্ন প্রকার শাক সবজি চাষ করে বাড়তি আয়ের উৎস্য তৈরি করছেন তিনি।
প্রাকৃতিকভাবে পরাগায়নের জন্য বাগানে স্থাপন করা হয়েছে মৌমাছির কৃত্রিম বাসা। এছাড়া শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার জন্য কৃত্রিমভাবে ড্রাগন ফুলের পরাগায়ন করা হয়। পাশেই তিনি গড়ে তুলেছেন একটি চাইনিজ কমলা ও পেয়ারা বাগান। তার বাগানে দুইজন দিনমজুর প্রতিদিন কাজ করে থাকেন।
জানতে চাইলে পারভেজ মাহমুদ ভোরের কাগজকে জানান, ২০০০ সালে ঢাকার মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজ থেকে হিসাব বিজ্ঞানে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দেশেই একটি কোম্পানিতে হিসাবরক্ষক হিসাবে কাজ করেন। পরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে চলে যান তিনি। ২০১৯ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে দেশে ফিরে আসেন। ২০২১ সালে বিদেশে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশে থেকেই তিনি ড্রাগন বাগানের সূচনা করেন। এখন তিনি নিজের ৬৩ শতক জমির উপরে বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তুলেছেন ড্রাগন খামার। এ দেশের আবহাওয়ায় লাল, হলুদ এবং সাদা ড্রাগন ফল চাষের জন্য বেশ উপযোগী হলেও পাশাপাশি তিনি গড়ে তুলেছেন লাল ড্রাগনের খামার। তিনি আরো বলেন, ড্রাগন চাষে বিনিয়োগ একটু বেশি হলেও এখান থেকে বড় কিছু করা সম্ভব। দেশের যুব সমাজের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, লাখ লাখ টাকা খরচ করে বিদেশ না গিয়ে দেশেই কর্মসংস্থান তৈরি করে নেয়া উচিত।
দেহেরগতি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বলেন, পারভেজ মাহমুদের ড্রাগন বাগান সবার নজর কেড়েছে। সে প্রবাস জীবন শেষ করে বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেন। তাকে দেখে শিক্ষিত বেকারদের শেখা উচিত।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন বলেন, বাণিজ্যকভাবে এ ফল চাষে এ উপজেলায় প্রথম পারভেজ মাহমুদ উদ্যোগ নিয়েছেন এবং তিনি সফলভাবে ফল বাজারজাত করেছেন। আমি তার বাগান পরিদর্শনে গিয়ে অভিভূত হয়েছি। কৃষি অফিস থেকে প্রতিনিয়ত তার বাগানের খোঁজ নিয়ে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। আশা করি পারভেজ মাহমুদের বাগান দেখে অনেকেই বিদেশি এ ফল চাষে উদ্বুদ্ধ হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়