হাছান মাহমুদ : সেই নৈরাজ্যের পথেই হাঁটছে বিএনপি

আগের সংবাদ

ভূরাজনীতির ফাঁদে প্রত্যাবাসন! রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে এডিটরস গিল্ডের গোলটেবিল বৈঠক : ৫ বছরে সংকট আরো বেড়েছে

পরের সংবাদ

চালে ক্রেতার নাভিশ্বাস : পেঁয়াজের দাম কমলেও বেড়েছে আদা, রসুন, হলুদ ও জিরার দাম

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : নিত্যপণ্যের বাজারে বেড়েই চলেছে অস্থিতিশীলতা। প্রতি সপ্তাহে ক্রেতাদের বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে কোনো না কোনো পণ্য। সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন করে চাল, আটা-ময়দা ও ডিমের দাম বেড়েছে। একই বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে সবজির দাম। বাজারে ৬০ টাকা কেজির নিচে পেঁপে আর কাঁচকলা ছাড়া কোনো সবজিই মিলছে না। তবে পেঁয়াজের দাম কমলেও আরেক দফা বেড়েছে আদা-রসুন, হলুদ ও জিরার দাম। বাজারে পণ্যের কোনো ধরনের সংকট না থাকলেও বাড়তি দামের কারণে ভোক্তা তার চাহিদামতো কিনতে পারছে না। নিত্যপণ্য কিনতে গিয়ে ক্রেতার নাভিশ্বাস যেন থামছেই না। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, যাত্রাবাড়ী ও মালিবাগ কাঁচাবাজারসহ একাধিক খুচরা বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
এদিকে এসব পণ্যের দাম বাড়ার চিত্র সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক বাজার পণ্য মূল্য তালিকায় লক্ষ্য করা গেছে। টিসিবি বলছে, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি সরু চাল ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ দাম বেড়েছে। মাঝারি আকারের চালের দাম বেড়েছে ১ দশমিক ৮৫ শতাংশ। পাশাপাশি প্রতি কেজি খোলা আটার দাম সপ্তাহের ব্যবধানে ৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এক কেজির প্যাকেটজাত ময়দার দাম বেড়েছে ৩ দশমিক ৭০ শতাংশ। সংস্থাটি বলছে, সাত দিনের ব্যবধানে প্রতি হালি (৪ পিস) ফার্মের ডিমের ৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। প্রতি কেজি রসুন (নতুন ও পুরনো) কিনতে ক্রেতার ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ বেশি টাকা ব্যয় করতে হয়েছে। বেড়েছে দেশি ও আমদানি করা আদার দাম। টিসিবির তথ্যমতে, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি দেশি আদা ১৪ ও আমদানি করা আদার দাম ১২ দশমিক ৭০ শতাংশ বেড়েছে।
তবে এ সময় প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম কমেছে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
খুচরা বাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাতদিনের ব্যবধানে কেজিতে আরো দুই টাকা বেড়ে প্রতি কেজি সরু চাল কিনতে হচ্ছে ৭৪-৭৫ টাকায়। কেজিতে ২ টাকা বেড়ে মাঝারি আকারের চাল ৪৮-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি খোলা আটা বিক্রি হয়েছে ৫৫ টাকা, যা সাতদিন আগে ৫২ টাকা ছিল। এক কেজির প্যাকেটজাত ময়দা সপ্তাহের ব্যবধানে ৫ টাকা বেড়ে ৭৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি হালি ফার্মের ডিম কিনতে ক্রেতার ৫০ টাকা গুনতে হয়েছে, যা গত সপ্তাহে ৪৬-৪৭ টাকা ছিল।
গতকাল শুক্রবার প্রতি কেজি দেশি আদা ২১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা সাত দিন আগে ১৮০ টাকা ছিল। সাত দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি আমদানি করা আদা ২০ টাকা বেড়ে ১৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হয়েছে ৯০ টাকা, যা আগে ৮০ টাকা ছিল। কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে আমদানি করা হলুদ ২৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ১০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি জিরা বিক্রি হয়েছে ৪৬০ টাকা। রাজধানীর কাওরানবাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে আসা মো. জানে আলম বলেন, আবারো চাল আটা-ময়দার দাম বেড়েছে। প্রতি হালি ডিম কিনতে ৫০ টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। পাড়া-মহল্লার মুদির দোকানে আরো দুই টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। দাম নিয়ন্ত্রণে কোনো তদারকি নেই।
এদিকে, পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও সবজির বাড়তি দামে হিমশিম খাচ্ছে নি¤œআয়ের মানুষ। বাজারে এসে অল্প পরিমাণে সবজি কিনে বাসায় ফিরছেন অনেকে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, সবজির বাজারে বরবটি প্রতি কেজি ৮০ টাকা, পটোল ৬০ টাকা, কাকরোল ৭০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, গোল বেগুন ৮০ টাকা আর চিকন বেগুন ৭০ টাকায় বিক্রি করছেন দোকানিরা। সবজির এই উত্তাপ লেগেছে শাকেও। প্রতি আঁটি লালশাক ২৫ টাকা, ডাটা শাক ২৫ টাকা আর পুঁইশাক বিক্রি হয়েছে ৩৫ টাকায়। এছাড়াও প্রতি পিস লাউ ৬০-৭০ টাকা আর জালি কুমড়া ৪০-৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। শাক-সবজির মতো মাছের দামও বাড়তি বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন। প্রতি কেজি তেলাপিয়া ২০০ টাকা, রুই ৩০০ টাকা, পাঙ্গাশ ১৮০ টাকা, সিলভার কার্প ১৬০ টাকা, শিং মাছ আকার ভেদে ৫০০-৭৫০ টাকা এবং চিংড়ি মাছ ৬০০-১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। বাজারে আসা এক বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, যুদ্ধের অজুহাতে সবকিছুর দাম বাড়ানো হলেও বিশ্ববাজারে এখন সব কিছুর দাম কমছে। কিন্তু ব্যতিক্রম শুধু বাংলাদেশে। সবজির দাম এতো বেড়েছে, এখন সবজি খাওয়ার অভ্যাস ছাড়ার উপক্রম হচ্ছে। গৃহিণী জেবুন্নেছা বলেন, বাজারে শাকেরও বাড়তি দাম। আবার আঁটিতে পরিমাণেও কম। আঁটিগুলো এমন যে এক আঁটিতে চারজনের পরিবারে একবেলাও হয় না। দুই আঁটি নেয়া লাগে। শাক কিনতেই ১০০ টাকার মতো খরচ হয়ে যায়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়