হাছান মাহমুদ : সেই নৈরাজ্যের পথেই হাঁটছে বিএনপি

আগের সংবাদ

ভূরাজনীতির ফাঁদে প্রত্যাবাসন! রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে এডিটরস গিল্ডের গোলটেবিল বৈঠক : ৫ বছরে সংকট আরো বেড়েছে

পরের সংবাদ

ইমরানুর ও শিরিন দ্রুততম মানব-মানবী

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বনানী আর্মি স্টেডিয়ামে গতকাল শুরু হয়েছে দুই দিনের সুলতানা কামাল-আলিলা গ্রুপ ১৬তম জাতীয় সামার অ্যাথলেটিকস। গতকাল প্রথম দিনেই ১০০ মিটার স্প্রিন্টের খেতাব জিতেছেন ইমরানুর ও শিরিন। জাতীয় গ্রীষ্মকালীন অ্যাথলেটিসে গতকাল ইমরানুর রহমান ১০.২৯ সেকেন্ডে এবং শিরিন আক্তার ১১.৯৫ সেকেন্ড দেশের দ্রুততম মানব-মানবী নির্বাচিত হন।
ইমরানুর রহমান ইলেকট্রনিক বোর্ডে সময় নিয়েছেন ১০.২৯ সেকেন্ড। এটি নতুন জাতীয় রেকর্ড। ইমরানুর রহমান গত মাসে অনুষ্ঠেয় ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে ষষ্ঠ হয়েছিলেন। সেই গেমসে তিনি ১০.০২ সেকেন্ড টাইমিং করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। ইসলামিক সলিডারিটি গেমসের চেয়ে এই সামারে তার টাইমিং কিছুটা বেড়েছে। এবারের এই টাইমিং অবশ্য গত জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের চেয়ে কম। নিজের সেরা টাইমিং ছুঁতে পারেননি ইমরানুর, তবে দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ইসমাইলের টাইমিং তার চেয়ে অনেক বেশি। সেনাবাহিনীর ইমরানের টাইমিং যেখানে ১০.২৯ সেখানে নৌবাহিনীর ইসমাইলের ১০.৭০।
গত জানুয়ারিতে প্রথমবার জাতীয় এথলেটিকসে খেলেই রেকর্ড গড়ে সেরা হয়েছিলেন লন্ডনপ্রবাসী ইমরানুর। তখন তিনি ২১ বছর আগের রেকর্ড ভেঙেছিলেন। হারিয়েছিলেন চারবারের দ্রুততম মানব মোহাম্মদ ইসমাইলকে। ইলেকট্রনিক বোর্ডে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অ্যাথলেট ইমরানুরের টাইমিং ছিল ১০.৫০ সেকেন্ড। ইলেকট্রনিক বোর্ডে সেটিই ছিল তখন পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো অ্যাথলেটের সেরা টাইমিং। এর আগে ১৯৯৯ সালের ২৫ ডিসেম্বর প্রয়াত মাহবুব আলমের গড়া ১০.৫৪ সেকেন্ড ছিল সর্বশেষ দেশের কোনো অ্যাথলেটের রেকর্ড টাইমিং।
অবশ্য গত মাসে তুরস্কে ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে ১০.০১ সেকেন্ড সময় নিয়ে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে ষষ্ঠ হয়েছিলেন ইমরানুর। সেটিকেই বাংলাদেশের জাতীয় রেকর্ড হিসেবে গণ্য করছে বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন। কিন্তু সলিডারিটি গেমস অ্যাথলেটিকসে সব টাইমিংই বাতিল করেছে বিশ্ব এথলেটিকস কর্তৃপক্ষ। যান্ত্রিক সমস্যার কারণে সেখানে সঠিক টাইমিং আসেনি বলে মনে করছে সংস্থাটি। ১০.৫০ সেকেন্ড থেকে কয়েক মাসের মধ্যে ইমরানুরের টাইমিং ১০.০১-এ নেমে আসা নিয়ে তখনই অনেকে অবিশ্বাস প্রকাশ করেছিলেন। বাংলাদেশ এথলেটিকস ফেডারেশনের সহসভাপতি ফারুকুল ইসলাম বলেন, আমার কাছেও ইমরানুরের টাইমিং অবিশ্বাস্য মনে হয়েছে।’
যেহেতু বিশ্ব এথলেটিকস ফেডারেশন গেমসের টাইমিং বাতিল করেছে, বাংলাদেশ কেন ইমরানুরের টাইমিংকে রেকর্ড ধরছে? এ প্রশ্নে বাংলাদেশ এথলেটিকস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রকিব বলেন, এই টাইমিং যে বাতিল করা হয়েছে, সে ব্যাপারে আমরা কোনো চিঠি পাইনি বিশ্ব সংস্থার কাছ থেকে।
এ ব্যাপারে ইমরানুর গতকাল ১০০ মিটারে শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার পর বলেন, ‘ব্যাপারটা আমি বুঝতে পারছি না। আমার কাজ দৌঁড়ানো। এখন কোথায় কী সমস্যা হয়েছে, আমি জানি না। আমি আমার পারফরম্যান্সে খুশি।’ শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার আনন্দে বলছিলেন, ‘খুব ভালো লাগছে। নিজের জায়গাটা ধরে রাখতে পেরেছি। টাইমিংও ভালো হয়েছে। আশা করি সামনে আরো ভালো করব।
অন্য দিকে গত জানুয়ারিতে নারী বিভাগে ১০০ মিটারে প্রথম হয়েছিলেন বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) শিক্ষার্থী সুমাইয়া দেওয়ান। তিনি জাতীয় ও সামার এথলেটিকস মিলিয়ে টানা ১২ বারের দ্রুততম মানবী শিরিন আক্তারকে হারিয়ে সেরা হয়েছেন। দুজনের গতকাল আবার দেখা হয়েছে এবং তাতে শেষ হাসি শিরিনেরই।
এই বছর জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় এথলেটিসে দ্রুততম মানবী হয়েছিলেন সুমাইয়া দেওয়ান। গ্রীষ্মকালীন এথলেটিসেই নিজের শ্রেষ্ঠত্ব পুনরুদ্ধার করেছেন শিরিন আক্তার। এ নিয়ে ১৩ বার ১০০ মিটার জিতলেন শিরিন। সময় নিয়েছেন ১১.৯৫ সেকেন্ড। ইলেকট্রনিক বোর্ডে এটি মেয়েদের ১০০ মিটারে নতুন জাতীয় রেকর্ড। আগের রেকর্ডও ছিল শিরিনের। দ্রুততম মানবী শিরিন তার ১০০ মিটার ইভেন্টে সেরা টাইমিং করেছেন। এই ইভেন্টে আগের সেরা টাইমিং ছিল ১১.৯৯। সেটা ছিল ২০১৬ সালে গৌহাটি সাফ গেমসে।
এবারের সামারে তার টাইমিং তিনি করেছেন ১১.৯৫। দ্বিতীয় হওয়া সুমাইয়া দেওয়ানের টাইমিং ১২.০৯। শ্রেষ্ঠত্ব ফিরে যাওয়ার পর শিরিন বললেন, গত কয়েক মাস কঠোর পরিশ্রম করেছি। তার ফল পেলাম। পরিশ্রম করলে কোনো কিছুই বৃথা যায় না।’ একই কথা বলেছেন হাই জাম্পে নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়া উম্মে হাফসাও (রুমকি)। মেয়েদের হাই জাম্পে তিনি লাফিয়েছেন রেকর্ড ১.৭৪ মিটার। এবারের প্রতিযোগিতায় দেশের সর্ববৃহৎ ও বর্ণাঢ্য এই ক্রীড়ানুষ্ঠানে ২০টি জেলা ক্রীড়া সংস্থা, ৩টি বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা, ৬টি বিশ্ববিদ্যালয়, ১টি শারীরিক শিক্ষা কলেজ, বিকেএসপি ও এফিলিয়েটেড সামরিক ও বেসামরিক বাহিনী ৮টিসহ মোট ৩৯টি সংস্থার ৩৭০ জন (পুরুষ-২৮৬ জন ও মহিলা-৮৪ জন এথলেট, ৫৮ জন কোচ, ম্যানেজার এবং ১৬০ জন টেকনিক্যাল অফিসিয়াল অংশগ্রহণ করছেন। প্রতিযোগিতায় পুরুষ ও মহিলা ২টি গ্রুপে ৪০টি ইভেন্টে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে এর মধ্যে পুরুষদের ২২টি ইভেন্ট ও মহিলাদের ১৮টি ইভেন্ট।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়