এসপি হলেন পুলিশের ৪৭ কর্মকর্তা

আগের সংবাদ

সাশ্রয়ের নামে নিম্নমানের বই! : ছাপানো শুরু হয়নি, বছরের প্রথমদিন সব শিক্ষার্থীর বই পাওয়া অনিশ্চিত

পরের সংবাদ

হালদারকে মার্চের মধ্যেই ফেরত পাঠানোর সম্ভাবনা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যাওয়া গেøাবাল ইসলামী (সাবেক এনআরবি গেøাবাল) ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারকে আগামী মার্চ মাসের মধ্যে ফেরত দেয়ার চেষ্টা করছে ভারত।
বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় তাকে ফেরত দেয়া হবে বলে গতকাল বৃহস্পতিবার কলকাতায় জানিয়েছেন দেশটির আর্থিক দুর্নীতিসংক্রান্ত তদন্তকারী সংস্থা এসফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) নিয়োজিত আইনজীবী। ধরা পড়ার পর এখন কলকাতায় বন্দি আছেন পি কে হালদার। সেখানে তার বিচার চলছে।
এদিকে, গতকাল পি কে হালদার ও তার ৫ সহযোগীর জেল হেফাজতের মেয়াদ আরো ৫৬ দিন বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশের পলাতক এই আসামিদের আগামী ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার এ নির্দেশ দেন ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআইয়ের ৪ নম্বর আদালতের বিচারপতি বিদ্যুৎ কুমার রায়।
গত মে মাসে পি কে হালদার ও তার আরো ৫ সহযোগীকে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার অশোকনগর থেকে গ্রেপ্তার করে ইডি। গতকাল পি কে হালদার এবং তার সহযোগীদের আদালতে পেশের পর একটি সূত্রের মাধ্যমে ইডি জানায়, মামলাটির দ্রুত নিষ্পত্তি চাইছে ইডি। সূত্রটি জানিয়েছে, পৃথক আর কোনো চার্জশিট (সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট) দেয়া হবে না। মামলাটির শুনানি ও রায় দেয়ার পর পি কে হালদারসহ বাকিদের বাংলাদেশে ফেরানোর চেষ্টা করা হবে। আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যেই যাতে তাদের ফেরানো যায়, সেই চেষ্টাও করা হবে। তাদের বলা হয়েছে, মামলাটিকে দ্রুত ভারতে নিষ্পত্তির দিকে নিয়ে যেতে।
মামলায় যদি অভিযুক্ত ব্যক্তিরা দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে তারা সাজার মেয়াদ কিছুটা ভারতে পূর্ণ করবেন। তারপর তাদের বাংলাদেশের হাতে তুলে দেয়ার চেষ্টা করা হবে। তারা সাজার বাকি মেয়াদ বাংলাদেশে পূর্ণ করতে পারেন, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। ঠিক কী প্রক্রিয়ায় এটা করা হবে, সে সম্পর্কে অবশ্য ইডির সূত্রটি কিছু জানাতে পারেনি। ইডির সূত্র শুধু বলেছে, ভারতে এই মামলাটির খবরের কাগজে ওঠার মতো আর কোনো ভবিষ্যৎ নেই।
এখন পর্যন্ত পিকে হালদার তার পক্ষে কোনো আইনজীবী নিয়োগ করেননি। যদিও মামলাটি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে আইনজীবীদের মধ্যে

জল্পনা চলছে, কারণ, যাকেই হালদার নিয়োগ করবেন, তিনি বড় অঙ্কের অর্থ হালদার পরিবারের থেকে চাইবেন। মনে করা হচ্ছে, মামলাটির শুনানি শুরু হলে তখন আইনজীবী নিয়োগ করবেন হালদার।
পি কে হালদার ছাড়াও গ্রেপ্তার হন তার ভাই প্রাণেশ কুমার হালদার, যিনি উত্তর চব্বিশ পরগনায় পি কে হালদারের জমিজমা, বাড়ি ও মাছের ঘেরের ব্যবসা আংশিকভাবে দেখাশোনা করতেন। এ ছাড়া আমানা সুলতানা ওরফে শর্মি হালদারসহ আরো ৩ জন গ্রেপ্তার হন।
ইডি পরবর্তী ৩ মাসে তাদের ভারতে প্রচুর সম্পত্তির খোঁজ পায়। যার মধ্যে ছিল একাধিক স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, অর্থ এবং বিভিন্ন ব্যবসায় বিনিয়োগসংক্রান্ত কাগজপত্র। মালয়েশিয়া, দুবাই ও ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জেও সম্পত্তির খোঁজ মেলে। তার একাধিক পাসপোর্টেরও খোঁজ পাওয়া যায়। বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও কানাডীয় ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের তথ্যের বরাত দিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতিবেদনে বলা হয়, পি কে হালদার ২০১২ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে তার ভাই প্রীতিশ হালদারের কাছে ১ কোটি ১৭ লাখ ১১ হাজার ১৬৪ কানাডীয় ডলার পাচার করেছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় তা প্রায় ৮০ কোটি টাকা।
দুদক ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি পি কে হালদারের বিরুদ্ধে ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, পলাতক পি কে হালদার তার নামে অবৈধ উপায়ে এবং ভুয়া কোম্পানি ও ব্যক্তির নামে প্রায় ৪২৬ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়েছেন।
অবৈধ সম্পদের অবস্থান গোপন করতে ১৭৮টি ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করেন পি কে হালদার। তিনি এসব একাউন্টে ৬ হাজার ৮০ কোটি টাকা জমা রাখেন। পাশাপাশি এসব একাউন্ট থেকে তার নামে ও বেনামে আরো ৬ হাজার ৭৬ কোটি টাকা উত্তোলন করেন। দুদকের তথ্য বলছে, পি কে হালদার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অন্তত ১১ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়