রাজপথ বিএনপির বাপ-দাদার সম্পত্তি নয় : কাদের

আগের সংবাদ

সাফ জয়ীদের লাগেজ ভাঙল কে

পরের সংবাদ

পুঁজিবাজারে শেয়ার বিক্রির হিড়িক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে লেনদেন হওয়া সিকিউরিটিজের মধ্যে যতগুলোর দর বেড়েছে, তার দ্বিগুণের বেশি দরপতন হয়েছে। ৫৮টি শেয়ারের দরবৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ১৫৯টির। আগের দরেই লেনদেন হয়েছে ১৫৪টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট। চলতি সপ্তাহের মধ্যে বুধবার সবচেয়ে বেশি সূচক পড়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই)। বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় এক দিনে লেনদেন কমেছে হাজার কোটি টাকার বেশি। ডিএসই সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বেশ কয়েক দিন ধরেই পুঁজিবাজারে অস্বাভাবিক আচরণ লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। প্রতিদিনই বেশির ভাগ শেয়ারের দরপতনে লেনদেন হয়েছে, কিন্তু সূচকের পতন দেখা গেছে গত মঙ্গলবার ও গতকাল বুধবার। তার আগের দুই দিনে সূচকে যোগ হয় ৮৫ পয়েন্ট। মঙ্গলবার ব্যাপক দরপতনেও সূচক কমে মাত্র ৪ পয়েন্ট, তবে সেই আচরণ থেকে গতকাল কিছুটা বের হয়ে এসেছে পুঁজিবাজার। বেশির ভাগ শেয়ারের দরপতনের সঙ্গে সূচক কমেছে ৪৫ পয়েন্ট। যদিও এর চেয়ে বেশি পতনের শঙ্কা ছিল। ১১টা ৭ মিনিটেও আগের দিনের চেয়ে ২৯ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হচ্ছিল, সূচকের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ৬২৫ পয়েন্ট। মাঝে একটু কমলেও পরের এক ঘণ্টাতে সূচকের অবস্থান ছিল এর কাছাকাছিই। এরপর থেকেই ধারাবাহিকভাবে দর হারাতে থাকে শেয়ারগুলো। দুপুর ১টা ৩২ মিনিটে দিনের সর্বোচ্চ অবস্থান থেকে সূচক কমে যায় ৬৫ পয়েন্ট, তবে শেষ মুহূর্তের সমন্বয়ে ৪৫ পয়েন্ট কমে লেনদেন শেষ হয়েছে। সূচকের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৫৫১ পয়েন্টে। লেনদেন হওয়া সিকিউরিটিজের মধ্যে যতগুলোর দর বেড়েছে, তার দ্বিগুণের বেশি দরপতন হয়েছে। ৫৮টি শেয়ারের দরবৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ১৫৯টির। আগের দরেই লেনদেন হয়েছে ১৫৪টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট। কয়েক দিন থেকে আরেকটি প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মোট লেনদেনের বড় অংশই থাকছে কয়েকটি কোম্পানির দখলে। গতকাল বুধবারও তার ব্যতিক্রম দেখা যায়নি।
সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয় ওরিয়ন ফার্মার। কোম্পানির ১ কোটি ৭৪ লাখ ১০২টি শেয়ার লেনদেন হয় ২৫৭ কোটি ২৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকায়। গ্রুপের আরেক কোম্পানি ওরিয়ন ইনফিউশনের লেনদেন হয় ৪০ কোটি ৩১ লাখ ৯০ হাজার টাকার। কোম্পানিটির ৬ লাখ ৬৪ হাজার ৮৭৭টি শেয়ার লেনদেন হওয়ার দিনে দর বেড়েছে ২০ টাকা ৪০ পয়সা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেডের। যদিও এদিন কোম্পানির দর কমেছে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ। ২২৯ কোটি ৬৯ লাখ ২৮ হাজার টাকায় হাতবদল হয় ১ কোটি ৬৬ লাখ ৭১ হাজার ৫২৩টি শেয়ার। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার লেনদেন হয় ১০২ কোটি ২২ লাখ ৯৭ হাজার টাকার। হাতবদল হয় ৬৩ লাখ ৪১ হাজার ৪৪৫টি শেয়ার। এসব কোম্পানির লেনদেন কমার সঙ্গে ডিএসইর মোট লেনদেন কমেছে। গত মঙ্গলবার পুঁজিবাজারে লেনদেন হয় ২ হাজার ৮৩২ কোটি ৩০ লাখ ৭৪ হাজার টাকা, যা চলতি বছরের তো বটেই, গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বরের পর সর্বোচ্চ।
আর ২০১০ সালের মহাধসের পর এটি ছিল সপ্তম সর্বোচ্চ লেনদেন। অর্থাৎ এর চেয়ে আর মাত্র ছয়বার এত বেশি লেনদেন হয়েছে ডিএসইতে। তবে গতকাল বুধবার হাতবদল হয়েছে ১ হাজার ৮০৮ কোটি ১৯ লাখ ১২ হাজার টাকা। এ সংখ্যাটা আগের দিনের চেয়ে ১ হাজার ২৪ কোটি ১১ লাখ ৬২ হাজার টাকা কম। ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর দর সংশোধনে যায় পুঁজিবাজার। পরে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির মধ্যে মতভেদ শেষে অর্থবছরে সমন্বয় হয়। সবশেষ ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ধস নামে পুঁজিবাজারে। এর মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো ফ্লোর প্রাইস আরোপ এবং ব্যাংকের এক্সপোজার লিমিট শেয়ারের ক্রয়মূল্য নির্ধারণের পর ৩১ জুলাই থেকে পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে; ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে লেনদেন। এই উত্থান শুরুর আগের কর্মদিবস ২৮ জুলাই সূচক নেমে যায় ৬ হাজার পয়েন্টের নিচে। তা নি¤œমুখীই ছিল। এ নিয়ে বিনিয়োগকারীরা ছিলেন আতঙ্কে। পরের কর্মদিবস থেকে ৬০০ পয়েন্টের বেশি হারিয়ে ফেলা সূচক ফিরে পেলেও বিনিয়োগকারীদের মনের খেদ মেটেনি। কারণ এই উত্থানের প্রভাব পুঁজিবাজারে সমভাবে পড়েনি। অল্প কিছু কোম্পানির শেয়ারের মাত্রাতিরিক্ত দরবৃদ্ধির মধ্যেও ফ্লোর প্রাইসে গড়াগড়ি খাচ্ছে শতাধিক কোম্পানি। এর মধ্যে কিছু দুর্বল কোম্পানি থাকলেও শক্তিশালী মৌলভিত্তির কোম্পানিও আছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়