রাজপথ বিএনপির বাপ-দাদার সম্পত্তি নয় : কাদের

আগের সংবাদ

সাফ জয়ীদের লাগেজ ভাঙল কে

পরের সংবাদ

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সম্প্রতি বন্ধুকে কল দিয়ে কথা হচ্ছিল। বন্ধুকে বললাম কি রে কেমন আছিস? প্রতি উত্তরে সে জানাল, বেশি ভালো নেই রে। আশ্চর্য হয়ে বললাম, কেন ভালো নেই? কি হয়েছে তোর? এটা বলতেই কান্না জড়িত কণ্ঠে বলে উঠল সবকিছুর এতই দাম, মেসে থাকা বা পড়াশোনা প্রায় অনিশ্চিত হয়ে যাচ্ছে। আগে যে টাকা দিয়ে মেস খরচ চলত, এখন সেটা দিয়ে চলা আর সম্ভব হচ্ছে না।
অনেক স্বপ্ন নিয়ে অনার্স (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিলাম, মাঝখানে করোনার দীর্ঘ সময় জীবনের সব স্বপ্ন এলোমেলো করে দিয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের অব্যবস্থাপনা ও পণ্যদ্রব্যের ‘পাগলা ঘোড়া’র কারণে হয়তো পড়াশোনা অনিশ্চিতও হয়ে যেতে পারে। এই স্বল্প খরচে একদমই চলা যাচ্ছে না। আনুষঙ্গিক খরচতো আছেই। যেমন প্রাইভেট, যাতায়াত ভাড়া, ভর্তি, ফরম ফিলআপ এবং অন্যান্য খরচতো আছেই। সত্যিই বন্ধু এত চাপ সহ্য করার মতো না। এভাবেই কথা হচ্ছিল এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে। এ রকম মনের আর্তনাদে ভাসছে হাজার-লাখ নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। আয়ের উৎস, ইনকাম সবকিছু আগের মতো থাকলেও, ঠিক নেই পণ্যদ্রব্যের মূলনীতি। কীভাবে করব পড়াশোনা, কোথায় থেকে জোগান দেব অতিরিক্ত টাকা? শিক্ষা জীবন কি অনিশ্চিত হয়ে যাবে? নাকি কলমের পরিবর্তে হাতে তুলে নিতে হবে অন্য কোনো কর্মের ঝুলি?
এতগুলো প্রশ্নের কোনো জবাব যেন নেই উচ্চ শ্রেণির শাসকদের কাছে। জীবন বিষণ্ন আর হতাশার দ্বারপ্রান্তে গিয়ে পৌঁছে গিয়েছে। আগে আমার মেসে প্রতিদিন ৬০০-৭০০ টাকার বাজার করা হতো। বর্তমানে সেই পরিমাণ বাজারই বাড়িয়ে ৭০০-৯০০ টাকার মতো করা হয়। তাহলে বাজারের টাকা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে কিন্তু‘ বৃদ্ধি পায়নি তরকারির পরিমাণ। বাধ্য হয়ে বেশি দাম দিয়ে কম পরিমাণের বাজার করতে হচ্ছে। এমন সংকটপূর্ণ মুহূর্তে অনেক পরিবার বলতে বাধ্য হচ্ছে, তোদের পড়াশোনা শেষ হবে না? এত পড়ে কী হবে? এবার না হয় একটা চাকরি বাকরি কর। আমাদের কষ্টটা একটু লাগব কর বাবা।
বাবা-মায়ের এমন আর্তচিৎকারে কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের সন্তান কি স্বাভাবিক থাকতে পারে? তাই পরিবারের বোঝা হালকা করতে, দু’মুঠো ডাল-ভাতের জন্য শিক্ষা জীবন কুরবানি করে ভিড় জমাচ্ছে গার্মেন্টস কিংবা কোম্পানিতে। কেউ বা আবার দোকান আর দিনমজুরিতে। বর্তমানে যে সংকটপূর্ণ মুহূর্ত চলছে, তাতে শিক্ষা উন্নতির চরম ক্ষতিকর দিকে যাচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। এমনকি এভাবে আর কিছুদিন চলতে থাকলে বাংলাদেশ হয়ে যেতে পারে মেধাশূন্য। আজকাল এভাবেই হতাশার মেঘলা আকাশে ঘনীভূত তরুণ প্রজন্ম।
দুর্ভোগে পড়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে সিংহভাগ নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের। আগামী প্রজন্মকে এমন সংকট থেকে মুক্তি দিতে জীবনযাত্রা একটি ভারসাম্যে নিয়ে আসতে হবে।

মো. মনিরুল ইসলাম : শিক্ষার্থী, সরকারি আকবর আলী কলেজ, উল্লাপাড়া, সিরাজগঞ্জ।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়