কাগজ প্রতিবেদক : আপনারা ফাঁকা মাঠে তাফালিং করবেন, আর আওয়ামী লীগ আঙ্গুল চুষবে, এটা মনে করবেন না। মনে রাখবেন রাজপথ বিএনপির বাপ-দাদার সম্পত্তি নয়। রাজপথ জনগণের। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর লালবাগে থানা ও ৪টি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
লালবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান জামালের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, এডভোকেট কামরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির নেতারা বলেছেন তারা এখন থেকে রাজপথ দখল করবেন। রাজপথ বিএনপির বাপ-দাদার সম্পত্তি নয়। রাজপথ জনগণের। রাজপথ এই নগরীর। রাজপথ ঢাকাবাসীর। এটা বিএনপির পৈতৃক সম্পত্তি নয়। নিজ দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগের কর্মীরা সংযমী হয়ে, সতর্ক অবস্থানে মাঠে অবস্থান নেবেন। মাঠ ছাড়ব না, অবস্থান নিতে হবে।
বিএনপির উদ্দেশে কাদের বলেন, রাজপথে আন্দোলন করুন, শান্তিপূর্ণভাবে আসুন। মোকাবিলা হবে রাজপথে। রাজপথে খেলা হবে। লাফালাফি করবেন না, বাড়াবাড়ি করবেন না। ২২ দলীয় জোট গতবারও ছিল। সেই ২২ দলের অবস্থা জগাখিচুড়ি, ছত্রভঙ্গ অবস্থা। এবারো ২২ দলীয় জোটের অবস্থান আষাঢ়ের তর্জন-গর্জন।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, শৃঙ্খলা ভঙ্গ যেই করবে- বলে দিয়েছি, আজকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে, ক্যাম্পাসে যারা বিশৃঙ্খলা করবে, ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় ক্ষতি করবে, যারা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করবে শেখ হাসিনা তাদের রেহাই দেবেন না। দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, আপনারাও বাড়াবাড়ি করবেন না। নির্বাচনের ১৪ মাস বাকি। আপনারা এখন স্লোগান পাল্টা স্লোগান শুরু করেছেন। শোডাউন দিয়ে কেউ এমপি হতে পারবেন না।
কেউ নেতা হতে পারবেন না। শেখ হাসিনার কাছে সবার হিসাব-নিকাশ জমা আছে। ওই এলাকার জনগণের কাছে যে জনপ্রিয়, সেই হবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী। পাল্টাপাল্টি করে কেউ কাউকে ঠেকাবেন, এটা হবে না। নৌকার স্লোগান দেয়ার সময় আসবে। তখন আমি নিজেই বের হব এ স্লোগান নিয়ে। গতবারও দিয়েছিলাম, এবারো বের হব। আগাম কিছু বলবেন না।
দেশবাসীর উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনাদের কষ্ট আমাদের সৃষ্টি নয়। আজকে জীবনযাত্রার মান সারা বিশ্বে বেড়ে গেছে। ইউক্রেন যুদ্ধ এই সংকটকে আরো প্রকট করেছে। শেখ হাসিনা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছেন। চিন্তা করবেন না, বাংলাদেশে এমন কোনো সংকট হবে না। আগামী দিনগুলো ভালোই যাবে। এখনই আস্তে আস্তে স্বস্তিতে ফিরে যাচ্ছি। আপনারা বঙ্গবন্ধুর কন্যার প্রতি বার বার আস্থা রেখেছেন। আপনারা শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রাখুন। এই সংকট বেশি দিন থাকবে না। এই দুর্দিন চলে যাবে। আবার সুদিন আসবে। অপেক্ষা করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

ডা. জালাল ও হাজী সেলিম গ্রুপের বাকবিতণ্ডা : সম্মেলনের এক পর্যায়ে লালবাগ এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও বর্তমান সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের অনুসারীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। একসময় নিজেই তেড়ে আসেন ডা. জালাল। হাজী সেলিম গ্রুপে নেতৃত্ব দেন তার ছেলে ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইরফান সেলিম। তবে হাতাহাতি শুরুর আগেই উপস্থিত কেন্দ্রীয় ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা ধমক দিয়ে দুই পক্ষকে থামিয়ে দেন।