করোনা পরিস্থিতি : সংক্রমণের হার ১১.৬০ শতাংশ

আগের সংবাদ

খোলা ছাদে খুশির নিনাদ : মেয়েদের ঘিরে শোভাযাত্রায় লাখো মানুষ

পরের সংবাদ

ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালক : এলপিজির অযৌক্তিক দাম মেনে নেব না

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেছেন, বাজারে গ্যাসের সিলিন্ডার কিনতে ভোক্তাকে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে। সরকার নির্ধারিত দামে বাজারে গ্যাস সিলিন্ডার মিলছে না বলে আমাদের কাছে একের পর এক অভিযোগ আসছে এবং প্রমাণও মিলেছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে ভোক্তার স্বার্থ বিশালভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এ ধরনের অপরাধ মেনে নেয়া হবে না। নির্ধারিত দামের বেশি নেয়া হলে অভিযান চলবেই। ক্রেতাদের অভিযোগ পাই, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তথ্য দেয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সভাকক্ষে গতকাল মঙ্গলবার এলপিজি গ্যাসের মূল্য বিষয়ে উৎপাদনকারী, বাজারজাতকারী ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মতবিনিময় সভায় এলপিজি গ্যাস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন, বিশ্ববাজারে এলপিজির দাম, ডলারের দাম, আমদানি খরচ এবং জ্বালানি তেলের কারণে পরিবহন খরচ বেড়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এসব আমলে না নিয়ে গ্যাসের দাম নির্ধারণ করে দিচ্ছে। বিইআরসির নির্ধারিত দাম প্রকৃত দামের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, সরকার যে দাম নির্ধারণ করে দেবে সেটাই মানতে হবে। ভোক্তারা ওই দামে সিলিন্ডার না পেলে, সেটা প্রতারণা হবে। দামে আপনাদের সমস্যাগুলো আগেই কর্তৃপক্ষকে বোঝাতে হবে।
তিনি বলেন, আমি নিজেও এই বিষয়ে কথা বলতে বিইআরসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে বসব। তিনিই আমাকে এর আগে দাম নিয়ন্ত্রণে অভিযানের কথা বলেছিলেন। এখন সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করে অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। আগে গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে এই সেক্টরে খুব একটা সমস্যা হয়নি। এখন প্রয়োজন যত বাড়ছে, সমস্যাও বাড়ছে। সেজন্য এলপি গ্যাসের দাম নির্ধারণকারী প্রতিষ্ঠান বিইআরসির এখানে একটি ভূমিকা রয়েছে।
ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, দাম বেশি নেয়ার পরও ব্যবসায়ীদের লোকসান হচ্ছে। বিশ্ববাজারে এলপিজির দাম, ডলারের দাম, আমদানি খরচ এবং জ্বালানি তেলের কারণে পরিবহন খরচ বেড়েছে। বিইআরসি গ্যাসের দাম নির্ধারণের সময় এসব আমলে নেয় না। বিইআরসির নির্ধারিত দাম প্রকৃত দামের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
লোকসান প্রসঙ্গে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, আমি শুনিনি যে, কোনো ব্যবসায়ী লাভ করছে। আপনাদের কথা হচ্ছে, আপনারা শুধু লোকসানই দেন। কিন্তু আমরা দেখি আপনাদের ব্যবসা বড় হয়। তারপরও আমরা আমাদের অভিযানে পাওয়া তথ্য এবং আজকের এ বৈঠক নিয়ে কিছু সুপারিশ দেব। সেটা যদি সরকারের সর্বোচ্চ মহল বিবেচনা করে তবে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
বেক্সিমকো গ্যাসের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার মুনতাছির আলম বলেন, বারবার অনুরোধ করে বিইআরসির দাম নির্ধারণের সভায় জায়গা নিতে হয়েছে আমাদের। গত মাসে দাম নির্ধারণে আমরা আগ্রহী ছিলাম না। কারণ মিটিংয়ে আমাদের সঙ্গে আলাপ না করে এলসি নিস্পত্তির রেট ১০২ টাকা ধরা হয়েছিল। যেখানে সে সময় ডলার রেট আরো অনেক বেশি ছিল। গ্যাস সংরক্ষণ ও বোতলজাতকরণের জন্য রেট ধরা হয় ১৮৬ টাকা। কিন্তু আমরা হিসাব দিয়ে দেখিয়েছি খরচ ২৪৫ টাকা। তারপরও আমাদের কথা মানেনি। জ্বালানি তেলের দাম বাড়লেও পুরনো ৬৫ টাকা প্রতি লিটারের দাম ধরে অভ্যন্তরীণ পরিবহন খরচ হিসাব করা হচ্ছে। অপারেটরের কোনো মার্জিনও রাখা হয়নি। ফলে যে দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে সেটা সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
জিএমআই কোম্পানির চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এলপিজি খাতে ৩২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ। সরকার যেমন প্রয়োজনে রাতারাতি একদিনে ৪৮ টাকা জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে দিতে পারে, আমরা সেটা করতে পারি না। শুধু লোকসান করি। এই খাতে বিনিয়োগ করে ভুল করেছি। লোকসানের কারণে এখন আমরা ব্যাংক লোন পাচ্ছি না। আগে লোন দেয়ার জন্য ব্যাংক আমাদের পেছনে ঘুরত।
ডিলার ও বিক্রেতারা অভিযোগ করেন, অপারেটর কোম্পানিগুলো তাদের মুনাফা কমিয়ে দিয়েছে। কোম্পানি এক মাসে তিন দফা মুনাফা কমিয়েছে। সেজন্য তাদের এখন আর লাভ থাকছে না। বরং সরকারের বিভিন্ন সংস্থার অভিযানে জরিমানা গুনতে হচ্ছে। যদিও দাম বাড়ানোর পেছনে অপারেটররা দায়ী।
বিইআরসির প্রতিনিধি উপপরিচালক ফিরোজ উজ জামান বলেন, বৈঠকের আলোচনা এবং দাম নির্ধারণে দুর্বলতার বিষয়গুলো আমি বিইআরসি চেয়ারম্যানকে জানাব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়