করোনা পরিস্থিতি : সংক্রমণের হার ১১.৬০ শতাংশ

আগের সংবাদ

খোলা ছাদে খুশির নিনাদ : মেয়েদের ঘিরে শোভাযাত্রায় লাখো মানুষ

পরের সংবাদ

বেশি দামে গম আমদানি : খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যার জবাবে যা বলল টিআইবি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বেশি দামে গম আমদানি নিয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা দেয়াকে উৎসাহব্যঞ্জক বলছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। তবে মন্ত্রণালয় যৌক্তিক দামে গম কেনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে টিআইবির বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগকে হতাশাজনকও বলেছে সংস্থাটি। গতকাল মঙ্গলবার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যার জবাব দিয়েছে টিআইবি। টিআইবির আউটরিচ এন্ড কমিউনিকেশনের পরিচালক শেখ মনজুর-ই-আলমের সই করা বিবৃতি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
তৃতীয় পক্ষ নিয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যার জবাবে টিআইবির যুক্তি হচ্ছে, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি অনুযায়ী ‘ন্যাশনাল ইলেকট্রনিক বিডি’ রাশিয়ার গম রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান প্রডিনটর্গের লোকাল এজেন্ট। গম আমদানিতে তাদের প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সেবা নিশ্চিত করার কথা, কিন্তু দাম নির্ধারণ বা এ বিষয়ক সমঝোতায় তাদের ভূমিকা থাকার কথা নয়। খাদ্য সচিবের বক্তব্য অনুযায়ী আলোচিত প্রতিষ্ঠানটির দুজন প্রতিনিধি গমের দাম নিয়ে সমঝোতা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এবং সমঝোতায় সহায়তা করেছেন। অথচ জিটুজি ক্রয়সংক্রান্ত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিপত্রে বলা হয়েছে, দাম নির্ধারণ বিষয়ক সরকারি কমিটির সভাপতি হবেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব বা অতিরিক্ত সচিব। সদস্য সচিব থাকবেন একই মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব বা অতিরিক্ত সচিব। এছাড়া অর্থ ও আইন মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের মনোনীত ব্যক্তি থাকবেন, এর বাইরে বেসরকারি তৃতীয় কোনো পক্ষ থাকবে না।
গমের দাম নিয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যার জবাবে টিআইবি বলছে, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বে খাদ্যপণ্যের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছিল এটি যেমন সত্যি, তেমনি ত্রিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় ১ আগস্ট থেকে ইউক্রেন গম রপ্তানি শুরু করার পর বিশ্ববাজারে গমের দর বড় আকারে পড়তে শুরু করে, সেটিও সত্য। অথচ দর নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমার ট্রেন্ড কতটা বিবেচনায় ছিল, এর কোনো ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি। রাশিয়ার গমের এফওবি মূল্য ৩৩০ মার্কিন ডলার ধরে এর সঙ্গে জাহাজ ভাড়া, লোডিং-আনলোডিং, বার্থঅপারটের হ্যান্ডলিং, ইনস্যুরেন্স ও লাইটেনিংসহ সর্বমোট মূল্য ৪৩০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ হয়, যাকে যুক্তিসংগত ও সঠিক বলে খাদ্য মন্ত্রণালয় দাবি করছে। কিন্তু প্রতি টনে ১০০ ডলার ল্যান্ডিং খরচের বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি, সেখানেই মূলত শুভংকরী ফাঁকি। একইসঙ্গে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার গমের দামের যে তুলনা মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যায় দেয়া হয়েছে, তা কিছুটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই মনে হয়েছে, কেননা সারা বিশ্বে রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে আসা ব্ল্যাক-সি-হুইট মূলত কম দামি গম হিসেবেই খ্যাত। বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজার দরও এর সাক্ষী দিচ্ছে।
গমের দাম যাচাই নিয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যার জবাবে টিআইবির যুক্তি- শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডের তথ্য বলছে, ব্ল্যাক-সি-হুইট ৩১০ ডলারে লেনদেন হয়েছে ১৯ সেপ্টেম্বর। একইসঙ্গে সিএমই গ্রুপের তথ্য বলছে, এই গমের ভবিষ্যৎ চুক্তি, যেটি ২০২৩ সালে (জুন থেকে আগস্ট সময়কালে) সরবরাহ করা হবে, তার দাম ২৯৬ ডলারে সম্পন্ন হয়েছে। তাই মন্ত্রণালয়ের গমের দাম প্রতিনিয়ত বাড়ছে বলে দেয়া যুক্তি ধোপে টিকে না। একইসঙ্গে জিটুজিতে কোনো পণ্য ক্রয় করার পূর্বে বাজার যাচাইয়ের বিষয়টি সম্পন্ন না করে কীভাবে দর ঠিক হলো, এর ব্যাখ্যাও দেয়নি মন্ত্রণালয়। বরং পূর্ববর্তী দুটি ক্রয়মূলের রেফারেন্স টানা হয়েছে, যা এড়িয়ে যাওয়ার শামিল। খাদ্যপণ্যের কেনাকাটায় নিয়মিত আন্তর্জাতিক বাজার এবং সরবরাহকারী সম্পর্কে খোঁজখবর রাখা জরুরি হলেও খাদ্য মন্ত্রণালয় যে তা রাখে না, তার বড় প্রমাণ বাড়তি দাম বিবেচনায় প্রডিনটর্গের সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার একটি দেশের চুক্তি বাতিলের বিষয়ে তথ্য না থাকা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়